ঢাকা ০১:১৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৩ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
আদমদীঘিতে বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে যুবদলের বৃক্ষরোপন পেশাজীবী পরিষদ পাবনা পৌরসভার উদ্যোগে রাসূল (সা:) প্রদর্শিত পানাহার পদ্ধতি শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত পাবনায় রনির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা চেয়ে মানববন্ধন পলাশে পবিত্র ঈদ-এ মিলাদুন্নবী (সা.)’র জশনে জুলুস সিরাজদিখানে ঈদে মিলাদুন্নবী ও জসনে জুলুস পালিত শরীয়তপুরে ঐতিহ্যবাহী নৌকা বাইচ অনুষ্ঠিত পটুয়াখালীর নদীতে পাওয়া রেজাউল বয়াতির লাশের রহস্য উদঘাটন বাউফলে সেই মাদ্রাসার তালা ভাঙ্গার ভিডিও ভাইরাল, তদন্ত সম্পন্ন, দ্রুত ব্যবস্থা তারেক রহমানের ৩১ দফা রাষ্ট্র কাঠামো সংস্কার কর্মসূচি জনমনে আশা জাগিয়েছে : কফিলউদ্দিন আহমেদ ভোলায় মনপুরা আলোচিত গণধর্ষণ মামলায় ৩ আসামি গ্রেফতার

বাউফলে সেই মাদ্রাসার তালা ভাঙ্গার ভিডিও ভাইরাল, তদন্ত সম্পন্ন, দ্রুত ব্যবস্থা

পটুয়াখালী প্রতিনিধি-

পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার দাসপাড়া ইউনিয়নের সেই উত্তর দাসপাড়া দাখিল মাদ্রাসা লাইব্রেরীর তালা ভাঙ্গার মুহূর্তে করা ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।

ভিডিওটিতে দেখা যায়, গনিত এর সহকারী শিক্ষক মোঃ শফিউল ফরহাদ নামে একজন শিক্ষক তালা শক্ত জাতীয় বস্তু দিয়ে আঘাত করে ভাঙ্গছেন। পাশে দাঁড়িয়ে সহযোগিতা করছেন মৌলভী মোঃ মাসুম বিল্লাহ, জুনিয়র মৌলভী মোঃ আইয়ুব আলী, করনিক মোঃ মিজানুর রহমান অন্য্যান্য।

তালা ভাঙ্গার ব্যাপারে জানতে চাইলে গনিত এর সহকারী শিক্ষক মোঃ শফিউল ফরহাদ তালা ভাঙ্গার বিষয়ে স্বীকার করে বলেন, যেদিন তালা ভাঙ্গা হয়েছে তার আগের দিন আমি সকাল সাড়ে ৯টার দিকে যথারীতি প্রতিষ্ঠানে পৌঁছে দেখি আমাদের প্রশাসনিক রুমে ৩টা তালা মারা। তখন প্রশাসনিক দায়িত্বে থাকা মৌলভী মোঃ মাসুম বিল্লাহ হুজুর, যাকে অত্র মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত সুপার হিসেবে ইউএনও দায়িত্ব দিয়েছেন তাকে তাই প্রশাসনিক রুম তার। তালা মারার দায়িত্বও তার। সেখানে সভাপতি ও সাবেক সুপার নজির উদ্দিন মৃধার প্রশাসনিক রুমে তালা দেওয়ার এখতিয়ার নেই। তার পরে আমরা ইউএনও স্যারকে বিষয়টি জানাই। ইউএনও স্যার সভাপতি কে একাধিক বার ফোন করলে তিনি রিসিভ করেননি। তাই স্যার মৌলভী মোঃ মাসুম বিল্লাহকে আমাদেরকে প্রশাসনিক রুমে সরকারি তালা রেখে অন্য তালা ভেঙ্গে ফেলার কথা বললে আমরা ওই তালা ভেঙ্গে ফেলি।

গত রোববার (৩১ আগস্ট-২৫) বিধি মোতাবেক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মাদ্রাসা এডহক কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ দায়ের করেন মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত সুপার মোঃ নজির উদ্দিন মৃধা।

