অনিয়মের অভিযোগে নাকোল রাইচরণ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বরখাস্ত আর্থিক অনিয়ম এবং বিদ্যালয় পরিচালনায় ব্যর্থতার অভিযোগে। মাগুরার নাকোল রাইচরণ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শেখ আবদুল মান্নানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। একইসঙ্গে বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মুনীর হোসেনকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
৩ আগস্ট রবিবার বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সাধারণ সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জানান বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের দায়িত্বপ্রাপ্ত সভাপতি মির্জা ওয়ালিদ হোসাইন।
বিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ অডিট কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে শেখ আবদুল মান্নানের বিরুদ্ধে একাধিক গুরুতর অভিযোগ ওঠে। এর মধ্যে রয়েছে, ব্যাংকে টাকা জমা না দিয়ে নগদ অর্থ হাতে রেখে ব্যয় করা, অর্থ আত্মসাৎ ও তছরুপ, শিক্ষার্থীদের বৃত্তির টাকা না দিয়ে খরচ করা, প্রশাসনিক দায়িত্বে অবহেলা এবং বিদ্যালয় পরিচালনায় ব্যর্থতা। এসব অভিযোগে তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হলে তিনি সন্তোষজনক জবাব দিতে ব্যর্থ হন। এর প্রেক্ষিতে বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদ তাকে সাময়িক বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত নেয়। পাশাপাশি কেন তাকে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করা হবে না, সে বিষয়ে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে লিখিত জবাব দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
অনিয়মের অভিযোগে নাকোল রাইচরণ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বরখাস্ত
আর্থিক অনিয়ম এবং বিদ্যালয় পরিচালনায় ব্যর্থতার অভিযোগে মাগুরার নাকোল রাইচরণ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শেখ আবদুল মান্নানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। একইসঙ্গে বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মুনীর হোসেনকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
৩ আগস্ট রবিবার বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সাধারণ সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জানান বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের দায়িত্বপ্রাপ্ত সভাপতি মির্জা ওয়ালিদ হোসাইন।
বিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ অডিট কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে শেখ আবদুল মান্নানের বিরুদ্ধে একাধিক গুরুতর অভিযোগ ওঠে। এর মধ্যে রয়েছে— ব্যাংকে টাকা জমা না দিয়ে নগদ অর্থ হাতে রেখে ব্যয় করা, অর্থ আত্মসাৎ ও তছরুপ, শিক্ষার্থীদের বৃত্তির টাকা না দিয়ে খরচ করা, প্রশাসনিক দায়িত্বে অবহেলা এবং বিদ্যালয় পরিচালনায় ব্যর্থতা। এসব অভিযোগে তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হলে তিনি সন্তোষজনক জবাব দিতে ব্যর্থ হন। এর প্রেক্ষিতে বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদ তাকে সাময়িক বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত নেয়। পাশাপাশি কেন তাকে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করা হবে না, সে বিষয়ে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে লিখিত জবাব দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ঘটনার পূর্বে ফিরে যায়, মাগুরা জেলার শ্রীপুর উপজেলার নাকোল রাইচরণ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের
সাবেক সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ৪কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ
মাগুরা জেলার শ্রীপুর থানাধীন নাকোল রাইচরণ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ম্যানেজিং কমিটি এবং প্রধান শিক্ষক প্রায় ৪ কোটি টাকা আত্নসাত করেছেন বলে অভিযোগ জানা গেছে। তাদের কাছে বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের এডহক কমিটি বার বার হিসেব দিতে বললে তারা কর্ণপাত করছেননা। পতিত সরকারের আমলে উক্ত সিন্ডিকেটের সদস্যরা বিদ্যালয়ে একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করে ছিলেন। তাদের নিকট বিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মচারী এবং অভিভাবকরা জিম্মি ছিলেন। ভেঙে পড়েছিল বিদ্যালয়ের নিয়মনীতি সহ সব ধরনের অবকাঠামো। প্রাক্তন ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হুমাইনুর রশিদ মুহিত, সদস্য বাবু সুব্রত কুমার বিশ্বাস ও প্রধান শিক্ষক (প্রাক্তন) এ. এস. এম. রফিকুল আলা সংঘবদ্ধভাবে বিদ্যালয়ের তিন কোটি ৬৫ লাখ এক হাজার ৬শত একত্রিশ টাকা আত্নসাত করেছেন এবং বিদ্যালয়ের বর্তমান প্রধান শিক্ষক শেখ আব্দুল মান্নান যোগদানের ১১ মাসের মধ্যে ২৪ লাখ ২৪ হাজার চারশত ৮৩ টাকা আত্নসাত ও ছাত্রদের ২০২৪ সালের উপবৃত্তির এক লাখ চার হাজার দুইশত টাকা তসরূপ করেছেন। অভিযুক্তদের প্রয়োজনীয় শাস্তি ও প্রতিষ্ঠানের আত্মসাৎকৃত টাকা পুনরুদ্ধারের জন্য দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান (দুদক) এর কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন নাকোল রাইচরণ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি মির্জা ওয়ালিদ হোসেন। এছাড়াও পরিচালক পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর, চেয়ারম্যান, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, যশোর, জেলা প্রশাসক, মাগুরা বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন তিনি।
জানা যায়, ২০২৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারীতে বর্তমান পরিচালনা পর্ষদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক বিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ অডিট করার কথা। দীর্ঘ দের যুগে বিদ্যালয়ে কোন অভ্যন্তরীণ অডিট হয়নি। কিন্তু অডিট সম্পন্ন করার জন্য গঠিত অডিট কমিটির কাছে প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র প্রধান শিক্ষক শেখ আব্দুল মান্নানকে বারবার বলা সত্ত্বেও তিনি দেননি। কাগজপত্র না দেওয়ার কারনে ১১ মার্চ প্রধান শিক্ষক শেখ আব্দুল মান্নানকে কাগজপত্র বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য লিখিত আবেদন করা হয়।
