মনপুরায় কিস্তির টাকা দেওয়া নিয়ে স্বামী স্ত্রী’র মধ্যে মারামারি অতঃপর জামাই শশুর বাড়ির মধ্যে সংঘর্ষ হয় । আহত ব্যক্তিদের নিয়ে মনপুরা হাসপাতালে যান তাঁদের স্বজনেরা। সেখানে গিয়েও ইমার্জেন্সি ওয়ার্ডের কর্তব্য রত ডক্টরের সামনে মারামারি করেন দুই গ্রুপ। এ সময় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে হাসপাতালে। (১৫ জুলাই) মঙ্গলবার বিকেল পোনে চারটায় ভোলার মনপুরা উপজেলায় ঘটেছে এমন ঘটনা। স্বামী স্ত্রী সহ দুই দফা মারামারির ঘটনায় উভয় পক্ষের ৩ জন আহত হয়েছেন।
আহত ব্যক্তিরা হলেন জামাল (৩০) পিং মৃত ইদ্রিস, গ্রাম: চর ফৈজউদ্দিন ৭ নং ওয়ার্ড , লিমা( ২৯) পিংঃ মোতাহার হোসেন গ্রাম, চর যতিন ৪ নং ওয়ার্ড, স্বামী জামাল, জুয়েল (২৫) পিংঃ রফিজল হক গ্রাম,চর ফৈজউদ্দিন ৭ নং ওয়ার্ড। সকলে মনপুরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চিকিৎসাধীন।
লিমা বলেন, জামাল আমার স্বামী আমার বিয়ে হয়েছে ১৩ বছর আগে। এই ১৩ বছরে আমার স্বামী আমাকে অনেকবার মারধর করেছে কিন্তু আমি কারো কাছে কোনদিন বিচার পাইনি। আমি আর বিচারের জন্য আশাও করিনা। আমার ৩ টা সন্তান। আমি আমার ৩ টা সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে সোনার শরীর ছাই করেছি। আমাকে আমার স্বামী মারধর করলে কখনো আমার শাশুড়ী তার ছেলেকে কিছু বলতো না। তিনি তার ছেলেকে আরও উৎসাহিত করতো আমাকে মারধর করার জন্য। গত সোমবার আমাদের কিস্তি ছিলো। আমার স্বামীর কাছে আমি টাকা চাইলে আমাকে ১৫ শত টাকা দেয় তখন আমি বলি এই টাকা দিয়ে আমি কি করবো। এর আগের কিস্তি আমি হাওলাত করে দিয়েছি এখন আমি এই টাকা কাকে দেবো। আর বাজার সদাই করবো কি দিয়ে। এই কথা বলে আমি ঘরে গিয়ে শুয়ে থাকি। হটাৎ করে আমার স্বামী এসে দরজা বন্ধ করে আমাকে এলোপাতাড়ি লাথি ঘুষি দিতে থাকে। আমি চিৎকার করলে ও আমাকে ধরতে কেউ আসেনি। মঙ্গলবার সকালে আমি আমার ভাইয়ের কাছে কল দিলে তাহারা গিয়ে আমাকে মনপুরা হাসপাতালে নিয়ে আসে। এর পর ইমার্জেন্সি ওয়ার্ডের ডক্টর বলে ভর্তি দিতে হলে ভোটার আইডি কার্ড লাগবে। আমার ভাই ভোটার আইডি কার্ড আনার জন্য আমার শশুর বাড়িতে গেলে আমার ভাইকে গাছের সাথে বেধে মারধর করে আমার স্বামী সহ অনেকে। তিনি আরও বলেন আমি এই সংসার করবো না।
জামাল বলেন, আমার স্ত্রীর সাথে পারিবারিক ভাবে একটি ঘটনা ঘটে। আমি ঘরে না থাকা অবস্থায় আমার শালা (রিয়াজ এবং আমার শশুর মোতাহার ) গিয়ে আমার বাসা থেকে আমার স্ত্রী কে হাসপাতাল নিয়ে আসলে। ডক্টর বলে রুগীকে ভর্তি করতে হলে ভোটার আইডি কার্ড লাগবে। এর পর আইডি কার্ডের জন্য রিয়াজ আমার বাসায় গেলে আমি আইডি কার্ড দিতে অসিকার করলে রিয়ায আমার বাসায় আমাকে মারধর করে এবং আইডি কার্ড না দিলে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিবে বলে হুমকি ধামকি দেয়। এর পর আমি থানায় অভিযোগ করতে গেলে ডিউটি অফিসার আমাকে চিকিৎসা নেওয়ার জন্য হাসপাতাল পাঠালে আমি ইমার্জেন্সি ওয়ার্ডে চিকিৎসা নিতে ছিলাম এই সময় ইমার্জেন্সি ওয়ার্ডের দায়িত্বে থাকা ডক্টরের সামনে আমাকে এলোপাতাড়ি মারধর করে রিয়াজ,মিজান,সুমন, সর্ব পিং মোতাহার এবং আমার ভায়রার ছেলে রনি, জহির মাঝি সহ প্রায় ২০-২৫ জন। তাহারা আমাকে এবং ডক্টর কে লোকজনের সামনে তুলে নিয়ে যাওয়ার হুমকি দেয়।আমাকে মারধরের ঘটনা ইমার্জেন্সি ওয়ার্ডের সিসিটিভি ক্যামেরায় রেকর্ড অবস্থায় আছে।
মনপুরা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা কবির সোহেল জানান, ১৫ তারিখ মঙ্গলবার বিকেল পোনে চারটায় মনপুরা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসকের উপস্থীতিতে দুই গ্রুপের মারামারিতে লিপ্ত হয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। যাহার সিসিটিভি ফুটেজ সংরক্ষিত আছে।
মনপুরা থানার অফিসার ইনচার্জ আহসান কবির বলেন,হাসপাতালের ঘটনায় আইন শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখতে নৌবাহিনী আমাদের কাছে ৮ জনকে হস্তান্তর করেন। এখন পর্যন্ত আমাদের কাছে লিখিত কোন অভিযোগ আসেনি। আমরা আগামী কালকে আটককৃত দের ৫৪ এ কোটে চালান করে দেবো।