ঢাকা ০২:৫১ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
সরকারি নথি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে: ভূমি উপদেষ্টা সিরাজদিখানে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আহত ও শহীদদের স্মরণে দোয়া মাহফিল মুন্সীগঞ্জে খালেদা জিয়ার রোগ মুক্তি ও সাবেক নেত্রীবৃন্দের স্বরণে দোয়া ও আলোচনা সভা টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে মুক্তিযোদ্ধা দলের আহ্বায়ক কমিটি গঠন গাজীপুরে চাঁদার দাবিতে বাড়ি ঘর ভাংচুরের অভিযোগ গোপালগঞ্জের হালিমের কথায় চলছে নন্দী পাড়া ভুমি অফিস গাজীপুরে StepUp অ্যাপ- এর প্রশিক্ষণ এবং কর্মশালা অনুষ্ঠিত আদমদীঘিতে মাদকসেবনের দায়ে চার জনকে ভ্রাম্যমাণ দিল ইউএনও আগরতলায় হাইকমিশনে হামলায় বাংলাদেশের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া গাজীপুরে অনুর্ধ ১৭ ফুটবল খেলায় বিকেএসপি ২-১ গোলে হারালো গাজীপুরকে
চেয়ারম্যান ও সেনাবাহিনীর পদক্ষেপ চান কর্মকর্তা ও কর্মচারিরা:

বিআইডব্লিউটিএতে সিবিএ ব্যানারে মাজহারুলের দাদাগিরি!

বিশেষ প্রতিনিধি :
গত ১৬ বছর যাবত আওয়ামী লীগের লোক পরিচয় দিয়ে দাপট দেখাতেন। ছিলেন জাতীয় শ্রমিক লীগ অনুমোদিত সংগঠনের সহ-সভাপতি। সরকার বদলের পর ভোলপাল্টে শ্রমিক দলের পরিচয় দিচ্ছেন। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) এর কালেক্টিভ বার্গেনিং এজেন্ট (সিবিএ) কার্যালয় দখল করেছেন বিআইডব্লিউটিএ’র অফিস সহকারি পদে কর্মরত মাজহারুল ইসলাম। তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের সময় ছিলেন সহ-সভাপতি। এখন সভাপতি। তার নেতৃত্বে শ্রমিকদলের অন্যান্যদের নিয়ে তিনি কার্যালয় দখল করেছেন।
বিআইডব্লিউটিএর প্রবিধানমালা অনুযায়ী কোনো কর্মচারী সরকারি কোনো রাজনৈতিক দল করতে পারেন না। কিন্তু মাজহারুল ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে এতোবছর শ্রমিক লীগের কমিটিতে ছিলেন। রাতারাতি ভোলপাল্টে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের নেতা হয়ে সিবিএ কার্যালয় দখলে নেতৃত্ব দিয়েছেন বলে অভিযোগ সংস্থাটির কর্মচারিদের। সংস্থাটির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আরো অভিযোগ, বিআইডব্লিউটিএ এমপ্লয়ীজ ইউনিয়ন (রেজিঃ নং: বি- ১৪৪০) নির্দলীয় ট্রেড ইউনিয়ন থাকা অবস্থায় শ্রমিকলীগ নেতা মাজহারুল ইসলামসহ তার সহযোগিরা ২০১৫ সালে সিবিএ নির্বাচনের ঠিক আগের দিন মামলা করে নির্বাচন বন্ধ করে দেন এবং নির্বাচনের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করান।