অভিযোগে জানান, গত ২৭/০৮/২৫ ইং তারিখে আনুমানিক সাড়ে ৯টার সময় মাদ্রাসার সাবেক ভারপ্রাপ্ত সুপার মৌলভী মোঃ মাসুম বিল্লাহর নেতৃত্বে শরীর চর্চা সহকারী শিক্ষক মোঃ সোহাগ হোসেন সিকদার, গনিত এর সহকারী শিক্ষক মোঃ শফিউল ফরহাদ, জুনিয়র মৌলভী মোঃ আইয়ুব আলী, করনিক মোঃ মিজানুর রহমান সহ ওই সাবেক ভারপ্রাপ্ত সুপার মৌলভী মোঃ মাসুম বিল্লাহর দুই ছেলেকে নিয়ে যৌথভাবে লোহার হাতুড়ি, লোহার রড ও শাবল দিয়ে অভিযান চালিয়ে শিক্ষক লাইব্রেরীর পাশে থাকা সুপার ও সভাপতির আলাদা রুমের ব্যবহৃত রুমের তালা ভেঙ্গে রুমে প্রবেশ করে এবং রুমের মধ্যে থাকা সুপারের চেয়ার বাহিরে কাদার মধ্যে ফেলে দেয় এবং সংরক্ষিত দলিলপত্র সহ গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র তছনছ করে। বাধা দিলে তারা মারতে আসে।

তিনি লিখিত অভিযোগে আরও জানান, বিগত ইং ০১/০৯/২৪ তারিখে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় অনুষ্ঠিত ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক আমাকে জ্যেষ্ঠ শিক্ষক হিসেবে ভারপ্রাপ্ত সুপারের দায়িত্ব প্রদান করলে ওইদিনও তারা আমার ওপর অতর্কিত হামলা করে আমাকে লজ্জিত করে। তাই প্রোক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ জানান।

এব্যাপারে জানতে চাইলে মৌলভী মোঃ মাসুম বিল্লাহ (সহ সুপার) বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা যখন এ মাদ্রাসার সভাপতি ছিলেন তখন গত ১/০৭/২৫ ইং তারিখে আমাকে ভারপ্রাপ্ত সুপার হিসেবে রেজুলিউশনের মাধ্যমে দায়িত্ব দেন। সেই থেকে আমি অবদোবদি দায়িত্ব পালন করে আসছি। কিন্তু গত কয়েকদিন আগে সাবেক ভারপ্রাপ্ত সুপার মোঃ নজির উদ্দিন মৃধা ও বিতর্কিত এডহক কমিটির সভাপতি মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ মিলে আমার দেওয়া তালার ওপরে দুইটা তালা মেরে দেয়। তালা ভাঙ্গার ব্যাপারে আমাদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তা সম্পূর্ণ মিথ্যা বানোয়াট। বরং তাদের দোষ ঢাকতে এহেন কর্মকাণ্ডে লিপ্ত তারা। যার দরুন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর আমি অভিযোগ দিয়েছি।

মাদ্রাসা এডহক কমিটির সভাপতি মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ বলেন, অভিযোগ হাতে পেয়েছি। নিরসনের জন্য দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আমিনুল ইসলাম বলেন, ওই মাদ্রাসার তদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। যাহার প্রতিবেদন বোর্ডে পাঠানো হয়েছে। তারা দ্রুতই ব্যবস্থা নিবেন।

ট্যাগস
জনপ্রিয় সংবাদ

আদমদীঘিতে বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে যুবদলের বৃক্ষরোপন

বাউফলে সেই মাদ্রাসার তালা ভাঙ্গার ভিডিও ভাইরাল, তদন্ত সম্পন্ন, দ্রুত ব্যবস্থা

আপডেট টাইম : ০২:৪৭:১৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫

পটুয়াখালী প্রতিনিধি-

পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার দাসপাড়া ইউনিয়নের সেই উত্তর দাসপাড়া দাখিল মাদ্রাসা লাইব্রেরীর তালা ভাঙ্গার মুহূর্তে করা ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।

ভিডিওটিতে দেখা যায়, গনিত এর সহকারী শিক্ষক মোঃ শফিউল ফরহাদ নামে একজন শিক্ষক তালা শক্ত জাতীয় বস্তু দিয়ে আঘাত করে ভাঙ্গছেন। পাশে দাঁড়িয়ে সহযোগিতা করছেন মৌলভী মোঃ মাসুম বিল্লাহ, জুনিয়র মৌলভী মোঃ আইয়ুব আলী, করনিক মোঃ মিজানুর রহমান অন্য্যান্য।

