ঢাকা ০১:৩৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
গাজীপুরে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত আমার সন্তান ভয়ে বাড়িতে আসতে পারেনা, বিচার চাই গাজীপুরে কুরআন অপমানকারী শুভ সরকারের ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ নৌপরিবহন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টার সাথে জাপানের রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ সরকারি নথি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে: ভূমি উপদেষ্টা সিরাজদিখানে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আহত ও শহীদদের স্মরণে দোয়া মাহফিল মুন্সীগঞ্জে খালেদা জিয়ার রোগ মুক্তি ও সাবেক নেত্রীবৃন্দের স্বরণে দোয়া ও আলোচনা সভা টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে মুক্তিযোদ্ধা দলের আহ্বায়ক কমিটি গঠন গাজীপুরে চাঁদার দাবিতে বাড়ি ঘর ভাংচুরের অভিযোগ গোপালগঞ্জের হালিমের কথায় চলছে নন্দী পাড়া ভুমি অফিস

নলডাঙ্গা পৌর মেয়র মনিরের বিরুদ্ধে সাড়ে তিন কোটি টাকা অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ!

নাটোর প্রতিনিধি
নাটোরের নলডাঙ্গা পৌরসভার মেয়র মনিরুজ্জামান মনির নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে নানা রকম অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা, ভুয়া প্রকল্পের নামে অর্থ হাতিয়ে নেয়া, সুকৌশলে নিজেই ঠিকাদারী লাইসেন্স ব্যবহার করে উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নসহ নানা দূর্নীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছেন। এছাড়া পৌরসভার সকল কাউন্সিলরদের সঙ্গে তার কোন সমন্বয় নেই। তার মন গড়া ভাবে পৌরসভা পরিচালিত হচ্ছে। ফলে পৌর সভার উন্নয়ন কাজ ব্যহত হচ্ছে, সরকারী অর্থ লুটপাট-অপচয় এবং ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে।পৌর সভার সাধারন নাগরিকতার তো দূরের কথা কাউন্সিলরাও তার বিরুদ্ধে কোন কথা বলতে পারেন না। যে কোন বিষয়ে প্রতিবাদ করলে সন্ত্রাসী বাহিনী দ্বারা ভয়ভীতি দেখানো হয়।পৌরসভার তিন কোটি ৬০ লাখ টাকার গুরুত্বপূর্ণ নগর উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ দরপত্রের মাধ্যমে পায় নাটোরের মৌসুমী ট্রের্ডিং এর স্বত্তাধিকারী মোঃ মনতাজ আলী। মনিরুজ্জামান মনির সরকারী বিধিমালাকে তোয়াক্কা না করে ২০২০ সালের ১২ জানুয়ারী নাটোর নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে চুক্তি নামা করে পৌর সভার আরো চারজন তালিকাভুক্ত ঠিকাদারকে সাথে নিয়ে কাজটি কিনে নেন।