ঢাকা ০৮:৫৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
যারা চাঁদাবাজি করতে আসবে তাদের খাম্বার সাথে বেঁধে রাখবেন- মুফতী ফয়জুল করিম টাঙ্গাইলে মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির নতুন কমিটি গঠিত সিরাজদিখান প্রেসক্লাবের জরুরী সভা অনুষ্ঠিত  স্টার লাইন বাসের ধাক্কায় মাইক্রোবাস উল্টে নিহত ৪ গণধিকার পরিষদ জাতীয় সরকারকে সমর্থন করে- গাজীপুরে রাশেদ খান পঞ্চগড়ে আট দফা দাবিতে চা চাষীদের মানববন্ধন গাজীপুরে কাউন্সিলরের বাড়ীতে দুর্ধর্ষ ডাকতি মির্জাগঞ্জের বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ইউপি প্যানেল চেয়ারম্যান পুনর্গঠনের দাবি মেম্বারদের কালিহাতীতে প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির নব কমিটির সভাপতি মফিদুল, সম্পাদক শফিক ১০ জেলা রেজিস্ট্রার সহ পদোন্নতি পাওয়া ১০ সাব রেজিস্ট্রারকে জেলা রেজিস্ট্রার পদে বদলি

যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরে অবাধ ঘুষ বাণিজ্য অবশেষে রাজাকারপুত্র মোখলেছুর বদলি!

রোস্তম মল্লিক
যুব উন্নয়ন অধিদফতরে ১১২ জন নিয়োগে ঘুষ বাণিজ্য অভিযুক্ত রাজাকারপুত্র উপপরিচালক (প্রশাসন) মো. মোখলেছুর রহমানকে বদলি করা হয়েছে। ২০ এপ্রিল বুধবার যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এক প্রজ্ঞাপণের মাধ্যমে তাকে বদলির আদেশ দেয়। সেই সাথে আগামী ৩ দিনের মধ্যে তাকে নতুন কর্মস্থলে যোগ দেওয়া নির্দেশ দেয়। যদিও প্রকাশিত প্রজ্ঞাপনে প্রশাসনিক কাজের সুবিধার্থে তাকে বদলির কথা বলা হলেও বিশ্বস্থ সূত্র বলছে ভিন্ন কথা। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ২৫ নভেম্বর এক অফিসাদেশে ১১২ জন সহকারী যুব উন্নয়ন কর্মকর্তাকে চলতি দায়িত্বে উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা পদে নিয়োগ দেয়া হয়। অভিযোগ ওঠে, নিয়োগপ্রাপ্তদের প্রায় সবাইকে নিয়ম বহির্ভূতভাবে জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন করে প্রতিযোগিতামূলক ঘুষ বাণিজ্যের মাধ্যমে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আজহারুল ইসলাম খান অবসরে যাওয়ার পূর্বমুহূর্তে ২ বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পাওয়া মাত্র ১৫ দিনের মাথায় এই অবৈধ নিয়োগের ঘটনা ঘটে। তবে মহাপরিচালকের পক্ষে উপ-পরিচালক (প্রশাসন) মো. মোখলেছুর রহমান এই ঘুষ বাণিজ্য করেন। জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন করে দেয়া এই নিয়োগের ফলে জুনিয়র কর্মকর্তারা সিনিয়র হয়ে যান এবং সিনিয়ররা জুনিয়র হয়ে যানে। এতে প্রতিষ্ঠানটিতে চেন অব কমান্ড ভেঙে পড়ে। কর্মকর্তাদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। সংশ্নিষ্টদের অভিযোগ, এর মধ্যে জ্যেষ্ঠতার তালিকায় একদম নিচের দিকে থাকা কর্মকর্তাদের ‘পদোন্নতি’ দেয়া হয়েছে। দেখা গেছে, চলতি দায়িত্বের তালিকায় থাকা উল্লেখিত সহকারি যুব উন্নয়ন কর্মকর্তাদের জ্যেষ্ঠতার ক্রমিক অনেক পেছনে। চলতি দায়িত্বের তালিকায় জ্যেষ্ঠতার তালিকা থেকে ১ ও ২ নং ক্রমিক ঠিক থাকলেও ১১২ জনের এ তালিকার ৩ নং ক্রমিক থেকেই জ্যেষ্ঠতার নিয়ম মানা হয়নি। জ্যেষ্ঠতার তালিকার ৪নং ব্যক্তি এসএম হাসান ইমামকে আনা হয়েছে ৩নং ক্রমিকে। প্রকৃতপক্ষে তার স্থলে ছিলেন ছালমান মিয়া। চলতি দায়িত্বের ৪নং ক্রমিকে আনা হয়েছে জ্যেষ্ঠতার তালিকার ৩৬১নং ব্যক্তি মো. খলিলুর রহমানকে। এর পর গত বুধবার জাতীয় সংসদের যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ নিয়ে তীব্র ক্ষোভ ও অসস্তোষ প্রকাশ করা হয়। কমিটি মন্ত্রণালয়কে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে নির্দেশ দেয়। একইসঙ্গে জ্যেষ্ঠতা তালিকা লঙ্ঘন করে অর্থের বিনিময়ে ব্যাপক অনিয়মের মাধ্যমে ৩য় শ্রেণির (১১ গ্রেড) ১১২ জন সহকারী উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তাকে উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা পদে চলতি দায়িত্ব প্রদান, বদলি বাণিজ্য ও নিয়োগ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিপুল অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ দ্রত তদন্ত করে আগামী বৈঠকে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেয়। এরই মধ্যে ২০ এপ্রিল প্রজ্ঞাপন জারী করে অভিযুক্ত রাজাকারপুত্র মো. মোখলেছুর রহমানকে নরসিংদীতে বদলি করা হয়। তবে সর্বশেষ পওয়া তথ্যমতে বদলির আদেশ প্রত্যাহারের জন্য চেষ্টা চালাচ্ছেন অভিযুক্ত মোখলেছুর রহমান। রাজাকারপুত্র মোখলেছ উচ্চপর্যায়ে তদবিরের মাধ্যমে নিজের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে চাইছেন। এখন দেখার বিষয় ক্ষমতার অপব্যবহার করে সে তার পদে থাকতে পারেন কি না? এব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব মেজবাহ উদ্দিন বলেন, তাকে বদলি করা হয়েছে নরসিংদীতে। এটি পরিবর্তনের আর কোনো সুযোগ নেই। যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আজহারুল ইসলাম খানকে ফোন করা হলে তিনি তার শশুর মারা গেছেন পরে কথা বলবেন বলে ফোন কেটে দেন। অভিযুক্ত মোখলেছুর রহমানের ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পাবনা জেলার বেড়া উপজেলার পায়না গ্রামের ৫নং ওয়ার্ডের হাফিজ উদ্দিন সরকার ওরফে মফিজ রাজাকার পুত্র মােঃ মোখলেসুর রহমান। তার বাবা পিস কমিটির মেম্বার এবং বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর বিএনপির রাজনীতিতে যুক্ত হন। এই মোখলেসুর রহমান ২০০২ সালে মতিউর রহমান নিজামীর সুপারিশে চাকুরীতে যােগদান করেন। সে সময় সারাদেশে জামাত বিএনপি সরকার আওয়ামীলীগ নিশ্চিহ্নকরনে মরিয়া ছিল। যার বলি হয়েছিলেন শহীদ আহসানউল্লাহ মাষ্টার, মঞ্জুরুল ইমাম, শাহ এম এস কিবয়িার মত হাজারো নেতাকর্মী। সেই বিভিষীকাময় সময়ে রাজাকার শিরোমনি মতিউর রহমান নিজামীর হাতধরে সরকারি সুবিধা নেওয়া রাজাকার পুত্র মোখলেসুর রহমান বছর খানিক ধরে ভোলপাল্টে বিশাল মুখশধারী আওয়ামীলীগ পন্থী বনে যান। তার অপকর্ম ঢাকা পড়েছে পুর্ববর্তী কর্মস্থল কেরাণীগঞ্জে আমান উল্লাহ আমানের ছত্রছায়ায় থেকে। কুমিল্লা এবং চট্টগ্রামে তার কর্মকালীন সময়ে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযােগ প্রমানিত। শুধু অসত্য, মিথ্যাচার আর বাগাম্বর করে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ ব্যতীত তার কোন যােগ্যতা নেই। মোখলেসুর রহমানের বাবা রাজাকার ছিলেন স্বীকার করেছেন পাবনার দেশপ্রেমীক মুক্তিযোদ্ধা প্রফেসর ডা. আলতাফ হোসেন সরকার। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, রাজাকার শাবকরা এখন দেশের উচ্চপর্যায়ে বসে আছে আর মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরা পথে-ঘাটে। মো: মোখলেসুর রহমান এর বদলী বাণিজ্যে যুব উন্নয়ন দপ্তরে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছিল। মহাপরিচালক তার পকেটের লোক দুই চারটা মাজেজা দেখিয়ে সকলকে তটস্থ করে রেখেছেন। তার উদ্দেশ্য সরকারের এই সময়ে যতটুকু ফায়দা হাসিল করা যায়। বদনাম হলে সরকার ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীর হবে তার কি? কৌশলে নিয়োগ বাণিজ্য করে বিশাল অর্থের মালিক বনে গেছেন কিছুদিন আগেও অচেনা এই বিশাল মুখােশধারী আওয়ামী লীগার। নিয়োগ কমিটির মেম্বার সেক্রেটারি হিসেবে ডিজিকে প্রভাবিত করে বিশাল বাণিজ্য করেন। কর্মচারী নিয়োগে কোন জেলা কোটা মানা হয় নাই। রাতের আধারে পরীক্ষার খাতা যাচাই করে তার তালিকা অনুযায়ী মেধা কোটা বানিয়ে ২য় শ্রেণির পদ দেখিয়ে নিয়োগ দিয়ে দিয়েছেন অথচ আইন হচ্ছে ২য় শ্রেণির পদের নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশন। তিনি নিয়োগ ও চলতি দায়িত্ব প্রদানের ক্ষেত্রে সুবিধামত ২য় শ্রেণী ও ৩য় শ্রেণীভুক্ত করেন। মন্ত্রী, সচিব, ডিজি মহোদয়ের কাঠগড়ায় দাড় করিয়ে ফায়দা লুটে নিয়েছেন এই রাজাকার পুত্র মো: মোখলেসুর রহমান । ওপেন সিক্রেট ঘটনা ঘটিয়ে চলতি দায়িত্বের নামে কোটি কোট টাকার চাঁদাবাজী করে বিএনপি জামাত সমর্থীত কর্মচারীদের সুবিধা পাইয়ে দিয়েছেন। এই মো: মোখলেসুর রহমানের বিরুদ্ধে দুদক, নিজ মন্ত্রণালয়, সংসদীয় কমিটিসহ একাধিক তদন্ত সংস্থা তদন্ত করলেও অদৃশ্য কারনে সকলেই নিরব। তাকে প্রশাসনের চেয়ারে বসিয়ে রাখার কারণে তদন্ত প্রভাবিত করছে। স্বাক্ষী প্রদানকারী কর্মকর্তা কর্মচারীদের ডেকে ব্যাপক হুমকি-ধমকি প্রদান করেন। সকলেই তার ভয়ে ভীত। প্রকাশ্যেই বলে বেড়ান ডিজি বাঁচতে চাইলে তাকে এই পদ থেকে সরা পারবে না। তাহলে থলের বিড়াল বেরিয়ে যাবে। রাজাকার পুত্র মো: মোখলেসুর রহমান অধিদপ্তরের সিনিয়র কর্মকর্তাদের অবলীলায় তুচ্ছতাচ্ছিল্য, অপমান ও অপদস্থ করে কথা বলতে দ্বিধা করেন না। কর্মচারীদের অকথ্যভাষায় গালাগালি করে অধিদপ্তরকে এক নাজুক পরিস্থিতির সম্মুখীন করেছেন। মহাপরিচালক এর নামে তার এ সকল ন্যাক্কারজনক কর্মকান্ডের জন্য সরকার ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী সমালোচিত হচ্ছে।
এদিকে তার এই বদলির খবরে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের একাধিক কর্মকর্তা স্বস্তি প্রকাশ করেছেন এবং তারা মোখলেছুর রহমানের স্থায়ী বরখাস্তের দাবি জানিয়েছেন। ভবিষ্যতে যেনো কোনো স্বাধীনতা বিরোধীদের সন্তানরা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের মতো প্রতিষ্ঠানে গুরুত্বপূর্ণ পদসমূহে বসতে না পারেন সেদিকেও খেয়াল রাখতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানিয়েছেন।

ট্যাগস
জনপ্রিয় সংবাদ

যারা চাঁদাবাজি করতে আসবে তাদের খাম্বার সাথে বেঁধে রাখবেন- মুফতী ফয়জুল করিম

যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরে অবাধ ঘুষ বাণিজ্য অবশেষে রাজাকারপুত্র মোখলেছুর বদলি!