তালা ভাঙ্গার ব্যাপারে জানতে চাইলে গনিত এর সহকারী শিক্ষক মোঃ শফিউল ফরহাদ তালা ভাঙ্গার বিষয়ে স্বীকার করে বলেন, যেদিন তালা ভাঙ্গা হয়েছে তার আগের দিন আমি সকাল সাড়ে ৯টার দিকে যথারীতি প্রতিষ্ঠানে পৌঁছে দেখি আমাদের প্রশাসনিক রুমে ৩টা তালা মারা। তখন প্রশাসনিক দায়িত্বে থাকা মৌলভী মোঃ মাসুম বিল্লাহ হুজুর, যাকে অত্র মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত সুপার হিসেবে ইউএনও দায়িত্ব দিয়েছেন তাকে তাই প্রশাসনিক রুম তার। তালা মারার দায়িত্বও তার। সেখানে সভাপতি ও সাবেক সুপার নজির উদ্দিন মৃধার প্রশাসনিক রুমে তালা দেওয়ার এখতিয়ার নেই। তার পরে আমরা ইউএনও স্যারকে বিষয়টি জানাই। ইউএনও স্যার সভাপতি কে একাধিক বার ফোন করলে তিনি রিসিভ করেননি। তাই স্যার মৌলভী মোঃ মাসুম বিল্লাহকে আমাদেরকে প্রশাসনিক রুমে সরকারি তালা রেখে অন্য তালা ভেঙ্গে ফেলার কথা বললে আমরা ওই তালা ভেঙ্গে ফেলি।

গত রোববার (৩১ আগস্ট-২৫) বিধি মোতাবেক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মাদ্রাসা এডহক কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ দায়ের করেন মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত সুপার মোঃ নজির উদ্দিন মৃধা।

অভিযোগে জানান, গত ২৭/০৮/২৫ ইং তারিখে আনুমানিক সাড়ে ৯টার সময় মাদ্রাসার সাবেক ভারপ্রাপ্ত সুপার মৌলভী মোঃ মাসুম বিল্লাহর নেতৃত্বে শরীর চর্চা সহকারী শিক্ষক মোঃ সোহাগ হোসেন সিকদার, গনিত এর সহকারী শিক্ষক মোঃ শফিউল ফরহাদ, জুনিয়র মৌলভী মোঃ আইয়ুব আলী, করনিক মোঃ মিজানুর রহমান সহ ওই সাবেক ভারপ্রাপ্ত সুপার মৌলভী মোঃ মাসুম বিল্লাহর দুই ছেলেকে নিয়ে যৌথভাবে লোহার হাতুড়ি, লোহার রড ও শাবল দিয়ে অভিযান চালিয়ে শিক্ষক লাইব্রেরীর পাশে থাকা সুপার ও সভাপতির আলাদা রুমের ব্যবহৃত রুমের তালা ভেঙ্গে রুমে প্রবেশ করে এবং রুমের মধ্যে থাকা সুপারের চেয়ার বাহিরে কাদার মধ্যে ফেলে দেয় এবং সংরক্ষিত দলিলপত্র সহ গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র তছনছ করে। বাধা দিলে তারা মারতে আসে।

তিনি লিখিত অভিযোগে আরও জানান, বিগত ইং ০১/০৯/২৪ তারিখে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় অনুষ্ঠিত ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক আমাকে জ্যেষ্ঠ শিক্ষক হিসেবে ভারপ্রাপ্ত সুপারের দায়িত্ব প্রদান করলে ওইদিনও তারা আমার ওপর অতর্কিত হামলা করে আমাকে লজ্জিত করে। তাই প্রোক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ জানান।

এব্যাপারে জানতে চাইলে মৌলভী মোঃ মাসুম বিল্লাহ (সহ সুপার) বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা যখন এ মাদ্রাসার সভাপতি ছিলেন তখন গত ১/০৭/২৫ ইং তারিখে আমাকে ভারপ্রাপ্ত সুপার হিসেবে রেজুলিউশনের মাধ্যমে দায়িত্ব দেন। সেই থেকে আমি অবদোবদি দায়িত্ব পালন করে আসছি। কিন্তু গত কয়েকদিন আগে সাবেক ভারপ্রাপ্ত সুপার মোঃ নজির উদ্দিন মৃধা ও বিতর্কিত এডহক কমিটির সভাপতি মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ মিলে আমার দেওয়া তালার ওপরে দুইটা তালা মেরে দেয়। তালা ভাঙ্গার ব্যাপারে আমাদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তা সম্পূর্ণ মিথ্যা বানোয়াট। বরং তাদের দোষ ঢাকতে এহেন কর্মকাণ্ডে লিপ্ত তারা। যার দরুন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর আমি অভিযোগ দিয়েছি।

মাদ্রাসা এডহক কমিটির সভাপতি মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ বলেন, অভিযোগ হাতে পেয়েছি। নিরসনের জন্য দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আমিনুল ইসলাম বলেন, ওই মাদ্রাসার তদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। যাহার প্রতিবেদন বোর্ডে পাঠানো হয়েছে। তারা দ্রুতই ব্যবস্থা নিবেন।