এরমধ্যে পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী তাজুল ইসলামের স্ত্রী সাবরীনা সুলতানাও রয়েছেন। সে সময় তার বাবা শফির উদ্দিন মেয়র ছিলেন। মনিরুজ্জামান মনির নিজে মেয়র নির্বাচিতহওয়ার পর বিধিমালা জেনে চুক্তি বাতিল করে এই সাড়ে তিন কোটি টাকার কাজ থেকে নিজে সরে গেছেন দাবী করলেও তার কাজের প্রধান অংশীদার রইস উদ্দিন ও প্রকৌশলী জিল্লুর রহমান বলেছেন, মেয়রের বক্তব্য সঠিক নয়। তিনি এখনো তাদের সাথে আগের মতোই অংশীদার আছেন। পৌর সভার ৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফরহাদ হোসেন বলেন, তার এলাকার ধোবাপুকুর গোরস্তান হতে তেতুল তলা পর্যন্ত গ্রামীন সড়ক খোয়া দ্বারা মেরামত করার নামে ৫ লাখ টাকার প্রকল্প গ্রহণ করে। কিš‘ সেখানে কোন কাজ না করে বা কোন প্রকার খোয়া না ফেলেই ওই প্রকল্পের সুমুদয় টাকা উত্তোলন করে আত্মসাত করেছেন মেয়র। কাগজে কলমে রেজুলেশনে প্রকল্পের নাম ও টাকার পরিমান উল্লেখ করা হলেও সেখানে কোন প্রকার কাজ করা হয়নি। কাজ না করেই সমস্ত টাকা ভুয়া বিল-ভাউচার দিয়ে উত্তোলন করা হয়েছে। ৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মহসিন আলী প্রামানিক বলেন, কোন কাজেই কাউন্সিলরদের ডাকা হয় না। সব কাজ করে শুধু বিলে স্বাক্ষর করায়ে নেয়।১ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বকর হোসেন ও কাউন্সিলর মাহবুর রহমান বলেন, গভীর রাত পর্যন্ত অফিস খুলে মেয়র তার লোকজন নিয়ে অফিসে আড্ডা দেয়। দিনেও কাউন্সিলররা অফিসে এসে বসার জায়গা পর্যন্ত পায় না। তাদের সাথে মেয়রের কোন কথাই হয়না সমন্বয়ও নেই। কিছু বললেই ক্যাডার দিয়ে হুমকি দেয়। অফিসের মধ্যে সে কারনে রড, হাতুড়ি ও জিআই পাইপ রাখা আছে বলে তারা দাবী করেন। পৌর সভার কাউন্সিলর এসোসিয়েশনের সভাপতি মাহমুদুল হাসান মুক্তা বলেন, সরকারি ক্রয় নীতিমালা-২০০৮ লংঘন করে কোন কমিটি না করেই সব কেনা কাটা করে পরে জোর করে তাদের দিয়ে স্বাক্ষর করিয়ে নেয়। পৌরসভার এক নং প্যানেল মেয়র শরিফুল ইসলাম পিয়াস বলেছেন, পৌর সভাকে মেয়র তার ব্যক্তিগত সম্পদ হিসেবে ব্যবহার করছেন। কোন নিয়ম নীতির বালাই নেই। যা ইচ্ছে তাই করছেন। কোন কাজের আলোচনা পরামর্শ বা সিদ্ধান্ত নেই। কোন মিটিং হলে রেজুলেশন সরবরাহ করে না। পরে নিজের ই”েছ মতো যা খুশি লিখে নেয়। এভাবে চলতে পারে না।অন্য কাউন্সিলরা বলেন, পৌর সভার মেয়র নিয়ম ও বিধি বর্হিভুত ভাবে বিভিন্ন কাজের নামে যে অর্থ প্রয়োজন, তার চেয়ে অধিক পরিমান টাকা ভুয়া বিল ভাউচার তৈরী করে উত্তোলন করে সরকারের অর্থ আত্মসাত করেন। পৌর সভার সিসি ক্যামেরা কেনা ও স্থাপনে খরচের চেয়ে প্রায় চারগুন বেশি টাকা ভুয়া বিল দাখিল করে উত্তোলন করা হয়েছে। মশক নিধনের নামে প্রয়োজনের অতিরিক্ত খরচ দেখিয়ে ভুয়া ভাউচার দাখিল করে পৌর সভার টাকা উত্তোলন করে আত্মসাত করেছেন। এছাড়া করোনা মোকাবিলার নামে সুরক্ষা উপকরন ক্রয় ও বিতরনেও রয়েছে নানা অনিয়ম।মুজিবজন্ম শতবার্ষিকী উদযাপনের নামে পৌরসভা থেকে কয়েক লাখ টাকা খরচ দেখানো হয়েছে। ওই অনুষ্ঠানের পর থেকে আজ অবধি কোন কাউন্সিলরকে ব্যয়ের হিসাব দেখানো হয়নি। এখানেও লাখ লাখ টাকা আত্মসাত করা হয়েছে। এছাড়া পৌর সভার নিজস্ব ট্রাক মেরামতের নামে খেয়াল খুশিমত অধিক বিল দাখিল টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। পৌর সভার ভবন রং করতে মাত্র ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। অথচ সেখানে ৫ লাখ টাকা খরচ দেখিয়ে ভাউচারের মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করা হয়েছে।