ঢাকা ১২:৪৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১১ জুলাই ২০২৫, ২৬ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
নির্বাচনে বিএনপির জয় নিশ্চিত জেনে কিছু দল পিআর পদ্ধতি চাইছে: আমিনুল হক নতুন ব্যাগ নিয়ে বিদ্যালয়ে হাজির ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের চমকে দিলেন ইউএনও আড়পাড়া ডিগ্রি কলেজে নিয়োগ বাণিজ্য ও স্বাক্ষর জালিয়াতি  গভর্নিং বডি গঠনে অনিয়মের অভিযোগ বিশেষ চুক্তিতে পছন্দের ঠিকাদারকে কাজ পাইয়ে দিতে রেটকোট ফাঁস করেছেন পিডি মঞ্জুরুল হক! ঢাকাই চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি অভিনেত্রী আনোয়ারার সঙ্গে দিয়ামনি ই-কমিউনিকেশনের সৌজন্য সাক্ষাৎ বাংলাদেশ শিশু হাসপাতালে মাসুদ রানা ও নান্নুর ভয়ংকর সিন্ডিকেট! ষড়যন্ত্রকারী যত চেষ্টাই করুক; সফল হবে না, জনগণের সরকারই আগামী নির্বাচনে প্রতিষ্ঠিত হবে – আমিনুল হক নির্দিষ্ট কোন অভিযোগ ছাড়াই ১৬ প্রতিষ্ঠান সিলগালা করল বেবিচক মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে ৭ মাস বয়সী দুই যজম কন্যা শিশুকে হত্যার অভিযোগ পালিয়ে থাকা আইন মন্ত্রণালয়ের সেই কর্মকর্তাকে বরখাস্ত

গাজীপুরে সাংবাদিকদের মানববন্ধন

নিজস্ব প্রতিবেদক-

গাজীপুর মহানগরের কাশিমপুর থানার সুরাবাড়ি গ্রামে জমি-সংক্রান্ত বিরোধের তথ্য সংগ্রহ করতে যাওয়া ও ঘটনাস্থলে অনুপস্থিত সাংবাদিকদের নামে কাশিমপুর থানার মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও সাংবাদিকদের ফাঁসানোয় জড়িত পুলিশ কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর ২০২৪) সকাল ১১টায় গাজীপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয় প্রাঙ্গনে গাজীপুরে কর্মরত সাংবাদিকেরা মানববন্ধন ও গাজীপুরের জেলা প্রশাসক বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করেছেন।

মানববন্ধন চলাকালে সংবাদ সংস্থা এনএনবি’র সম্পাদক জুলীয়াস চৌধুরীর সভাপতিত্ত্বে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তারা বলেন, তদন্ত না করে সাংবাদিকদের নামে মামলাটি গ্রহণ করায় পুলিশের পক্ষপাতিত্বের বিষয়টি স্পষ্ট হয়েছে। বক্তারা সাংবাদিকদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোয় জড়িত পুলিশ কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবি জানান।

মানববন্ধন থেকে সাংবাদিকদের নামে মিথ্যা মামলা অবিলম্বে সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাহার করার দাবি জানানো হয়। অন্যথায় কঠোর আন্দোলনের কর্মসূচি দেওয়া হবে বলে অল্টিমেটাম দেওয়া হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সুরাবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা দেওয়ান মোজাম্মেল হক একাধিক জাল দলিল তৈরি করে দখলকৃত জমি নিজের নামে নামজারি করিয়ে নেন। ওই জমিতে মো. মাহবুবুর রহমান বিশ্বাস পোল্ট্রি এন্ড ফিশ ফিডস্ লিমিটেডের নামে একটি বিতর্কিত প্রতিষ্ঠান চালু করেন। ওই জমির প্রকৃত মালিক হাবেল মিয়া ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা এই জালিয়াতি ঠেকাতে আদালতের দ্বারস্থ হন। আদালত যাচাই-বাছাই শেষে জমির জাল দলিল বাতিল করেন।

এরপর, হাবেল মিয়া গং জমি পুনরুদ্ধারের জন্য সহকারী কমিশনার (ভূমি) কার্যালয়ে মিস কেস দায়ের করেন (পিটিশন মোকদ্দমা নম্বর: ৫৪৮/২০২৪ এবং ৫৪৯/২০২৪)। ভূমি অফিস থেকে ২১ নভেম্বর ২০২৪ তারিখে সরেজমিনে তদন্তের নোটিশ প্রদান করা হয়।

