কার্ডপ্রতি প্রতিজন ( ভিডব্লিউবি) উপকারী ভোগী চাল বিতরণে হতদরিদ্র নারীদের কাছ থেকে ৫০০ টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ইউনিয়ন পরিষদ সচিবের বিরুদ্ধে।
গত (২৬ শে) মে রোজ সোমবার বিকালে বিক্ষিপ্ত ভুক্তভোগীরা ও স্থানীয় জনগণ ৩ ঘন্টা ইউনিয়ন পরিষদ সচিবকে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে অবরুদ্ধ করে রাখে,
সংবাদ পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নেতৃত্বে সেনাবাহিনী ও পুলিশের সহযোগিতায় উক্ত সচিবকে উদ্ধার করেন।
অভিযুক্তকারী ইউ,পি সচিব পটুয়াখালী জেলার মির্জাগঞ্জ উপজেলার মাদবখালি ইউনিয়নে মাদবখালী ইউনিয়ন পরিষদে কর্মরত রয়েছে, তার নাম হচ্ছে হুমায়ুন কবির।
তিনি দীর্ঘ ১৫ বছর যাবত উক্ত ইউনিয়ন পরিষদে কর্মরত রয়েছেন।
ভুক্তভোগী ও স্থানীয় সূত্র জানা গেছে, মাধবখালী ইউনিয়ন পরিষদে দরিদ্র নারী উপকারভোগী (ভিডব্লিউবি) তালিকাভুক্ত ৩২৬ জন উপকারভোগী। সোমবার উপকারভোগীদের মাঝে ৫ মাসের চাল বিতরণ করা হয়। এ চাল বিতরন বাবদ স্থানীয় চৌকিদার ও দফাদারের মাধ্যমে প্রতিজন উপকারভোগীদের নিকট থেকে ৫০০ টাকা করে আদায় করেন সচিব হুমায়ুন কবির। সকল উপকারভোগীকে এ টাকা দিতে বাধ্য করেন তিনি। এতে প্রায় ১ লাখ ৫৭ হাজার ৫০০ টাকা উত্তোলন করা হয়। তবে জেসমিন বেগম নামে এক উপকারভোগীর নিকট থেকে ৫০০ টাকা নিয়েও তার কার্ড হারিয়ে গেছে অজুহাত দেখিয়ে চাল না দিলে সচিব হুমায়ুন কবিরের সাথে স্থানীয়দের বাক-বিতণ্ডা হয়। এতে ইউনিয়ন পরিষদ মাঠে লোকজন জড়ো হতে থাকে। চাল নিতে সরকারকে কোনো টাকা দিতে হয় না জানার পর উপস্থিত ভুক্তভোগীরা তাদের টাকা ফেরত ও সচিবের বিচার চেয়ে বিক্ষোভ করেন এবং সচিবকে একটি কক্ষে অবরুদ্ধ করে রাখেন।
ভুক্তভোগীরা বলেন, ৫ মাসের চাল দেওয়ার কথা বলে
স্থানীয় চৌকিদার ও দফাদার ৫০০ টাকা করে বাড়ি বাড়ি গিয়ে উত্তোলন করেন। টাকা না দিলে চাল দেওয়া হবে না ভয় দেখিয়ে টাকাগুলো উত্তোলন করেছেন তিনি।
মাধবখালি ইউনিয়ন পরিষদের দফাদার শফিকুল ইসলাম সোহাগ বলেন, প্রত্যেকে উপকারভোগীর নিকট থেকে সচিব হুমায়ুন কবির ৫০০ টাকা করে আমাদের উত্তোলন করতে বলেছেন। আমরা দুই দিন আগে বাড়ি বাড়ি গিয়ে টাকাগুলো উত্তোলন করেছি।
মাধবখালী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপির)সচিব মো.হুমায়ুন কবির বলেন,ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসক ও ইউপি সদস্য, চৌকিদার এবং দফাদার সবাই মিলে আলোচনার মাধ্যমে এ টাকা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এখানে আমার একক কোনো সিদ্ধান্ত নয়। আমি টাকা উত্তোলনও করিনি। স্থানীয় চৌকিদার ও দফাদার উপকারভোগীদের নিকট থেকে টাকা উত্তোলন করেছে।
মাধবখালী ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসক উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো.আমিনুল ইসলাম বলেন, টাকা উত্তোলনের বিষয়ে আমি কিছুই জানিনা। তবে যারা এ চাল পেতে টাকা দিয়েছেন সকল উপকারভোগী এ টাকা ফেরত পাবেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে খবর বাংলাদেশকে বলেন, আমি সংবাদ পেয়ে সন্ধ্যা ৭.৩০ মিনিটের সময় সেনাবাহিনী এবং পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হই বিক্ষিপ্ত ভুক্তভোগী ও স্থানীয়দের উক্ত ঘটনার বিচারের আশ্বাস দিয়ে উক্ত সচিব কে উদ্ধার করি। সকল উপকারভোগীদের মাঝে মঙ্গলবারের মধ্যে টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। টাকা উত্তোলনে জড়িতদের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।