এছাড়া বিভিন্ন কোটেশন ও কাউন্সিলরদের নামে পিআইসি প্রকল্প দেখিয়ে কাজ না করেই অর্থ উত্তোলন করে থাকে মেয়র। এখন জনবল নিয়োগের মাধ্যমে নিয়োগ বানিজ্যেও পাঁয়তারা শুরু করা হয়েছে। মুজিব জন্মশত বার্ষিকী উদযাপনে একটি প্রকল্প ভূঁয়া বিল ভাউচার দেখিয়ে কয়েক লাখ টাকা উত্তোলন করেছেন এমন প্রশ্নে মেয়র মনিরুজ্জামান মনির বলেন, ৫নং ওযার্ডের কাউন্সিলর মাহবুবুর রহমানকে আহবায়ক করে কমিটি গঠন করা হয়েছে।এখানে খেয়াল খুশিমত অর্থ উত্তোলনের সুযোগ নেই। কাগজে কলমে শুধু উদযাপন কমিটির আহবায়ক করা হলেও কিছুই জানেন না দাবি করেছেন কাউন্সিলর মাহবুবর রহমান। পৌর সভায় গভীর রাত পর্যন্ত আড্ডা ও অনৈতিক কার্যকলাপ সম্পর্কে জানতে চাইলে মেয়র বলেন, আওয়ামীলীগ আমাকে সৃষ্টি করেছে, আমি আওয়ামীলীগ সৃষ্টি করিনি। দলের কার্যালয় ও পৌর সভার কার্যালয় পাশাপাশি। অনেক সময় কার্যালয়েই সাংগঠনিক আলাপ আলোচনা করতে হয় তাই রাত হয়ে যায়। তবে এখানে কোন আড্ডার সুযোগ নেই।এছাড়া পৌর সভার ভবন গুলো রং করা ও পৌর এলাকায় ঠিকাদারি কাজের সাথে অংশীদার থাকার কথা অস্বিকার করে বলেন, মেয়র হওয়ার আগে পৌর সভায় ঠিকাদারি করেছি। এখন আর করিনা। মেয়র বলেন, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ থাকায় পৌরসভার উন্নয়ন বাধা গ্রস্ত হচ্ছে। অনৈতিক ভাবে সুবিধা না দেয়ায় পৌর সভার কিছু কাউন্সিলর আমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ করছে। এরআগেও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে শুনানিতে কোন প্রমান না পাওয়ায় প্রত্যাহার করেছে অভিযোগকারীরা।তবে অভিযোগ প্রত্যাহারের বিষয়ে কাউন্সিলররা বলেন, প্রত্যাহারের কোন সুযোগ নেই। মেয়র নিজের খেয়াল খুশি মত পরিষদ পরিচালনা করছেন। কাউন্সিলরদের মতামতের কোন দাম দিচ্ছে না। ফলে পৌর বাসী উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। তাদের দাবি নির্বাচনের আগে দেয়া প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে না। সরকারের দেয়া উন্নয়ন মুলক কাজ গুলোজনগনের দোড় গোড়ায় পৌছানো সম্ভব হচ্ছে না। তাতে সরকারের ভাবমুর্তি বিনষ্ট হচ্ছে।মেয়রের এসব কর্মকান্ড থেকে নলডাঙ্গা পৌর সভাকে বাঁচাতে মন্ত্রীপরিষদ সচিব, দূর্নীতি দমনকমিশন (দুদক) ঢাকার সচিব, রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার, নাটোর জেলা প্রশাসক, স্থানীয় সরকার বিভাগের রাজশাহী বিভাগীয় পরিচালক সহ আরো বেশকয়েকটি দপ্তওে তারা প্রতিকার চেয়ে আবেদন করেছেন। মেয়রের রোষানল থেকে বাঁচতে অভিযোগকারীরা নিজেদের পরিচয় পর্যন্ত গোপন রেখেছেন।

ট্যাগস
জনপ্রিয় সংবাদ

গাজীপুরে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত

নলডাঙ্গা পৌর মেয়র মনিরের বিরুদ্ধে সাড়ে তিন কোটি টাকা অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ!