আপডেট টাইম : ০৬:৪৩:০১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ এপ্রিল ২০২২

রোস্তম মল্লিক
যুব উন্নয়ন অধিদফতরে ১১২ জন নিয়োগে ঘুষ বাণিজ্য অভিযুক্ত রাজাকারপুত্র উপপরিচালক (প্রশাসন) মো. মোখলেছুর রহমানকে বদলি করা হয়েছে। ২০ এপ্রিল বুধবার যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এক প্রজ্ঞাপণের মাধ্যমে তাকে বদলির আদেশ দেয়। সেই সাথে আগামী ৩ দিনের মধ্যে তাকে নতুন কর্মস্থলে যোগ দেওয়া নির্দেশ দেয়। যদিও প্রকাশিত প্রজ্ঞাপনে প্রশাসনিক কাজের সুবিধার্থে তাকে বদলির কথা বলা হলেও বিশ্বস্থ সূত্র বলছে ভিন্ন কথা। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ২৫ নভেম্বর এক অফিসাদেশে ১১২ জন সহকারী যুব উন্নয়ন কর্মকর্তাকে চলতি দায়িত্বে উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা পদে নিয়োগ দেয়া হয়। অভিযোগ ওঠে, নিয়োগপ্রাপ্তদের প্রায় সবাইকে নিয়ম বহির্ভূতভাবে জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন করে প্রতিযোগিতামূলক ঘুষ বাণিজ্যের মাধ্যমে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আজহারুল ইসলাম খান অবসরে যাওয়ার পূর্বমুহূর্তে ২ বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পাওয়া মাত্র ১৫ দিনের মাথায় এই অবৈধ নিয়োগের ঘটনা ঘটে। তবে মহাপরিচালকের পক্ষে উপ-পরিচালক (প্রশাসন) মো. মোখলেছুর রহমান এই ঘুষ বাণিজ্য করেন। জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন করে দেয়া এই নিয়োগের ফলে জুনিয়র কর্মকর্তারা সিনিয়র হয়ে যান এবং সিনিয়ররা জুনিয়র হয়ে যানে। এতে প্রতিষ্ঠানটিতে চেন অব কমান্ড ভেঙে পড়ে। কর্মকর্তাদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। সংশ্নিষ্টদের অভিযোগ, এর মধ্যে জ্যেষ্ঠতার তালিকায় একদম নিচের দিকে থাকা কর্মকর্তাদের ‘পদোন্নতি’ দেয়া হয়েছে। দেখা গেছে, চলতি দায়িত্বের তালিকায় থাকা উল্লেখিত সহকারি যুব উন্নয়ন কর্মকর্তাদের জ্যেষ্ঠতার ক্রমিক অনেক পেছনে। চলতি দায়িত্বের তালিকায় জ্যেষ্ঠতার তালিকা থেকে ১ ও ২ নং ক্রমিক ঠিক থাকলেও ১১২ জনের এ তালিকার ৩ নং ক্রমিক থেকেই জ্যেষ্ঠতার নিয়ম মানা হয়নি। জ্যেষ্ঠতার তালিকার ৪নং ব্যক্তি এসএম হাসান ইমামকে আনা হয়েছে ৩নং ক্রমিকে। প্রকৃতপক্ষে তার স্থলে ছিলেন ছালমান মিয়া। চলতি দায়িত্বের ৪নং ক্রমিকে আনা হয়েছে জ্যেষ্ঠতার তালিকার ৩৬১নং ব্যক্তি মো. খলিলুর রহমানকে। এর পর গত বুধবার জাতীয় সংসদের যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ নিয়ে তীব্র ক্ষোভ ও অসস্তোষ প্রকাশ করা হয়। কমিটি মন্ত্রণালয়কে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে নির্দেশ দেয়। একইসঙ্গে জ্যেষ্ঠতা তালিকা লঙ্ঘন করে অর্থের বিনিময়ে ব্যাপক অনিয়মের মাধ্যমে ৩য় শ্রেণির (১১ গ্রেড) ১১২ জন সহকারী উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তাকে উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা পদে চলতি দায়িত্ব প্রদান, বদলি বাণিজ্য ও নিয়োগ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিপুল অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ দ্রত তদন্ত করে আগামী বৈঠকে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেয়। এরই মধ্যে ২০ এপ্রিল প্রজ্ঞাপন জারী করে অভিযুক্ত রাজাকারপুত্র মো. মোখলেছুর রহমানকে নরসিংদীতে বদলি করা হয়। তবে সর্বশেষ পওয়া তথ্যমতে বদলির আদেশ প্রত্যাহারের জন্য চেষ্টা চালাচ্ছেন অভিযুক্ত মোখলেছুর রহমান। রাজাকারপুত্র মোখলেছ উচ্চপর্যায়ে তদবিরের মাধ্যমে নিজের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে চাইছেন। এখন দেখার বিষয় ক্ষমতার অপব্যবহার করে সে তার পদে থাকতে পারেন কি না? এব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব মেজবাহ উদ্দিন বলেন, তাকে বদলি করা হয়েছে নরসিংদীতে। এটি পরিবর্তনের আর কোনো সুযোগ নেই। যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আজহারুল ইসলাম খানকে ফোন করা হলে তিনি তার শশুর মারা গেছেন পরে কথা বলবেন বলে ফোন কেটে দেন। অভিযুক্ত মোখলেছুর রহমানের ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পাবনা জেলার বেড়া উপজেলার পায়না গ্রামের ৫নং ওয়ার্ডের হাফিজ উদ্দিন সরকার ওরফে মফিজ রাজাকার পুত্র মােঃ মোখলেসুর রহমান। তার বাবা পিস কমিটির মেম্বার এবং বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর বিএনপির রাজনীতিতে যুক্ত হন। এই মোখলেসুর রহমান ২০০২ সালে মতিউর রহমান নিজামীর সুপারিশে চাকুরীতে যােগদান করেন। সে সময় সারাদেশে জামাত বিএনপি সরকার আওয়ামীলীগ নিশ্চিহ্নকরনে মরিয়া ছিল। যার বলি হয়েছিলেন শহীদ আহসানউল্লাহ মাষ্টার, মঞ্জুরুল ইমাম, শাহ এম এস কিবয়িার মত হাজারো নেতাকর্মী। সেই বিভিষীকাময় সময়ে রাজাকার শিরোমনি মতিউর রহমান নিজামীর হাতধরে সরকারি সুবিধা নেওয়া রাজাকার পুত্র মোখলেসুর রহমান বছর খানিক ধরে ভোলপাল্টে বিশাল মুখশধারী আওয়ামীলীগ পন্থী বনে যান। তার অপকর্ম ঢাকা পড়েছে পুর্ববর্তী কর্মস্থল কেরাণীগঞ্জে আমান উল্লাহ আমানের ছত্রছায়ায় থেকে। কুমিল্লা এবং চট্টগ্রামে তার কর্মকালীন সময়ে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযােগ প্রমানিত। শুধু অসত্য, মিথ্যাচার আর বাগাম্বর করে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ ব্যতীত তার কোন যােগ্যতা নেই। মোখলেসুর রহমানের বাবা রাজাকার ছিলেন স্বীকার করেছেন পাবনার দেশপ্রেমীক মুক্তিযোদ্ধা প্রফেসর ডা. আলতাফ হোসেন সরকার। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, রাজাকার শাবকরা এখন দেশের উচ্চপর্যায়ে বসে আছে আর মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরা পথে-ঘাটে। মো: মোখলেসুর রহমান এর বদলী বাণিজ্যে যুব উন্নয়ন দপ্তরে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছিল। মহাপরিচালক তার পকেটের লোক দুই চারটা মাজেজা দেখিয়ে সকলকে তটস্থ করে রেখেছেন। তার উদ্দেশ্য সরকারের এই সময়ে যতটুকু ফায়দা হাসিল করা যায়। বদনাম হলে সরকার ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীর হবে তার কি? কৌশলে নিয়োগ বাণিজ্য করে বিশাল অর্থের মালিক বনে গেছেন কিছুদিন আগেও অচেনা এই বিশাল মুখােশধারী আওয়ামী লীগার। নিয়োগ কমিটির মেম্বার সেক্রেটারি হিসেবে ডিজিকে প্রভাবিত করে বিশাল বাণিজ্য করেন। কর্মচারী নিয়োগে কোন জেলা কোটা মানা হয় নাই। রাতের আধারে পরীক্ষার খাতা যাচাই করে তার তালিকা অনুযায়ী মেধা কোটা বানিয়ে ২য় শ্রেণির পদ দেখিয়ে নিয়োগ দিয়ে দিয়েছেন অথচ আইন হচ্ছে ২য় শ্রেণির পদের নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশন। তিনি নিয়োগ ও চলতি দায়িত্ব প্রদানের ক্ষেত্রে সুবিধামত ২য় শ্রেণী ও ৩য় শ্রেণীভুক্ত করেন। মন্ত্রী, সচিব, ডিজি মহোদয়ের কাঠগড়ায় দাড় করিয়ে ফায়দা লুটে নিয়েছেন এই রাজাকার পুত্র মো: মোখলেসুর রহমান । ওপেন সিক্রেট ঘটনা ঘটিয়ে চলতি দায়িত্বের নামে কোটি কোট টাকার চাঁদাবাজী করে বিএনপি জামাত সমর্থীত কর্মচারীদের সুবিধা পাইয়ে দিয়েছেন। এই মো: মোখলেসুর রহমানের বিরুদ্ধে দুদক, নিজ মন্ত্রণালয়, সংসদীয় কমিটিসহ একাধিক তদন্ত সংস্থা তদন্ত করলেও অদৃশ্য কারনে সকলেই নিরব। তাকে প্রশাসনের চেয়ারে বসিয়ে রাখার কারণে তদন্ত প্রভাবিত করছে। স্বাক্ষী প্রদানকারী কর্মকর্তা কর্মচারীদের ডেকে ব্যাপক হুমকি-ধমকি প্রদান করেন। সকলেই তার ভয়ে ভীত। প্রকাশ্যেই বলে বেড়ান ডিজি বাঁচতে চাইলে তাকে এই পদ থেকে সরা পারবে না। তাহলে থলের বিড়াল বেরিয়ে যাবে। রাজাকার পুত্র মো: মোখলেসুর রহমান অধিদপ্তরের সিনিয়র কর্মকর্তাদের অবলীলায় তুচ্ছতাচ্ছিল্য, অপমান ও অপদস্থ করে কথা বলতে দ্বিধা করেন না। কর্মচারীদের অকথ্যভাষায় গালাগালি করে অধিদপ্তরকে এক নাজুক পরিস্থিতির সম্মুখীন করেছেন। মহাপরিচালক এর নামে তার এ সকল ন্যাক্কারজনক কর্মকান্ডের জন্য সরকার ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী সমালোচিত হচ্ছে।
এদিকে তার এই বদলির খবরে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের একাধিক কর্মকর্তা স্বস্তি প্রকাশ করেছেন এবং তারা মোখলেছুর রহমানের স্থায়ী বরখাস্তের দাবি জানিয়েছেন। ভবিষ্যতে যেনো কোনো স্বাধীনতা বিরোধীদের সন্তানরা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের মতো প্রতিষ্ঠানে গুরুত্বপূর্ণ পদসমূহে বসতে না পারেন সেদিকেও খেয়াল রাখতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানিয়েছেন।