ঢাকা ০৯:৫৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ অগাস্ট ২০২৫, ৩১ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
দেশব্যাপী প্রতিভা খোঁজে ‘নতুন কুঁড়ি’ ফিরিয়ে আনবে বিএনপি : আমিনুল হক মাগুরার শ্রীপুরে বালু ফেলে জমি দখলের অভিযোগ ! মহম্মদপুর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অসহায়ত্ব প্রকাশ মাগুরায় মাই টিভির সাংবাদিকের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন মির্জাগঞ্জে বেগম খালেদা জিয়ার জন্মদিনে মিলাদ ও দোয়া অনুষ্ঠিত মাগুরা বিএডিসি গোডাউন থেকে ডিলারের নামে অবৈধ সার বিক্রি স্থানীয়দের হাতে ধরা, তদন্তে দুর্নীতি-সিন্ডিকেট টেকসই শান্তি প্রতিষ্ঠায় সমবেদনা, কূটনীতি ও সংহতির সমন্বয়ের আহ্বান কফিল উদ্দিন আহমেদের আল বটর বাহিনী ধর্মকে বিক্রি করছে, বিএনপি বিশৃঙ্খলাকে প্রশ্রয় দেয় না: আমিনুল হক মাদ্রাসা শিক্ষা বৃত্তি বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ সুপারের বিরুদ্ধে শরীয়তপুরে অবৈধ পলিথিন বিরোধী অভিযান, ট্রাকভর্তি পলিথিন জব্দ

মাদ্রাসা শিক্ষা বৃত্তি বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ সুপারের বিরুদ্ধে

মোঃ বাবুল হোসেন, পঞ্চগড়-
পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার নাশির মণ্ডল হাট ছালেহীয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার ইউসুফ আলীর বিরুদ্ধে পারফরমেন্স বেজড গ্র্যান্টস ফর সেকেন্ডারি ইন্সটিটিউশনস (পিবিজিএসআই) শিক্ষা বৃত্তির টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।

পিবিজিএসআই হলো মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (DSHE) পরিচালিত একটি বিশেষ প্রকল্প, যার মাধ্যমে ভালো ফলাফল অর্জনকারী মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে অনুদান দেওয়া হয়। এর উদ্দেশ্য শিক্ষার মানোন্নয়ন, প্রতিযোগিতামূলক মনোভাব সৃষ্টির পাশাপাশি শিক্ষার পরিবেশ উন্নত করা।

এই প্রকল্পের আওতায় নাশির মণ্ডল হাট ছালেহীয়া দাখিল মাদ্রাসা ৫ লাখ টাকা পায়। এর মধ্যে ৪ লাখ টাকা মাদ্রাসার সংস্কারের জন্য এবং ১ লাখ টাকা গরিব ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের শিক্ষা বৃত্তি হিসেবে বিতরণের নির্দেশনা দেয় উপজেলা শিক্ষা অফিস।

অভিযোগ অনুযায়ী, সুপার ইউসুফ আলী মাদ্রাসার ৩ শতাধিক শিক্ষার্থীর মধ্যে ২০ জনকে বৃত্তির জন্য মনোনয়ন দেন। কিন্তু তাদের মধ্যে ৫ জন ছিলেন মাদ্রাসার ৩ শিক্ষকের ছেলে-মেয়ে ও ভাতিজা। প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে ৫ হাজার টাকা করে চেক দেওয়া হলেও, অভিযোগ রয়েছে—প্রতি শিক্ষার্থীর কাছ থেকে আড়াই হাজার টাকা করে ফেরত নিয়েছেন সুপার। ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর তিনি টাকা ফেরত দেন।

এক শিক্ষার্থী জানান, “ব্যাংক থেকে ৫ হাজার টাকা তোলার পর সুপার হুজুরকে আড়াই হাজার টাকা দিতে হয়েছে।”

আরেকজন বলেন, “বোদা উপজেলা পরিষদে গিয়ে আমরা ৫ হাজার টাকার চেক পাই। কিন্তু টাকা তোলার পর সুপার ও সালাম হুজুর বললেন, ‘যা চেয়েছিলাম, তা দাও।’ বাধ্য হয়ে আড়াই হাজার টাকা দিয়ে দেই।”

অভিভাবক রুবেল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, “আমার মেয়ে রুবিনা আক্তারের কাছ থেকেও একইভাবে টাকা নিয়েছে সুপার।”

এছাড়া শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, মাদ্রাসায় চারটার পরিবর্তে প্রায়ই তিনটার সময় ছুটি দেওয়া হয়।

মাদ্রাসার সুপার ইউসুফ আলী অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “শিক্ষা বৃত্তির টাকা আত্মসাতের অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও অসত্য। আমি কারও কাছ থেকে এক টাকাও নেইনি। শিক্ষার্থীরা টাকা ব্যাংক থেকে তুলে নিজেরাই খরচ করেছে। হয়তো কেউ ভুল বোঝাবুঝি বা অসত্য তথ্য দিয়েছে।

তবে স্বজনপ্রীতির বিষয়টি স্বীকার করে সুপার বলেন, “হ্যাঁ, নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের মধ্যে আমার সহকর্মী শিক্ষকদের ছেলে-মেয়ে ও ভাতিজা রয়েছে। তবে তারা সবাই যোগ্য ও মেধাবী হওয়ায় বৃত্তির জন্য নির্বাচিত হয়েছে।”

মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি নাজিমুল আহসান প্রধান জানান, “অভিভাবকরা মোবাইলে অভিযোগ করেছেন। আমি উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে জানালে তিনি তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন। কমিটি ৭ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেবে। সত্যতা পাওয়া গেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

বোদা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আইবুলন ইসলাম বলেন, “প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পরই ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করা যাবে। যদি প্রমাণ পাওয়া যায়, সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ট্যাগস
জনপ্রিয় সংবাদ

দেশব্যাপী প্রতিভা খোঁজে ‘নতুন কুঁড়ি’ ফিরিয়ে আনবে বিএনপি : আমিনুল হক

মাদ্রাসা শিক্ষা বৃত্তি বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ সুপারের বিরুদ্ধে

আপডেট টাইম : ০৩:৩৫:০১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ অগাস্ট ২০২৫

মোঃ বাবুল হোসেন, পঞ্চগড়-
পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার নাশির মণ্ডল হাট ছালেহীয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার ইউসুফ আলীর বিরুদ্ধে পারফরমেন্স বেজড গ্র্যান্টস ফর সেকেন্ডারি ইন্সটিটিউশনস (পিবিজিএসআই) শিক্ষা বৃত্তির টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।

পিবিজিএসআই হলো মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (DSHE) পরিচালিত একটি বিশেষ প্রকল্প, যার মাধ্যমে ভালো ফলাফল অর্জনকারী মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে অনুদান দেওয়া হয়। এর উদ্দেশ্য শিক্ষার মানোন্নয়ন, প্রতিযোগিতামূলক মনোভাব সৃষ্টির পাশাপাশি শিক্ষার পরিবেশ উন্নত করা।

এই প্রকল্পের আওতায় নাশির মণ্ডল হাট ছালেহীয়া দাখিল মাদ্রাসা ৫ লাখ টাকা পায়। এর মধ্যে ৪ লাখ টাকা মাদ্রাসার সংস্কারের জন্য এবং ১ লাখ টাকা গরিব ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের শিক্ষা বৃত্তি হিসেবে বিতরণের নির্দেশনা দেয় উপজেলা শিক্ষা অফিস।

অভিযোগ অনুযায়ী, সুপার ইউসুফ আলী মাদ্রাসার ৩ শতাধিক শিক্ষার্থীর মধ্যে ২০ জনকে বৃত্তির জন্য মনোনয়ন দেন। কিন্তু তাদের মধ্যে ৫ জন ছিলেন মাদ্রাসার ৩ শিক্ষকের ছেলে-মেয়ে ও ভাতিজা। প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে ৫ হাজার টাকা করে চেক দেওয়া হলেও, অভিযোগ রয়েছে—প্রতি শিক্ষার্থীর কাছ থেকে আড়াই হাজার টাকা করে ফেরত নিয়েছেন সুপার। ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর তিনি টাকা ফেরত দেন।

এক শিক্ষার্থী জানান, “ব্যাংক থেকে ৫ হাজার টাকা তোলার পর সুপার হুজুরকে আড়াই হাজার টাকা দিতে হয়েছে।”

আরেকজন বলেন, “বোদা উপজেলা পরিষদে গিয়ে আমরা ৫ হাজার টাকার চেক পাই। কিন্তু টাকা তোলার পর সুপার ও সালাম হুজুর বললেন, ‘যা চেয়েছিলাম, তা দাও।’ বাধ্য হয়ে আড়াই হাজার টাকা দিয়ে দেই।”

অভিভাবক রুবেল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, “আমার মেয়ে রুবিনা আক্তারের কাছ থেকেও একইভাবে টাকা নিয়েছে সুপার।”

এছাড়া শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, মাদ্রাসায় চারটার পরিবর্তে প্রায়ই তিনটার সময় ছুটি দেওয়া হয়।

মাদ্রাসার সুপার ইউসুফ আলী অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “শিক্ষা বৃত্তির টাকা আত্মসাতের অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও অসত্য। আমি কারও কাছ থেকে এক টাকাও নেইনি। শিক্ষার্থীরা টাকা ব্যাংক থেকে তুলে নিজেরাই খরচ করেছে। হয়তো কেউ ভুল বোঝাবুঝি বা অসত্য তথ্য দিয়েছে।

তবে স্বজনপ্রীতির বিষয়টি স্বীকার করে সুপার বলেন, “হ্যাঁ, নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের মধ্যে আমার সহকর্মী শিক্ষকদের ছেলে-মেয়ে ও ভাতিজা রয়েছে। তবে তারা সবাই যোগ্য ও মেধাবী হওয়ায় বৃত্তির জন্য নির্বাচিত হয়েছে।”

মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি নাজিমুল আহসান প্রধান জানান, “অভিভাবকরা মোবাইলে অভিযোগ করেছেন। আমি উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে জানালে তিনি তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন। কমিটি ৭ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেবে। সত্যতা পাওয়া গেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

বোদা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আইবুলন ইসলাম বলেন, “প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পরই ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করা যাবে। যদি প্রমাণ পাওয়া যায়, সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”