আপডেট টাইম : ০৯:৩৯:৩২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২০ অগাস্ট ২০২২

নাটোর প্রতিনিধি
নাটোরের নলডাঙ্গা পৌরসভার মেয়র মনিরুজ্জামান মনির নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে নানা রকম অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা, ভুয়া প্রকল্পের নামে অর্থ হাতিয়ে নেয়া, সুকৌশলে নিজেই ঠিকাদারী লাইসেন্স ব্যবহার করে উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নসহ নানা দূর্নীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছেন। এছাড়া পৌরসভার সকল কাউন্সিলরদের সঙ্গে তার কোন সমন্বয় নেই। তার মন গড়া ভাবে পৌরসভা পরিচালিত হচ্ছে। ফলে পৌর সভার উন্নয়ন কাজ ব্যহত হচ্ছে, সরকারী অর্থ লুটপাট-অপচয় এবং ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে।পৌর সভার সাধারন নাগরিকতার তো দূরের কথা কাউন্সিলরাও তার বিরুদ্ধে কোন কথা বলতে পারেন না। যে কোন বিষয়ে প্রতিবাদ করলে সন্ত্রাসী বাহিনী দ্বারা ভয়ভীতি দেখানো হয়।পৌরসভার তিন কোটি ৬০ লাখ টাকার গুরুত্বপূর্ণ নগর উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ দরপত্রের মাধ্যমে পায় নাটোরের মৌসুমী ট্রের্ডিং এর স্বত্তাধিকারী মোঃ মনতাজ আলী। মনিরুজ্জামান মনির সরকারী বিধিমালাকে তোয়াক্কা না করে ২০২০ সালের ১২ জানুয়ারী নাটোর নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে চুক্তি নামা করে পৌর সভার আরো চারজন তালিকাভুক্ত ঠিকাদারকে সাথে নিয়ে কাজটি কিনে নেন।এরমধ্যে পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী তাজুল ইসলামের স্ত্রী সাবরীনা সুলতানাও রয়েছেন। সে সময় তার বাবা শফির উদ্দিন মেয়র ছিলেন। মনিরুজ্জামান মনির নিজে মেয়র নির্বাচিতহওয়ার পর বিধিমালা জেনে চুক্তি বাতিল করে এই সাড়ে তিন কোটি টাকার কাজ থেকে নিজে সরে গেছেন দাবী করলেও তার কাজের প্রধান অংশীদার রইস উদ্দিন ও প্রকৌশলী জিল্লুর রহমান বলেছেন, মেয়রের বক্তব্য সঠিক নয়। তিনি এখনো তাদের সাথে আগের মতোই অংশীদার আছেন। পৌর সভার ৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফরহাদ হোসেন বলেন, তার এলাকার ধোবাপুকুর গোরস্তান হতে তেতুল তলা পর্যন্ত গ্রামীন সড়ক খোয়া দ্বারা মেরামত করার নামে ৫ লাখ টাকার প্রকল্প গ্রহণ করে। কিš‘ সেখানে কোন কাজ না করে বা কোন প্রকার খোয়া না ফেলেই ওই প্রকল্পের সুমুদয় টাকা উত্তোলন করে আত্মসাত করেছেন মেয়র। কাগজে কলমে রেজুলেশনে প্রকল্পের নাম ও টাকার পরিমান উল্লেখ করা হলেও সেখানে কোন প্রকার কাজ করা হয়নি। কাজ না করেই সমস্ত টাকা ভুয়া বিল-ভাউচার দিয়ে উত্তোলন করা হয়েছে। ৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মহসিন আলী প্রামানিক বলেন, কোন কাজেই কাউন্সিলরদের ডাকা হয় না। সব কাজ করে শুধু বিলে স্বাক্ষর করায়ে নেয়।১ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বকর হোসেন ও কাউন্সিলর মাহবুর রহমান বলেন, গভীর রাত পর্যন্ত অফিস খুলে মেয়র তার লোকজন নিয়ে অফিসে আড্ডা দেয়। দিনেও কাউন্সিলররা অফিসে এসে বসার জায়গা পর্যন্ত পায় না। তাদের সাথে মেয়রের কোন কথাই হয়না সমন্বয়ও নেই। কিছু বললেই ক্যাডার দিয়ে হুমকি দেয়। অফিসের মধ্যে সে কারনে রড, হাতুড়ি ও জিআই পাইপ রাখা আছে বলে তারা দাবী করেন। পৌর সভার কাউন্সিলর এসোসিয়েশনের সভাপতি মাহমুদুল হাসান মুক্তা বলেন, সরকারি ক্রয় নীতিমালা-২০০৮ লংঘন করে কোন কমিটি না করেই সব কেনা কাটা করে পরে জোর করে তাদের দিয়ে স্বাক্ষর করিয়ে নেয়। পৌরসভার এক নং প্যানেল মেয়র শরিফুল ইসলাম পিয়াস বলেছেন, পৌর সভাকে মেয়র তার ব্যক্তিগত সম্পদ হিসেবে ব্যবহার করছেন। কোন নিয়ম নীতির বালাই নেই। যা ইচ্ছে তাই করছেন। কোন কাজের আলোচনা পরামর্শ বা সিদ্ধান্ত নেই। কোন মিটিং হলে রেজুলেশন সরবরাহ করে না। পরে নিজের ই”েছ মতো যা খুশি লিখে নেয়। এভাবে চলতে পারে না।অন্য কাউন্সিলরা বলেন, পৌর সভার মেয়র নিয়ম ও বিধি বর্হিভুত ভাবে বিভিন্ন কাজের নামে যে অর্থ প্রয়োজন, তার চেয়ে অধিক পরিমান টাকা ভুয়া বিল ভাউচার তৈরী করে উত্তোলন করে সরকারের অর্থ আত্মসাত করেন। পৌর সভার সিসি ক্যামেরা কেনা ও স্থাপনে খরচের চেয়ে প্রায় চারগুন বেশি টাকা ভুয়া বিল দাখিল করে উত্তোলন করা হয়েছে। মশক নিধনের নামে প্রয়োজনের অতিরিক্ত খরচ দেখিয়ে ভুয়া ভাউচার দাখিল করে পৌর সভার টাকা উত্তোলন করে আত্মসাত করেছেন। এছাড়া করোনা মোকাবিলার নামে সুরক্ষা উপকরন ক্রয় ও বিতরনেও রয়েছে নানা অনিয়ম।মুজিবজন্ম শতবার্ষিকী উদযাপনের নামে পৌরসভা থেকে কয়েক লাখ টাকা খরচ দেখানো হয়েছে। ওই অনুষ্ঠানের পর থেকে আজ অবধি কোন কাউন্সিলরকে ব্যয়ের হিসাব দেখানো হয়নি। এখানেও লাখ লাখ টাকা আত্মসাত করা হয়েছে। এছাড়া পৌর সভার নিজস্ব ট্রাক মেরামতের নামে খেয়াল খুশিমত অধিক বিল দাখিল টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। পৌর সভার ভবন রং করতে মাত্র ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। অথচ সেখানে ৫ লাখ টাকা খরচ দেখিয়ে ভাউচারের মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করা হয়েছে।