আবেদন দেওয়ার একমাস পর ১২ এপ্রিল আংশিক কাগজপত্র দেয়। সেখানে টেন্ডার বা দরপত্রবিহীন ১০৮ (একশত আট) টি নতুন নির্মাণ দোকান ঘরের কোন চুক্তিপত্রের কপি তিনি পরিচালনা পর্ষদের কাছে দেননি। আরো দুই মাস পর ১৪ জুন ১০৮ টি নতুন দোকান ঘরের মধ্যে ৩৫ টি দোকান ঘরের ডিডের ফটোকপি (দোকানদারদের কাছ থেকে প্রাপ্ত) প্রধান শিক্ষক কমিটির কাছে দেন। সাবেক প্রধান শিক্ষক এ. এস. এম. রফিকুল আলা ২০২৪ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি অবসরে যান। কিন্তু তিনি এখন পর্যন্ত কোন হিসাব বুঝিয়ে দেননি বলে বর্তমান প্রধান শিক্ষক জানান। সাবেক প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ের আয়-ব্যয়ের হিসাব পরিচালনা পর্ষদের দায়িত্বশীল কোন ব্যক্তির কাছে না দিয়ে কার কাছ থেকে ছাড়পত্র নিয়েছেন এটাও অজানা রয়ে গেছে।
২০১৮ সালের ১ডিসেম্বর থেকে ২৫ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিদ্যালয়ের বিভিন্ন খাত যেমন, ছাত্র-ছাত্রীর বেতন, ঘরভাড়া, পরীক্ষার ফিস, টিউশন ফিস, অগ্রিম দোকান ঘর বরাদ্দ, নিবন্ধন ফিস, ব্যাংক লভ্যাংশ, ব্যাংক ভাড়া, উপবৃত্তি, বিভিন্ন অনুদান ও অন্যান্য থেকে ক্যাশবহিতে আয়কৃত টাকার পরিমান চার কোটি তের লাখ পয়ত্রিশ হাজার ছয় শত একষট্রি) টাকা। অফিস কর্তৃক ক্যাশবহিতে আয় দেখানো হয়েছে দুই কোটি সত্তর লাখ দশ হাজার দুইশত তেরো টাকা। বাকী এক কোটি তেতাল্লিশ লাখ পঁচিশ হাজার চারশত আটচল্লিশ টাকার কোন হিসাব পাওয়া যায়নি। অফিস কর্তৃক ক্যাশবহিতে আয় দেখানো দুই কোটি সত্তর লাখ দশ হাজার দুইশত তেরো টাকা।
জনতা ব্যাংক হিসাব নম্বর- ০৪৮৭৩৪০০০০২৫’তে জমা হয়েছে এক কোটি দশ লাখ আটচল্লিশ হাজার পাঁচশত একাশি টাকা। বাকী এক কোটি ঊনষাট লাখ একষট্টি হাজার ছয়শত বত্রিশ টাকা অর্থ তছরুপ বা অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। ব্যাংকে জমা ও ব্যাংক বহির্ভূত সকল টাকা ভুয়া, অনুমোদনহীন, স্বাক্ষরবিহীন এবং সৃজনকৃত ভাউচার দ্বারা ব্যয় দেখানো হয়েছে। আত্মসাৎকৃত মোট টাকার পরিমান তিন কোটি দুই লাখ সাতাশি হাজার আশি টাকা। ভাড়া আদায়ের রেজিষ্টার অনুযায়ী টেন্ডার বা দরপত্র বিহীন বরাদ্দকৃত ৮৭টি দোকান ঘরের অগ্রীম জমাকৃত টাকার পরিমান এক কোটি তিরানব্বই লাখ চুয়াত্তর হাজার আটশত টাকা এবং নির্মানাধীন ২১ টি ঘরের অগ্রীম জমাকৃত টাকার পরিমান চুয়াল্লিশ লক্ষ দশ হাজার টাকা দেখানো হয়েছে।
