মাহামুদুন নবী (স্টাফ রিপোর্টার) :
গত ৫ বছরে ইটভাটা থেকেই মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার ৮টি ইউনিয়ন পরিষদ ৯০ লাখ টাকা কর বঞ্চিত হয়েছে। সম্প্রতি বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের উন্মুক্ত বাজেট সভায় বিষয়টি উঠে আসে।
সম্প্রতি মহম্মদপুর সদর ইউনিয়ন পরিষদের উন্মুক্ত বাজেট সভায় চেয়ারম্যান ইকবাল আক্তার কাফুর উজ্জল বলেন, আমরা ইটভাটা থেকে কোন কর পাইনা। বিভিন্ন এনজিও কর দেয় না। তাদেরকে নোটিশ দেওয়া হয়েছে। এগুলো আদায় করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা আমাদের নিতে হবে।
মহম্মদপুর সদর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব বেনজির আহমেদ বলেন, এ ইউনিয়নে ১০টি ইটভাটা আছে। কোনটিরই ৪০ লাখ টাকার কম মুলধন নেই। এস আর ও নম্বর ৩০৬ আইন ২০১৩ স্থানীয় সরকার আইন ২০০৯ এর ধারা ৬৬ এর প্রদত্ত ক্ষমতাবলে সরকার ইউনিয়ন পরিষদের জন্য আদর্শ তফসিল কর প্রণয়ন করে। সে হিসেবে যদি কোন ইটভাটা বা অন্যান্য সিরামিক প্রস্তুতকারকের মুলধন ৪০ লাখ টাকার বেশি হলে ৫০ হাজার টাকা কর দিতে হবে। আমি চার বছরের বেশি সময় এই ইউনিয়ন পরিষদে দায়িত্ব পালন করছি। আমি থাকাকালীন কোন ইটভাটার কর পাইনি।
চেয়ারম্যান ও সচিবদের থেকে জানা যায়, মহম্মদপুর উপজেলার বাবুখালী ইউনিয়নে ৪টি, বিনোদপুর ইউনিয়নে ৯টি, দীঘা ইউনিয়নে ৩টি, রাজাপুর ইউনিয়নে ৩টি, বালিদিয়া ইউনিয়নে ২টি, মহম্মদপুর ইউনিয়নে ১০টি, পলাশবাড়িয়া ইউনিয়নে ৩টি, নহাটা ইউনিয়নে ২টি ইটভাটা রয়েছে। প্রত্যেক ভাটায় কমপক্ষে ৪০ লাখ টাকার বেশি মুলধন রয়েছে। গত ৫ বছরের হিসেবে কোন ইটভাটাই কর দেয়নি। এতে ৯০লাখ টাকা কর বঞ্চিত হয়েছে ৮টি ইউনিয়ন পরিষদ।
সম্প্রতি বদলি হওয়া রাজাপুর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব শেখ মো. আলমগীর বলেন, আমি রাজাপুর ইউনিয়ন পরিষদে ৩ বৎসরসহ নহাটা ইউনিয়ন পরিষদেও অনেকদিন সচিবের দায়িত্ব পালন করেছি। কোন ইউনিয়ন পরিষদে ইটভাটা থেকে কর আদায় করা যায়নি।
দীঘা ইউনিয়ন পরিষদ ও বিনোদপুর ইউনিয়ন পরিষদের সচিবরাও কোন ইটভাটা থেকে গত ৫ বছরে ইউনিয়ন পরিষদের করতে পারেনি বলে জানিয়েছেন।
বিনোদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শিকদার মিজানুর রহমান বলেন, তাদের ইউনিয়ন পরিষদ কর দেওয়া উচিৎ। এই কর পেলে ইউনিয়নের আরো বেশি উন্নয়ন করা যেত।
বাবুখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মীর মো. সাজ্জাদ আলী বলেন, তাদের কাছে বিভিন্ন সময় নোটিশ পাঠাইছি। তারা বলে যে, আমরা তো ভ্যাট দেই । তবে তারা বোঝে না সরকারি ভ্যাট আর ইউনিয়ন পরিষদ কর এক না।
পলাশবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সৈয়দ সিকান্দার আলী বলেন, তারা তো ইউনিয়ন পরিষদের কর দেয়ই না। তাদের কাছে রাস্তার সংস্কারের জন্য কিছু ইট চাইলেও দেয় না।
এ বিষয়ে ইটভাটার মালিক পক্ষের একজন মহম্মদপুর সদরের শরীফ ব্রিকসের মালিক শরীফ জানান, এ পর্যন্ত আমাদের ইউনিয়ন পরিষদের কর দেওয়া হয়নি। লাগেনি। তবে কর ভ্যাট ট্যাক্স এগুলো তো দেওয়া লাগবে। দিতে হবে এ বিষয়ে আমরা তেমন কিছু জানি না।
মহম্মদপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার রামানন্দ পাল বলেন, ইটভাটাগুলো ইউনিয়ন পরিষদের কর দেয়না জানলাম। তাদেরকে করের আওতায় আনার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।