রেজাউল মোল্লা, গাজীপুর-
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল ঘোষনার পরপরই আচরণবিধি প্রতিপালনে কঠোর অবস্থান নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এরই ধারাবাহিকতায় গাজীপুর জেলা প্রশাসন ও গাজীপুর সিটি করপোরেশনের তত্ত্বাবধানে সকল প্রকার পোস্টার, ব্যানার ও বিলবোর্ড অপসারণে বিশেষ অভিযান চলছে। নির্বাচন কমিশন রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীদের শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে সব ধরনের আগাম প্রচার সামগ্রী সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দিয়েছেন। অন্যথায় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়েছে।
বিল বোর্ড অপসারণে গত ১১ ডিসেম্বর গাজীপুর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আলম হোসেন এর সাক্ষরিত এক চিঠিতে সিনিয়র সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ আবুবকর সিদ্দিক, নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ রুহুল আমীন, গাজীপুর সদর সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ মঈন খান এলিস, টঙ্গী রাজস্ব সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ মোজাহেরুল হককে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও গাজীপুর সিটি করপোরেশন থেকে আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা (অঞ্চল-৪) ইলিশায় রিছিল, আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা (অঞ্চল-৬) মাহমুদা আক্তার, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা সোহেল রানা, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (যান্ত্রিক) সুদীপ বসাক, উপ-সহকারী প্রকৌশলী (যান্ত্রিক) মোঃ আমজাদ হোসেন, রুহুল আহমেদ, আরিফুর রহমানকে দায়িত্ব পালনের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
চিঠিতে জানা যায়, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রম চলমান রয়েছে। জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে তফশিল ঘোষণার পরদিন থেকে ভোটগ্রহণের দুইদিন পর পর্যন্ত সময়ের জন্য মোবাইল কোর্ট আইন, ২০০৯ এর আওতায় আচরণ বিধি প্রতিপালনার্থে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করে দায়িত্ব পালনের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়।
সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা যায়, গত শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৬টা থেকে জেলা প্রশাসন ও গাজীপুর সিটি করপোরেশনের যৌথ তত্ত্বাবধানে শহরের সড়ক-মহাসড়ক, শহরের প্রধান প্রধান সড়ক, অলিগলি, পাড়ামহল্লায় মোড়, ফুটপাত, দেয়াল, বিদ্যুতের খুঁটি থেকে শুরু করে ফ্লাইওভারের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে স্থাপিত নির্বাচনী প্রচারণার বিলবোর্ড পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন অপসারণে ২৪ ঘন্টার মধ্যে সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। শাস্তিমূলক ব্যবস্থা: নির্বাচনী আচরণবিধি ও নির্দেশ না মানলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে সাংবিধানিক সংস্থাটি।
তবে সিটি কর্পোরেশনের মাঠ কর্মীরা বলছেন, যে দিকেই চোখ যায় শুধু পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন আর বিলবোর্ড। গাজীপুর মহানগর এলাকা যেন পোস্টারের পুঞ্জি হয়ে উঠেছে। এতে মহানগরজুড়ে দৃষ্টিদূষণ বেড়েছে। নির্বাচন ঘিরে এ রকম নির্বিচার প্রচারণায় নষ্ট হচ্ছে শহরের সৌন্দর্য। তৈরি হচ্ছে পরিবেশদূষণের ঝুঁকি। বিভিন্ন স্থান থেকে এসব বিলবোর্ড সরাতে আগামী দেড় মাসেও শেষ হবে না বলেও জানান তারা।
জানতে চাইলে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (যুগ্ম সচিব) মুহাম্মদ সোহেল হাসান বলেন, নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ি গাজীপুর সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে বিলবোর্ড অপসারণে ৬টি বিমলিফটার গাড়ি দেওয়া হয়েছে। প্রত্যেকটি বিমলিফটার গাড়িতে ৫জন কর্মী দেওয়া হয়েছে। আশা করি দ্রুত সময়ের মধ্যে বিলবোর্ড অপসারণ হবে।
মুহাম্মদ সোহেল হাসান আরো বলেন, প্রচারণার নামে বিলবোর্ড টাঙিয়ে গাজীপুর শহরের পরিবেশ ও জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করা রাজনীতির অংশ নয়। তাই আইন মেনে ব্যানার-বিলবোর্ড অপসারণ করে আমরা একটি ইতিবাচক বার্তা দিতে চাই-পরিবর্তনের রাজনীতি ফিরিয়ে দিতে। যাতে করে আচরণবিধি মানার মধ্য দিয়েই জনগণের আস্থা অর্জন সম্ভব।
তিনি আরো বলেন, নির্বাচনী আচরণবিধি মানা শুধু আইনি বাধ্যবাধকতা নয়, এটি রাজনৈতিক শালীনতারও অংশ। আমরা চাই একটি শান্তিপূর্ণ, সংঘাতমুক্ত ও সমান সুযোগের নির্বাচন, যেখানে জনগণ নির্বিঘেœ তাদের মতামত প্রকাশ করতে পারে।
খবর বাংলাদেশ ডেস্ক : 



