ভূমি অফিসের এই তদন্ত কার্যক্রম উপলক্ষ্যে দেওয়ান মোজাম্মেল হক ও তাঁর সহযোগীরা ২১ নভেম্বর ২০২৪ সকালে জমিতে ও জমির আশেপাশে সশস্ত্র লোকজন জড়ো করেন। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কায় বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা তথ্য সংগ্রহ করতে ঘটনাস্থলে যান এবং তথ্যচিত্র ও ভিডিও ধারণ করে ফিরে আসেন।

পরের দিন, ২২ নভেম্বর ২০২৪ ভোরে সাংবাদিকরা জানতে পারেন, গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কাশিমপুর থানায় গভীর রাতে মাহবুব গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের ফ্রোজেন ফুড শাখার পারচেজ অফিসার মো. শামীম হোসেন বাদী হয়ে একটি মামলা [নম্বর: ২৪/২৪০ (55GNM)] দায়ের করেছেন। মামলায় দৈনিক জনবাণী পত্রিকার গাজীপুর প্রতিনিধি নাশিদ আহমেদ তুষারকে ১৫ নম্বর আসামিকরা হয়। দৈনিক জনবাণী পত্রিকা ও চ্যানেল এস টেলিভিশনের কাশিমপুর প্রতিনিধি ও কাশিমপুর থানা প্রেসক্লাবের কোষাধ্যক্ষ মো. জামাল আহাম্মেদ প্রধানিয়াকে ২৯ নম্বর আসামি করা হয়। দৈনিক স্বাধীন বাংলা পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার মো. হাসমত হাসুকে ৩০ নম্বর আসামি করা হয়। গাজীপুর জেলার স্থানীয় পত্রিকা দৈনিক কণ্ঠবানীর মফস্বল সম্পাদক নসির উদ্দিনকে করা হয় ৩২ নম্বর আসামি।

অদ্ভুত বিষয় হলো, দৈনিক বাংলাদেশ সমাচার সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার খোরশেদ আলমেকে ১৬ নম্বর আসামি করা হয়। তিনি ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন না। দৈনিক অগ্নিশিখা পত্রিকার কাশিমপুর প্রতিনিধি ও কাশিমপুর থানা প্রেসক্লাবের আইন বিষয়ক সম্পাদক বিপ্লব হোসেন ফারুক, তিনিও ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন না, তাকে ৩১ নম্বর আসামি করা হয়।

তরিঘড়ি করে কাজ সারতে সকল সাংবাদিকেরই নামের ভুল বানান, আংশিক নাম ও মোবাইল ফোন নম্বর উল্লেখ করে মামলাটি দায়ের করা হয়।

ট্যাগস
জনপ্রিয় সংবাদ

নির্বাচনে বিএনপির জয় নিশ্চিত জেনে কিছু দল পিআর পদ্ধতি চাইছে: আমিনুল হক

গাজীপুরে সাংবাদিকদের মানববন্ধন

আপডেট টাইম : ০১:৪৩:০৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক-

গাজীপুর মহানগরের কাশিমপুর থানার সুরাবাড়ি গ্রামে জমি-সংক্রান্ত বিরোধের তথ্য সংগ্রহ করতে যাওয়া ও ঘটনাস্থলে অনুপস্থিত সাংবাদিকদের নামে কাশিমপুর থানার মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও সাংবাদিকদের ফাঁসানোয় জড়িত পুলিশ কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর ২০২৪) সকাল ১১টায় গাজীপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয় প্রাঙ্গনে গাজীপুরে কর্মরত সাংবাদিকেরা মানববন্ধন ও গাজীপুরের জেলা প্রশাসক বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করেছেন।

মানববন্ধন চলাকালে সংবাদ সংস্থা এনএনবি’র সম্পাদক জুলীয়াস চৌধুরীর সভাপতিত্ত্বে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তারা বলেন, তদন্ত না করে সাংবাদিকদের নামে মামলাটি গ্রহণ করায় পুলিশের পক্ষপাতিত্বের বিষয়টি স্পষ্ট হয়েছে। বক্তারা সাংবাদিকদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোয় জড়িত পুলিশ কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবি জানান।