সাবেক প্রধান শিক্ষক এ. এস. এম. রফিকুল আলা ও নির্মাণ কমিটির প্রধান বাবু সুব্রত কুমার বিশ্বাসের বিভিন্ন সময়ে টাকা নেওয়ার রশিদের কপিতে দুই কোটি সাঁইত্রিশ লাখ চুরাশি হাজার আটশত টাকা উল্লেখ রয়েছে। তন্মধ্যে ক্যাশবহিতে আয়ের ঘরে, দোকানঘর বরাদ্দের টাকা হিসাবে জামা দেখানো হয়েছে ৯৪ লাখ উনষাট হাজার তিন শত বায়ান্নটাকা। বাকী এক কোটি তেতাল্লিশ লাখ পঁচিশ হাজার চারশত আটচল্লিশ টাকার কোন হিসাব পাওয়া যায়নি। জমা দেওয়া দোকান ঘরগুলোর চুক্তি নামা থেকে দেখা যায় যে, প্রত্যেকের কাছ থেকে সমপরিমান টাকা নেওয়ার কথা থাকলেও স্বজনপ্রীতি করে কারো কারো কাছ থেকে টাকা কম নেওয়া হয়েছে। যা বিদ্যালয়ের স্বার্থের পরিপন্থী।প্রতিটি ঘরের বরাদ্দ তিন লাখ টাকা করে নেবার কথা, সে হিসাবে ১০৮ টি দোকান ঘর থেকে জমা হওয়ার কথা তিন কোটি চব্বিশ লাখ টাকা। কিন্তু জমা নেওয়া হয়েছে দুই কোটি সাঁইত্রিশ লাখ চুরাশি হাজার আটশত টাকা। বাকী ৮৬ লাখ পঁয়ষট্টি হাজার টাকা স্বজনপ্রীতি ও আত্মসাৎ করার গুরুতর অভিযোগ উঠেছে।।
ব্যাংকের হিসাবের সাথে ক্যাশবহির কোন মিল নেই। ২০২২ সালে দোকানঘর বরাদ্দের চল্লিশ লাখ টাকা জনতা ব্যাংক, নাকোল শাখা, হিসাব নং ০৪৮৭৩৪০০০০২৫ তে জমা থাকলেও ক্যাশবহিতে তা তোলা হয়নি। তবে ক্যাশবহিতে তোলা হয়েছে ২০২৩ সালে। বিদ্যালয়ের ব্যাংক হিসাব নম্বর থেকে সাবেক সভাপতি হুমাউনুর রশিদ মুহিতের হিসাব নম্বর (টপটেন ইটভাটা) ০১০০১১৮৪৪৪১৪৫-এ একান্ন লাখ টাকা ট্রান্সফার করা হয়েছে নিয়ম বহির্ভূত ভাবে। ব্যাংক স্টেটমেন্ট হতে দেখা যায় বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সাবেক সভাপতি হুমাউনুর রশিদ মুহিত টপটেন ইটভাটার নামে জনতা ব্যাংক হিসাব নং- ০১০০১১৮৪৪৪১৪৫- এ ২০২২ সালের ৩০ ডিসেম্বর, ২০২২ সালের ৪ ডিসেম্বর,২০২২ সালের ৬ ডিসেম্বর ২০২২ সালের ১১ ডিসেম্বর, ২০২৩ সালের ১১ নভেম্বর এবং ২০২৩ সালের ৩০ মার্চ পাঁচ লাখ টাকা করে ৬ দিনে ত্রিশ লাখ টাকা এবং ২০২৪ সালের ১১ জানুয়ারি ৬০০৬৭৪৯৮৫০৩ নং চেকে ১৬ লাখ টাকা, ৬০০৬৭৪৯৮৫০৪ নং চেকে ৫ লাখ টাকা। মোট একুশ লাখ টাকা বিদ্যালযের হিসাব নম্বর-০৪৮৭৩৪০০০০২৫ হতে ট্রান্সফার করা হয়।
২০২৩ সালের ২৬ জুন ৬০০৫১৪৭৭৩৭০ নং চেকের মাধ্যমে সাবেক প্রধান শিক্ষক এ.এস.এম.রফিকুল আলা পনের লাখ টাকা জনতা ব্যাংক (বিদ্যালয়ের হিসাব নম্বর-০৪৮৭৩৪০০০০২৫) থেকে তুলেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
২০২৪ সালের ১৫ জানুয়ারি তিন লাখ টাকা এবং তার অবসরের মাত্র ৮ দিন আগে ৬০০৬৭৪৯৮৫০৬ চেকের মাধ্যমে পাঁচ লাখ টাকা জনতা ব্যাংক, নাকোল শাখা, বিদ্যালয়ের হিসাব নং ০৪৮৭৩৪০০০০২৫ হতে উত্তোলন করেছেন।
নতুন দোকানঘর বরাদ্দের চুক্তি নামা হতে দেখা যায় যে, বেশ কিছু স্ট্যাম্প কেনা হয়েছে ২০২২ সালে। কিন্তু চুক্তি করা হয়েছে ২০২১ সালে। সাবেক প্রধান শিক্ষক এ.এস.এম. রফিকুল আলা ২০২৪ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি অবসরে গেলেও বেশ কিছু দোকান ঘর বরাদ্দ দিয়েছেন ২০২৪ সালের ১ মার্চ। এ.এস.এম. রফিকুল আলা কারো কাছে কোন হিসাব বুঝিয়ে দিয়ে যাননি।
কোন হিসাব না দেওয়ায় সাবেক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মুনীর হোসেন ২০২৪ সালের ১৪ মার্চ পরামর্শ চেয়ে জেলা শিক্ষা অফিসার, মাগুরা বরাবর আবেদন করেন। কিন্তু দেখা যায়, সাবেক প্রধান শিক্ষক এ.এস.এম.রফিকুল আলা সকল সৃজনকৃত, অনুমোদনহীন, স্বাক্ষরবিহীন ভাউচার অফিসে জমা করেন এবং সেগুলো অডিটের জন্য দেওয়া হয়। বর্তমান প্রধান শিক্ষক শেখ আব্দুল মান্নানকে এ সকল ভাউচার সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেছেন এ বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না।
