মাগুরা মহম্মদপুর উপজেলার ”লক্ষীপুর উদয় সংঘের ” ১১ শতক জমি গোপনে বিক্রি করে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে ওই সংগঠনের সভাপতি প্রশান্ত কুমার ঠাকুর ও সাধারন সম্পাদক টিপু সুলতান সহ কয়েকজন সদস্যদের বিরুদ্ধে। সংঘের জায়গায় এখন গোয়াল ঘরে পরিনত হয়েছে। লক্ষীপুর উদয়ন সংঘ এর বর্তমান কমিটির বিরুদ্ধে জালিয়াতি ও জমি বিক্রয় করে অর্থ আত্মসাতের বিষয়ে মহম্মদপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন লক্ষীপুর গ্রাসবাসী। অভিযোগে একটি রেজিষ্ট্রেশনভূক্ত সংগঠনের জমি বেআইনী ভাবে গোপনে বিক্রয়কারীদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবি করেন। সেই সাথে ক্লাবের ফান্ডের টাকায় কেনা জমি ফেরত চান তারা।
কয়েকজন সদস্য জানান, মাত্র ৫/১০ টাকা চাঁদা দিয়ে দাড় করানো ”লক্ষীপুর উদয়ন সংঘ ” কে একটি প্রাতিষ্ঠানিক রুপ দিতে ১৯৯০ সালে লক্ষীপুর রাস্তার সাথে ১১ শতাংশ জমি ক্রয় করা হয় এবং সংগঠনের কার্যক্রম পরিচালনা শুরু করা হয়। যার বর্তমান সদস্য সংখ্যা রয়েছে ৪৫ জন। আজ ৩৫ বছর পর সংগঠনের সভাপতি প্রশান্ত কুমার ঠাকুর , সাধারন সম্পাদক গুটি কয়েক অসাধু সদস্য সাথে নিয়ে জমিটি বিক্রি করে ৮ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। যেখানে একটি রেজিষ্ট্রেশনকৃত সম্পত্তি বিক্রি করার কোন আইন নেই সেখানে গায়ের জোরে সকলকে অবহিত না করে আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে গোপনে ওই এলাকার মৃত রাশেদ শেখের ছেলে মোক্তার হোসেন এর নিকট জমি বিক্রি করেছেন সভাপতি -সম্পাদকসহ কয়েকজন। একটি রেজিষ্ট্রেশেনভুক্ত সংঘ এখন একটি গোয়াল ঘরে পরিনত হয়েছে। এমন জঘন্য কাজের জন্য জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা ও শাস্তির জোর দাবি করছি।
মহম্মদপুর থানায় লক্ষীপুরবাসীর পক্ষ থেকে অভিযোগ দায়েরকৃত সৈয়দ আলমগীর হোসেন জানান, চলতি বছরে সকল সদস্যদের ব্যাতিত মাত্র গুটি কয়েক সদস্যদের স্বাক্ষরে জাল রেজুলেশন করে গোপনে জমিটি বিক্রয় করে দেয়া হয়। এছাড়া জমির দলিলে ৫ লক্ষ টাকা বিক্রয় দেখানো হলেও মোট ১০ লক্ষ টাকা বিক্রয় করে বাকি ৫ লক্ষ টাকা আত্মসাত করেছেন সভাপতি এবং সাধারন সম্পাদক। এছাড়া প্রতিষ্ঠানের নামে থাকা বিক্রয় করা জমিটি রেকর্ডে কবরস্থান উল্লেখ থাকলেও সেটাকে ধানি জমি হিসেবে রেজিষ্ট্রি সম্পন্ন করা হয়। ১৫ ই জানুয়ারী জাল রেজুলেষনের মাধ্যমে নিজেদের আম মোক্তার ঘোষনা দিয়ে চলতি বছরের ৯ ই এপ্রিল ২০২৫ ইং তারিখে সভাপতি সাধারন সম্পাদক জমি বিক্রয়ের দলিলে বিক্রেতা হিসেবে স্বাক্ষর করেন । তিনি জমি বিক্রয়ের অবৈধ প্রক্রিয়া বাতিল, সংঘের জমি ফেরৎসহ বেআইনি কাজের সাথে জড়িত থাকা সভাপতি প্রশান্ত কুমার ঠাকুর ও সাধারন সম্পাদক টিপু সুলতানের কমিটি বাতিলপূর্বক শাস্তির জোর দাবি করেন।
জমির ক্রেতা মো: মুক্তার হোসেন বলেন, আমি জমি ক্রয় করেছি ঠিকই তবে ৫ লক্ষ টাকায় না । আমার কাছ থেকে সভাপতি সাধারন সম্পাদক মোট ৭ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা নিয়েছেন জমি বিক্রয় বাবদ।
”লক্ষীপুর উদয়ন সংঘ”এর সভাপতি প্রশান্ত কুমার ঠাকুর বলেন, জমিটি বিক্রয়ের পরে আমি জানতে পেরেছি সমাজকল্যাণমুলক রেজিষ্ট্রিভুক্ত একটি ক্লাবের জমি বিক্রয় করা ঠিক না বা আইনি জটিলতা আছে। আমি জমিটি বিক্রয় করে ভুল করেছি এটা আমার মোটেও উচিৎ হয়নি । তবে সংগঠন চাইলে জমিটি ফিরিয়ে আনার বিষয়ে সকল সদস্যকেই তিনি সাহায্য করবেন। সংগঠনের সাধারন সম্পাদক টিপু সুলতান জমি বিক্রয়ের বিষয়টি নিজমুখে স্বিকার করেন।
মহম্মদপুর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো: আব্দুর রব বলেন, রেজিষ্ট্রেশনভুক্ত লক্ষীপুর উদয়ন সংঘের জমি বিক্রয়ের বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি । জেলা কর্মকর্তার নির্দেশক্রমে তদন্ত চলমান রয়েছে । এ বিষয়ে বিভাগীয়ভাবে খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
শিরোনাম :
মহম্মদপুরে ক্লাবের জায়গায় এখন গরুর গোয়াল!
-
মাহামুদুন নবী :
- আপডেট টাইম : ০২:৩৩:৩৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ জুলাই ২০২৫
- ৭৭৭ বার পড়া হয়েছে
ট্যাগস
জনপ্রিয় সংবাদ