এছাড়া বিভিন্ন কোটেশন ও কাউন্সিলরদের নামে পিআইসি প্রকল্প দেখিয়ে কাজ না করেই অর্থ উত্তোলন করে থাকে মেয়র। এখন জনবল নিয়োগের মাধ্যমে নিয়োগ বানিজ্যেও পাঁয়তারা শুরু করা হয়েছে। মুজিব জন্মশত বার্ষিকী উদযাপনে একটি প্রকল্প ভূঁয়া বিল ভাউচার দেখিয়ে কয়েক লাখ টাকা উত্তোলন করেছেন এমন প্রশ্নে মেয়র মনিরুজ্জামান মনির বলেন, ৫নং ওযার্ডের কাউন্সিলর মাহবুবুর রহমানকে আহবায়ক করে কমিটি গঠন করা হয়েছে।এখানে খেয়াল খুশিমত অর্থ উত্তোলনের সুযোগ নেই। কাগজে কলমে শুধু উদযাপন কমিটির আহবায়ক করা হলেও কিছুই জানেন না দাবি করেছেন কাউন্সিলর মাহবুবর রহমান। পৌর সভায় গভীর রাত পর্যন্ত আড্ডা ও অনৈতিক কার্যকলাপ সম্পর্কে জানতে চাইলে মেয়র বলেন, আওয়ামীলীগ আমাকে সৃষ্টি করেছে, আমি আওয়ামীলীগ সৃষ্টি করিনি। দলের কার্যালয় ও পৌর সভার কার্যালয় পাশাপাশি। অনেক সময় কার্যালয়েই সাংগঠনিক আলাপ আলোচনা করতে হয় তাই রাত হয়ে যায়। তবে এখানে কোন আড্ডার সুযোগ নেই।এছাড়া পৌর সভার ভবন গুলো রং করা ও পৌর এলাকায় ঠিকাদারি কাজের সাথে অংশীদার থাকার কথা অস্বিকার করে বলেন, মেয়র হওয়ার আগে পৌর সভায় ঠিকাদারি করেছি। এখন আর করিনা। মেয়র বলেন, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ থাকায় পৌরসভার উন্নয়ন বাধা গ্রস্ত হচ্ছে। অনৈতিক ভাবে সুবিধা না দেয়ায় পৌর সভার কিছু কাউন্সিলর আমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ করছে। এরআগেও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে শুনানিতে কোন প্রমান না পাওয়ায় প্রত্যাহার করেছে অভিযোগকারীরা।তবে অভিযোগ প্রত্যাহারের বিষয়ে কাউন্সিলররা বলেন, প্রত্যাহারের কোন সুযোগ নেই। মেয়র নিজের খেয়াল খুশি মত পরিষদ পরিচালনা করছেন। কাউন্সিলরদের মতামতের কোন দাম দিচ্ছে না। ফলে পৌর বাসী উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। তাদের দাবি নির্বাচনের আগে দেয়া প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে না। সরকারের দেয়া উন্নয়ন মুলক কাজ গুলোজনগনের দোড় গোড়ায় পৌছানো সম্ভব হচ্ছে না। তাতে সরকারের ভাবমুর্তি বিনষ্ট হচ্ছে।মেয়রের এসব কর্মকান্ড থেকে নলডাঙ্গা পৌর সভাকে বাঁচাতে মন্ত্রীপরিষদ সচিব, দূর্নীতি দমনকমিশন (দুদক) ঢাকার সচিব, রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার, নাটোর জেলা প্রশাসক, স্থানীয় সরকার বিভাগের রাজশাহী বিভাগীয় পরিচালক সহ আরো বেশকয়েকটি দপ্তওে তারা প্রতিকার চেয়ে আবেদন করেছেন। মেয়রের রোষানল থেকে বাঁচতে অভিযোগকারীরা নিজেদের পরিচয় পর্যন্ত গোপন রেখেছেন।