মানববন্ধন থেকে সাংবাদিকদের নামে মিথ্যা মামলা অবিলম্বে সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাহার করার দাবি জানানো হয়। অন্যথায় কঠোর আন্দোলনের কর্মসূচি দেওয়া হবে বলে অল্টিমেটাম দেওয়া হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সুরাবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা দেওয়ান মোজাম্মেল হক একাধিক জাল দলিল তৈরি করে দখলকৃত জমি নিজের নামে নামজারি করিয়ে নেন। ওই জমিতে মো. মাহবুবুর রহমান বিশ্বাস পোল্ট্রি এন্ড ফিশ ফিডস্ লিমিটেডের নামে একটি বিতর্কিত প্রতিষ্ঠান চালু করেন। ওই জমির প্রকৃত মালিক হাবেল মিয়া ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা এই জালিয়াতি ঠেকাতে আদালতের দ্বারস্থ হন। আদালত যাচাই-বাছাই শেষে জমির জাল দলিল বাতিল করেন।

এরপর, হাবেল মিয়া গং জমি পুনরুদ্ধারের জন্য সহকারী কমিশনার (ভূমি) কার্যালয়ে মিস কেস দায়ের করেন (পিটিশন মোকদ্দমা নম্বর: ৫৪৮/২০২৪ এবং ৫৪৯/২০২৪)। ভূমি অফিস থেকে ২১ নভেম্বর ২০২৪ তারিখে সরেজমিনে তদন্তের নোটিশ প্রদান করা হয়।

ভূমি অফিসের এই তদন্ত কার্যক্রম উপলক্ষ্যে দেওয়ান মোজাম্মেল হক ও তাঁর সহযোগীরা ২১ নভেম্বর ২০২৪ সকালে জমিতে ও জমির আশেপাশে সশস্ত্র লোকজন জড়ো করেন। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কায় বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা তথ্য সংগ্রহ করতে ঘটনাস্থলে যান এবং তথ্যচিত্র ও ভিডিও ধারণ করে ফিরে আসেন।

পরের দিন, ২২ নভেম্বর ২০২৪ ভোরে সাংবাদিকরা জানতে পারেন, গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কাশিমপুর থানায় গভীর রাতে মাহবুব গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের ফ্রোজেন ফুড শাখার পারচেজ অফিসার মো. শামীম হোসেন বাদী হয়ে একটি মামলা [নম্বর: ২৪/২৪০ (55GNM)] দায়ের করেছেন। মামলায় দৈনিক জনবাণী পত্রিকার গাজীপুর প্রতিনিধি নাশিদ আহমেদ তুষারকে ১৫ নম্বর আসামিকরা হয়। দৈনিক জনবাণী পত্রিকা ও চ্যানেল এস টেলিভিশনের কাশিমপুর প্রতিনিধি ও কাশিমপুর থানা প্রেসক্লাবের কোষাধ্যক্ষ মো. জামাল আহাম্মেদ প্রধানিয়াকে ২৯ নম্বর আসামি করা হয়। দৈনিক স্বাধীন বাংলা পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার মো. হাসমত হাসুকে ৩০ নম্বর আসামি করা হয়। গাজীপুর জেলার স্থানীয় পত্রিকা দৈনিক কণ্ঠবানীর মফস্বল সম্পাদক নসির উদ্দিনকে করা হয় ৩২ নম্বর আসামি।

অদ্ভুত বিষয় হলো, দৈনিক বাংলাদেশ সমাচার সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার খোরশেদ আলমেকে ১৬ নম্বর আসামি করা হয়। তিনি ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন না। দৈনিক অগ্নিশিখা পত্রিকার কাশিমপুর প্রতিনিধি ও কাশিমপুর থানা প্রেসক্লাবের আইন বিষয়ক সম্পাদক বিপ্লব হোসেন ফারুক, তিনিও ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন না, তাকে ৩১ নম্বর আসামি করা হয়।

তরিঘড়ি করে কাজ সারতে সকল সাংবাদিকেরই নামের ভুল বানান, আংশিক নাম ও মোবাইল ফোন নম্বর উল্লেখ করে মামলাটি দায়ের করা হয়।