বিভিন্ন ধরনের অনিয়ম, দুর্নীতি এবং অর্থ আত্মসাৎ থেকে বাচার জন্য সাবেক পরিচালনা পর্ষদ ষড়যন্ত্র মূলক ভাবে সাবেক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মুনীর হোসেনকে কোন প্রকার নোটিশ ছাড়াই বিধি বর্হিভূত ভাবে সাময়িক বরখাস্ত করে বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা সুবর্না জামানকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দিয়ে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন। যা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জারিকৃত স্মারক নং ৩৭.০০.০০০০.০৭৪.০০২.০০১.২০২১.৫১ তাং ০৫/০২/২০২৪ পরিপত্রের পরিপন্থী। প্রকাশ থাকে যে, সহকারী প্রধান শিক্ষক ছাড়া অন্য কোন শিক্ষকের উপর ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব অর্পন করা যাবে না। প্রধান শিক্ষক নিয়োগের জন্য গঠিত নিয়োগ বোর্ডের সদস্য সচিব হিসাবে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মুনীর হোসেনের নাম উল্লেখ আছে। মুনীর হোসেনকে কোন নোটিশ ছাড়া বরখাস্ত এবং নতুন নিয়োগ বোর্ড গঠন না করে কিভাবে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হলো তা কমিটির কাছে বোধগম্য নয়। রেজুলিউশন বহিতে মুনীর হোসেনের বরখাস্তের এবং নতুন নিয়োগ বোর্ড গঠনের কোন রেজুলিউশন নেই। বিধি বহির্ভূত নিয়োগ বোর্ড গঠন করে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা সম্পূর্ন অবৈধ বলে স্কুল কমিটি মনে করেন। এ সকল অপরাধের সাথে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করার জন্য জোর সুপারিশ জানিয়েছেন বর্তমান পরিচালনা পর্ষদ।
সাবেক প্রধান শিক্ষক এ. এস. এম. রফিকুল আলার সময়কালে বিদ্যালয়ের ক্যাশবহি এবং ব্যাংক স্টেটমেন্ট হতে প্রাপ্ত-
তছরুপ/ আত্মসাতকৃত টাকার হিসাব বিবরণীতে দেখা যায়, মোট আয় দুই কোটি পঁয়ত্রিশ লাখ একত্রিশ হাজার আট শত দুই টাকা। ব্যাংকে জমা= এক কোটি বিশ হাজার আটশত উনিশ টাকা।
ব্যাংক বহির্ভূত এক কোটি পঁয়ত্রিশ লাখ দশ হাজার নয়শত তিরাশি টাকা ।
ক্যাশবহিতে অপ্রদর্শিত এক কোটি তেতাল্লিশ লাখ পঁচিশ হাজার চারশত আট চল্লিশ টাকা। স্বজনপ্রীতি= ছিয়াশি লাখ পয়ষট্টি হাজার দুই শত টাকা। মোট দুই কোটি আটাত্তর লাখ ছত্রির হাজার চারশত একচল্লিশ টাকা। দোকান বরাদ্দের মোট তছরুপকৃত তিন কোটি পঁয়ষ্ট্রি লাখ এক হাজার ছয়শত একত্রিশ টাকা। অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে তছরুপ করা হয়েছে বলে মনে করেন পরিচালনা পর্ষদ।
