ঢাকা ১২:৫৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১১ অগাস্ট ২০২৫, ২৬ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
তালিকাভুক্ত হয়েই ৮টি কাজ পেয়েছে অনভিজ্ঞ ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান আরিয়ান এন্টারপ্রাইজ! মালয়েশিয়া প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণে আগামীকাল সরকারি সফরে যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা মানবিক বরগুনার আমতলী উপজেলা কমিটি গঠন সাংবাদিক তুহিন হত্যার বিচারের দাবিতে সিরাজদিখানে মানববন্ধন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হারানো অস্ত্রের সন্ধান দিলে মিলবে পুরস্কার- স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা তুহিন হত্যার প্রতিবাদে পঞ্চগড়ে সাংবাদিকদের মানববন্ধন পঞ্চগড়ে যুবকের রহস্যজনক মৃত্যু সাংবাদিক তুহিন হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবিতে শরীয়তপুরে মানববন্ধন মরহুম আরাফাত রহমান কোকোর ৫৬তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ৬৭ নং ওয়ার্ড যুবদলের আয়োজনে স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্ট ঝিনাইদহে মিন্টু ও হিরনের ছত্রছায়ায় কলেজ শিক্ষক মিলন এখন ‘ধনপতি’!
বিটিসিএল খুলনা অঞ্চলের ডিজিএম তরিকুল ইসলামের ইজিপি কারিশমা:

তালিকাভুক্ত হয়েই ৮টি কাজ পেয়েছে অনভিজ্ঞ ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান আরিয়ান এন্টারপ্রাইজ!