পরে তারা নির্দলীয় ট্রেড ইউনিয়ন এর পরিবর্তে বিআইডব্লিউটিএ এর অনুকুলে জাতীয় শ্রমিক লীগের ৩৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি অনুমোদন করিয়ে সিবিএ দখল করেন। জাতীয় শ্রমিক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারন সম্পাদক মো. সিরাজুল ইসলাম স্বাক্ষরিত কমিটির মাধ্যমে দলীয় প্রভাব বিস্তার করেন বিআইডব্লিউটিএতে।
সে সময়ে শ্রমিকলীগের কমিটিতে মাজহারুল ইসলাম ১ নম্বর সহ সভাপতি এবং তার আপন ছোট ভাই সাবেক ছাত্রলীগ নেতা জাহিদুল ইসলামকে অর্থসম্পাদক করা হয়। ২০১৫ সালে মাজহারুল ইসলাম চাঁদপুর অফিসের নেতা ছিলেন। শ্রমিক লীগের দাপট দেখিয়ে তিনি ও তার ভাই এতো দিন নেতৃত্ব দিয়েছেন।
গত ৫ আগস্টের পরে পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে জাতীয় শ্রমিক লীগের অন্তর্ভূক্ত বি-১৪৪০ ইউনিয়নের নম্বরটি নিয়ে এবং শ্রমিক দলের কিছু বহিরাগত লোক নিয়ে বিআইডব্লিউটিএ বি-২১৭৬ (সিবিএ) কার্যালয়টি তালা ভেঙে দখল করে নিয়ে বিভিন্ন শাখা কমিটি গঠনের নামে বাণিজ্য শুরু করেন। তার এই কাজে কিছু আওয়ামীলীগপন্থি কর্মকর্তা কর্মচারি নিজেদেরকে বাঁচানোর জন্য তাকে সহযোগিতা করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
তিনি সিবিএ’র অফিসে বসে কর্মচারীদের বদলির লিস্ট তৈরি করে বিআইডব্লিউটিএর বিভাগীয় প্রধান এবং কর্তৃপক্ষের কাছে দিয়ে জোর করে কর্মচারীদের বদলি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মাজহারুল ইসলামের মোবাইল ফোন ফোন করলেও তিনি ফোন ধরেননি আর এসএমএস পাঠিয়েও কোন জবাব পাওয়া যায়নি।
কর্মচারীদের অভিযোগ, গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী পদ ছেড়ে পালানোর পরপরই বিএনপি সমর্থিত কর্মচারীরা মতিঝিলের বিআইডব্লিউটিএ ভবনে হামলা চালান। পরে কর্মচারী ইউনিয়নের শীর্ষদের ঢাকার বাইরে বদলি করা হয়।
শ্রম আইন এবং শ্রম অধিদফতর কর্তৃক কোন বৈধ কাগজপত্র না নিয়ে গত ৫ আগস্ট জাতীয় শ্রমিকলীগের অন্তর্ভূক্ত একমাত্র সংগঠন বিআইডব্লিউটিএ এমপ্লয়ীজ ইউনিয়ন (রেজিঃ নং: বি-১৪৪০) এর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি দাবি করে মাজহারুল ইসলাম বহিরাগত লোকজনকে নিয়ে কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই তালা ভেঙ্গে বিআইডব্লিউটিএ শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন (রেজিঃ নং- ২১৭৬) সিবিএ কার্যালয় দখল করেন।
অথচ আপিল বিভাগের রায় অনুযায়ী সিবিএ দখলে নেওয়া বিআইডব্লিউটিএ এমপ্লয়ীজ ইউনিয়ন (রেজিঃ নং: বি-১৪৪০) এর বৈধ কোন নেতৃত্ব নেই। সরকারি সব প্রতিষ্ঠানে ট্রেড ইউনিয়ন এবং সিবিএ শ্রম অধিদফতর কর্তৃক পরিচালিত হয়ে থাকে।
সিবিএ নেতা ও স্বঘোষিত সভাপতি মাজহারুলের নিয়োগ বাণিজ্য বন্ধ ও সিবিএ কার্যালয় দখলমুক্ত করার জন্য বিআইডব্লিউটিএর কর্মকর্তা ও কর্মচারিরা প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান ও সেনাবাহিনীর পদক্ষেপ কামনা করেছেন।