সাবেক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মুনীর হোসেনের সময়কালের চুড়ান্ত হিসাব: বিদ্যালয়ের ক্যাশবহি এবং ব্যাংক স্টেটমেন্ট হতে প্রাপ্ত মোট আয় এক লাখ আঠার হাজার একশত দশ টাকা। এর মধ্যে ব্যাংকে জমা একানব্বই হাজার নয়শত চুয়াল্লিশ টাকা। অবশিষ্ট ছাব্বিশ হাজার একশত ছেষট্টি টাকা হতে এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্রের অতিরিক্ত খরচ ব্যবদ আঠার হাজার টাকা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের স্বাক্ষরে, উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যলয়ে জমা দেওয়া হয়। অবশিষ্ট আট হাজার একশত ছেষট্টি টাকা পেটি ক্যাশ হিসাবে রেখে ভাউচারের মাধ্যমে খরচ করা হয়। মুনীর হোসেন ২০২৪ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বভার প্রহন করেন।
২০২৪ সালের ১ এপ্রিল ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মুনীর হোসেনকে সাবেক পরিচালনা পর্ষদ কোন নোটিশ ছাড়াই বরখাস্ত করেন এবং সুর্বনা জামানকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব অর্পণ করেন।
২০২৪ সালের ৫ এপ্রিল প্রধান শিক্ষক নিয়োগের নতুন নিয়োগ বোর্ড গঠন না করে একই তারিখে প্রধান শিক্ষকের নিয়োগ পরীক্ষা সম্পন্ন করেন। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মুনীর হোসেনের সাময়িক বরখাস্ত, সহকারী শিক্ষিকা সুবর্না জামানকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব অর্পন এবং নতুন নিয়োগ বোর্ড গঠনের কোন রেজিলিউশন, রেজিলিউশনবহিতে পাওয়া যায়নি বলে জানান পরিচালনা পর্ষদ। ২০২৪ সালের ৬ এপ্রিল একই দিনে নিয়োগ কমিটি গঠন ও পরীক্ষা গ্রহণ এবং নিয়োগ অনুমোদন দেওয়া হয়।৮ এপ্রিল ২০২৪ তারিখে নতুন প্রধান শিক্ষক যোগদান করে দায়িত্বভার গ্রহন করেন। যা পরিচালনা পর্ষদ, শিক্ষক ও অভিভাবকরা বিস্মিত হয়েছে। নাকোল রাইচরণ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পূর্বের নিয়োগের রেজুলিউশনগুলো লক্ষ্য করলে দেখা যায় যে, চতুর্থ শ্রেণীর কোন কর্মচারী নিয়োগেও এই ধরনের তাড়াহুড়া করে নিয়োগ বোর্ড গঠনের দিন নিয়োগ পরীক্ষা নেওয়া হয়নি। উল্লেখ্য ২০২৪ সালের ২১ মার্চ পরিচালনা পর্ষদের সভায় সর্ব সম্মতিক্রমে প্রধান শিক্ষক নিয়োগের জন্য একটি নিয়োগ বোর্ড গঠন করা হয়। সেখানে দেখা যায় গঠিত নিয়োগ বোর্ডের সদস্য সচিব হিসাবে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মুনীর হোসেনের নাম উল্লেখ আছে। পরিচালনা পর্ষদের পরবর্তী সভা অনুষ্ঠিত হয় ২০২৪ সালের ২৫ মার্চ। রেজুলিউশন বহিতে দেখা যায় ওই দিন কোন মিটিং হয়নি। সদস্যদের সকলের স্বাক্ষর থাকলেও তৎকালিন সভাপতি হুমাউনুর রশিদ মুহিত মিটিং না করে চলে যান এবং বাতিল লেখে ২৫ মার্চ ২০২৪ তারিখে স্বাক্ষর করেন। নতুন গঠিত নিয়োগ বোর্ডের সদস্য সচিব হিসাবে বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা সুবর্ণা জামানের নাম দেখা যায়। যার কোন রেজিলিউশন রেজিলিউশন বহিতে পাওয়া যায়নি। নাকোল রাইচরণ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মত একটি ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এই ধরনের বিধি বর্হিভূত নিয়োগ বোর্ড গঠনের মাধ্যমে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা কতটুকু আইন সম্মত হয়েছে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এই বিধি বহির্ভূত প্রধান শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ার সাথে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করার জন্য জোর দাবি করেছেন ভুক্তভোগী মহল ।