ট্যাগস
জনপ্রিয় সংবাদ

সরকারি নথি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে: ভূমি উপদেষ্টা

চেয়ারম্যান ও সেনাবাহিনীর পদক্ষেপ চান কর্মকর্তা ও কর্মচারিরা:

বিআইডব্লিউটিএতে সিবিএ ব্যানারে মাজহারুলের দাদাগিরি!

আপডেট টাইম : ০৬:০৭:০৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪

বিশেষ প্রতিনিধি :
গত ১৬ বছর যাবত আওয়ামী লীগের লোক পরিচয় দিয়ে দাপট দেখাতেন। ছিলেন জাতীয় শ্রমিক লীগ অনুমোদিত সংগঠনের সহ-সভাপতি। সরকার বদলের পর ভোলপাল্টে শ্রমিক দলের পরিচয় দিচ্ছেন। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) এর কালেক্টিভ বার্গেনিং এজেন্ট (সিবিএ) কার্যালয় দখল করেছেন বিআইডব্লিউটিএ’র অফিস সহকারি পদে কর্মরত মাজহারুল ইসলাম। তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের সময় ছিলেন সহ-সভাপতি। এখন সভাপতি। তার নেতৃত্বে শ্রমিকদলের অন্যান্যদের নিয়ে তিনি কার্যালয় দখল করেছেন।
বিআইডব্লিউটিএর প্রবিধানমালা অনুযায়ী কোনো কর্মচারী সরকারি কোনো রাজনৈতিক দল করতে পারেন না। কিন্তু মাজহারুল ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে এতোবছর শ্রমিক লীগের কমিটিতে ছিলেন। রাতারাতি ভোলপাল্টে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের নেতা হয়ে সিবিএ কার্যালয় দখলে নেতৃত্ব দিয়েছেন বলে অভিযোগ সংস্থাটির কর্মচারিদের। সংস্থাটির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আরো অভিযোগ, বিআইডব্লিউটিএ এমপ্লয়ীজ ইউনিয়ন (রেজিঃ নং: বি- ১৪৪০) নির্দলীয় ট্রেড ইউনিয়ন থাকা অবস্থায় শ্রমিকলীগ নেতা মাজহারুল ইসলামসহ তার সহযোগিরা ২০১৫ সালে সিবিএ নির্বাচনের ঠিক আগের দিন মামলা করে নির্বাচন বন্ধ করে দেন এবং নির্বাচনের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করান।
পরে তারা নির্দলীয় ট্রেড ইউনিয়ন এর পরিবর্তে বিআইডব্লিউটিএ এর অনুকুলে জাতীয় শ্রমিক লীগের ৩৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি অনুমোদন করিয়ে সিবিএ দখল করেন। জাতীয় শ্রমিক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারন সম্পাদক মো. সিরাজুল ইসলাম স্বাক্ষরিত কমিটির মাধ্যমে দলীয় প্রভাব বিস্তার করেন বিআইডব্লিউটিএতে।
সে সময়ে শ্রমিকলীগের কমিটিতে মাজহারুল ইসলাম ১ নম্বর সহ সভাপতি এবং তার আপন ছোট ভাই সাবেক ছাত্রলীগ নেতা জাহিদুল ইসলামকে অর্থসম্পাদক করা হয়। ২০১৫ সালে মাজহারুল ইসলাম চাঁদপুর অফিসের নেতা ছিলেন। শ্রমিক লীগের দাপট দেখিয়ে তিনি ও তার ভাই এতো দিন নেতৃত্ব দিয়েছেন।
গত ৫ আগস্টের পরে পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে জাতীয় শ্রমিক লীগের অন্তর্ভূক্ত বি-১৪৪০ ইউনিয়নের নম্বরটি নিয়ে এবং শ্রমিক দলের কিছু বহিরাগত লোক নিয়ে বিআইডব্লিউটিএ বি-২১৭৬ (সিবিএ) কার্যালয়টি তালা ভেঙে দখল করে নিয়ে বিভিন্ন শাখা কমিটি গঠনের নামে বাণিজ্য শুরু করেন। তার এই কাজে কিছু আওয়ামীলীগপন্থি কর্মকর্তা কর্মচারি নিজেদেরকে বাঁচানোর জন্য তাকে সহযোগিতা করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
তিনি সিবিএ’র অফিসে বসে কর্মচারীদের বদলির লিস্ট তৈরি করে বিআইডব্লিউটিএর বিভাগীয় প্রধান এবং কর্তৃপক্ষের কাছে দিয়ে জোর করে কর্মচারীদের বদলি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মাজহারুল ইসলামের মোবাইল ফোন ফোন করলেও তিনি ফোন ধরেননি আর এসএমএস পাঠিয়েও কোন জবাব পাওয়া যায়নি।
কর্মচারীদের অভিযোগ, গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী পদ ছেড়ে পালানোর পরপরই বিএনপি সমর্থিত কর্মচারীরা মতিঝিলের বিআইডব্লিউটিএ ভবনে হামলা চালান। পরে কর্মচারী ইউনিয়নের শীর্ষদের ঢাকার বাইরে বদলি করা হয়।
শ্রম আইন এবং শ্রম অধিদফতর কর্তৃক কোন বৈধ কাগজপত্র না নিয়ে গত ৫ আগস্ট জাতীয় শ্রমিকলীগের অন্তর্ভূক্ত একমাত্র সংগঠন বিআইডব্লিউটিএ এমপ্লয়ীজ ইউনিয়ন (রেজিঃ নং: বি-১৪৪০) এর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি দাবি করে মাজহারুল ইসলাম বহিরাগত লোকজনকে নিয়ে কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই তালা ভেঙ্গে বিআইডব্লিউটিএ শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন (রেজিঃ নং- ২১৭৬) সিবিএ কার্যালয় দখল করেন।
অথচ আপিল বিভাগের রায় অনুযায়ী সিবিএ দখলে নেওয়া বিআইডব্লিউটিএ এমপ্লয়ীজ ইউনিয়ন (রেজিঃ নং: বি-১৪৪০) এর বৈধ কোন নেতৃত্ব নেই। সরকারি সব প্রতিষ্ঠানে ট্রেড ইউনিয়ন এবং সিবিএ শ্রম অধিদফতর কর্তৃক পরিচালিত হয়ে থাকে।
সিবিএ নেতা ও স্বঘোষিত সভাপতি মাজহারুলের নিয়োগ বাণিজ্য বন্ধ ও সিবিএ কার্যালয় দখলমুক্ত করার জন্য বিআইডব্লিউটিএর কর্মকর্তা ও কর্মচারিরা প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান ও সেনাবাহিনীর পদক্ষেপ কামনা করেছেন।