বর্তমান প্রধান শিক্ষক শেখ আব্দুল মান্নানের সময়কালে ২০২৪ সালের ৮ এপ্রিল থেকে ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত চুড়ান্ত হিসাব: বিদ্যালয়ের ক্যাশবহিতে প্রাপ্ত আয় তেত্রিশ লাখ ষাট হাজার তিনশত এক টাকা। এর মধ্যে ডিসেম্বর (২০২৪) পর্যন্ত আয় তেইশ লাখ উনত্রিশ হাজার নয়শত টাকা। যার মধ্যে ব্যাংকে জমা দেখানো হয়েছে নয় লাখ পঁয়ত্রিশ হাজার আট শত আঠার টাকা। বাকী তেরো লাখ চুরানব্বই হাজার বিরাশি টাকা ব্যাংকে জমা দেওয়া হয়নি। ২০২৫ সালে জানুয়ারী এবং ফেব্রুয়ারী দুই মাসে মোট আয় হয়েছে (ক্যাশবহি হতে প্রাপ্ত) দশ লাখ ত্রিশ হাজার চারশত এক টাকা। যার মধ্যে কোন টাকা ব্যাংকে জমা দেওয়া হয়নি। বিদ্যালয়ের আয়কৃত তেত্রিশ লাখ ষাট হাজার তিনশত এক টাকার মধ্যে ব্যাংকে জমা নয় লাখ পঁয়ত্রিশ হাজার আটশত আঠার টাকা। অবশিষ্ট চব্বিশ লাখ চব্বিশ হাজার চারশত তিরাশি টাকা তছরুপ করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। ব্যাংকে জমাকৃত টাকা সহ মোট তেত্রিশ লাখ ষাট হাজার তিনশত এক টাকা বর্তমান প্রধান শিক্ষক কর্মচারীদের কয়েক মাসের বেতন, বিভিন্ন ধরনের অনুমোদন বিহীন, স্বাক্ষর বিহীন এবং সৃজনকৃত ভাউচার দিয়ে ব্যয় দেখিয়েছেন বলে তথ্যসূত্রে জানা গেছে ।
অনুসন্ধানে জানা যায়, নিয়োগ বোর্ডের সদস্যদের নামে মামলা থাকলেও বর্তমান প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ের আয়কৃত টাকা দিয়ে বিদ্যালয়ের নামে মামলা দেখিয়ে মামলা পরিচালনা করে আসছেন। এমন কি কোন কোন মাসে দুই বা তার অধিক বার প্রয়োজনের অধিক পরিমান টাকার ভাউচার দেখিয়েছেন।
২০১৯ সালের ২০ এপ্রিল পরিচালনা পর্ষদের সভার কার্যবিবরনী থেকে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের যে সকল উপবৃত্তি ফান্ড রয়েছে সে গুলোর লভ্যাংশ দিয়ে গরীব মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের উপবৃত্তি দিতে হবে। কিন্তু ব্যাংক স্টেটমেন্ট হতে দেখা যায়, ২০২৪ সালের ১০ জুন উপবৃত্তির ফান্ড থেকে বিদ্যালয়ের হিসাব নং-০৪৮৭৩৪০০০০২৫ এ এক লাখ চার হাজার দুই শত টাকা স্থানান্তর করা হয়। এখন পর্যন্ত ২০২৪ সালের উপবৃত্তির টাকা কোন ছাত্র-ছাত্রীদেরকে প্রদান করা হয়নি বলে অভিযোগ জানা গেছে। অতীতে উপ বৃত্তির গরীব মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে প্রদানের কোন তথ্য পাওয়া যায়নি।
জানা যায়, সাবেক প্রধান শিক্ষক এ এস এম রফিকুল আলা এর কাছ থেকে এখন পর্যন্ত কোন হিসাব বিদ্যালয়ের দায়িত্বশীলদেরকে বুঝিয়ে দেয়া হয়নি। বিদ্যালয়ের সকল আয় ব্যয়ের হিসাব বুঝে নেয়ার জন্য বর্তমান প্রধান শিক্ষক, সাবেক প্রধান শিক্ষককে কোন চিঠি দিয়েছেন কিনা তাও জানেন না বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদ।
বক্তব্য জানার জন্য অভিযুক্তদের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাদেরকে পাওয়া যায়নি।