টেন্ডার প্রক্রিয়ায় সকল নিয়মনীতি উপেক্ষা করে গোপন প্রক্রিয়ায় (বিটিসিএল) বাংলাদেশ টেলি কমিউনিকেশন কোম্পানি লিমিটেডের পৌনে ১২ কোটি টাকা আত্মসাতের আয়োজন চলছে। বিটিসিএলের অধীনে কপার ক্যাবল ও অফটিক্যাল ফাইবার লেইং কাজের তালিকাভুক্ত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ১১০টি। তালিকাভুক্ত করার সময় যেকোনো প্রতিষ্ঠানকে তার সকল ডকুমেন্ট যাচাই-বাছাই করেই তালিকাভুক্ত করা হয়। বিগত তিন বছর ম্যানুয়েল পদ্ধতিতে টেন্ডার হতো। টেন্ডারে অংশগ্রহণকারী সকল প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে লটারীর মাধ্যমে কাজ দেয়া হতো। সমস্যা সৃষ্টি হয় চলতি বছরের এপ্রিল মাস থেকে। বিটিসিএলের খুলনা, বগুড়া ও রংপুর অঞ্চলের দুর্নীতিবাদ ডিজিএম ও ই-টেন্ডার নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা সিপিটিইউ’র দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা আইটি সেকশনকে হাত করে টেন্ডারে অংশ নেয়া সকল প্রতিষ্ঠানকে আড়াল করে নিজেদের পছন্দের প্রতিষ্ঠানকে কাজ ভাগ করে দেয়। বিগত ই-জিপি প্রক্রিয়া চালু করেছিল সরকারি সকল দফতরের টেন্ডার কাজে দুর্নীতি কমিয়ে জবাবদিহিতার আনয়ন করার জন্য। অথচ সেই ই-জিপি প্রক্রিয়ার ঘাড়ে বন্দুক রেখেই বিটিসিএল ও নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা সিপিটিইউ’র কর্মকর্তারা দুর্নীতির উৎসবে মেতেছেন। টেন্ডারে অংশ নেয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর অভিযোগ বিগত তিন বছর ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার মাধ্যমে টেন্ডার প্রক্রিয়া চলে আসছিল। হঠাৎ করে এমনকি হলো যে ই-জিপিতে টেন্ডার করতে হবে? নিশ্চয়ই এখানে তথ্য গোপন করে অবৈধ সুবিধার বিনিময়ে পছন্দের প্রতিষ্ঠানকে কাজ পাইয়ে দেয়া ষড়যন্ত্র হয়েছে। যার মধ্যে খুলনা অঞ্চলে ছয়টি কাজের টেন্ডার হয় সেখানে আরিয়ান নামের একটি প্রতিষ্ঠানই চারটি কাজ পায়। বগুড়া অঞ্চলে চারটি কাজের টেন্ডার হয় যেখানে ঐ একই প্রতিষ্ঠান পায় ২টি কাজ। রংপুর অঞ্চলে তিনটি কাজের টেন্ডার হয় সেখানেও ২টি কাজ পায় সেই আরিয়ান এন্টারপ্রাইজ। বিটিসিএলে নতুন তালিকাভুক্ত খুলনা অঞ্চলের একটি প্রতিষ্ঠান দুর্নীতি ছাড়া এত কাজ পায় কিভাবে? অন্যদিকে প্রডাক্ট প্লাস নামক একটি প্রতিষ্ঠান তিনটি অঞ্চলেই একটি করে কাজ পায়।
প্রশ্ন হলো, একটি প্রতিষ্ঠান তিনটি অঞ্চলে কিভাবে একটি করে কাজ পায়। বিটিসিএলে টেন্ডার প্রক্রিয়ায় এমন অভিনব জালিয়াতিতে টেন্ডারে অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলো হতবাক। ২২টি প্রতিষ্ঠান টেন্ডারে অংশ নিয়েছিল। ১৩টি টেন্ডার সিডিউলে একই প্রতিষ্ঠান কিভাবে আটটি কাজ পায়? অন্য একটি প্রতিষ্ঠান তিন বিভাগেই একটি করে কাজ পাওয়া এটা দুর্নীতি ছাড়া কোনোভাবেই সম্ভব নয়। টেন্ডার প্রক্রিয়া চুড়ান্ত করার সময় অংশ নেয়া কোনো প্রতিষ্ঠানকেই ডাকা হয়নি। সরকারি বিধি অনুযায়ী দরপত্রে অংশ নেয়া সকল প্রতিষ্ঠানকে চিঠি বা ই-মেইলে অবহিত করার নিয়ম রয়েছে। টেন্ডারে অংশ নেয়া কোনো প্রতিষ্ঠানকে অবহিত না করে টেন্ডার মূল্যায়ন কমিটি গোপন লেনদেনের মাধ্যমে শুধুমাত্র পছন্দমত প্রতিষ্ঠানগুলোকে ডেকে কাজ দিয়ে দেয় যা বিটিসিএলে এক নজিরবিহীন ঘটনা।
এ ব্যাপারে দুর্নীতি দমন কমিশন ও সরকারের গোয়েন্দা সংস্থা তদন্ত করলেই থলের বিড়াল বের হয়ে পড়বে। এ ব্যাপারে খুলনা অঞ্চলের ডিজিএম তরিকুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ই-জিপিতে টেন্ডার হয়েছে কোনো অনিয়ম হয়নি। তবে এপ্রিল থেকে কেন ই-জিপি চালু করলেন এমন প্রশ্ন তিনি এড়িয়ে যান।
বগুড়া অঞ্চলের ডিজিএম দিপুল কুমার রায় দাবি করেন তার অঞ্চলে কোনো অনিয়ম হয়নি। রংপুর অঞ্চলের ডিজিএম জগেন্দ্রনাথ রায় জানান, এ ব্যাপারে তার কোনো ভূমিকা নেই। তিনি প্রধান কার্যালয়ে যোগাযোগ করতে বলেন। অভিযুক্ত আরিয়া এন্টারপ্রাইজের নাম্বারে বার বার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে এই প্রতিষ্ঠানের কর্ণধারের বিরুদ্ধে রয়েছে নানান অভিযোগ। তার নিকটজনরা জানান, দুর্নীতিবাজ এই ব্যক্তি যেকোনোভাবে নিজের সফলতা লাভ করতে চান। নিকটজনদের তিনি নাকি এও বলেছেন দেশের মেইন ব্যক্তির সাথে আমার কানেকশন। আমাকে কাজ দিতেই হবে। বিটিসিএলে নতুন তালিকাভুক্ত এই প্রতিষ্ঠান দুর্নীতি ছাড়া কোনোভাবেই এতগুলো কাজ একত্রে পেতে পারেন না। দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের জন্য বর্তমান সরকার ক্রমাগত বিতর্কিত হচ্ছে। এজন্য এদের আইনের আওতায় আনা অত্যন্ত জরুরী। অতি লোভী কর্মকর্তাদের চিহ্নিত করা এখন সময়ের দাবি। বিষয়টি প্রধান উপদেষ্টা ও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের নজরে দেয়া হলো।

ট্যাগস
জনপ্রিয় সংবাদ

তালিকাভুক্ত হয়েই ৮টি কাজ পেয়েছে অনভিজ্ঞ ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান আরিয়ান এন্টারপ্রাইজ!

বিটিসিএল খুলনা অঞ্চলের ডিজিএম তরিকুল ইসলামের ইজিপি কারিশমা:

তালিকাভুক্ত হয়েই ৮টি কাজ পেয়েছে অনভিজ্ঞ ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান আরিয়ান এন্টারপ্রাইজ!

আপডেট টাইম : ০৬:৫৫:৫৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ১০ অগাস্ট ২০২৫

টেন্ডার প্রক্রিয়ায় সকল নিয়মনীতি উপেক্ষা করে গোপন প্রক্রিয়ায় (বিটিসিএল) বাংলাদেশ টেলি কমিউনিকেশন কোম্পানি লিমিটেডের পৌনে ১২ কোটি টাকা আত্মসাতের আয়োজন চলছে। বিটিসিএলের অধীনে কপার ক্যাবল ও অফটিক্যাল ফাইবার লেইং কাজের তালিকাভুক্ত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ১১০টি। তালিকাভুক্ত করার সময় যেকোনো প্রতিষ্ঠানকে তার সকল ডকুমেন্ট যাচাই-বাছাই করেই তালিকাভুক্ত করা হয়। বিগত তিন বছর ম্যানুয়েল পদ্ধতিতে টেন্ডার হতো। টেন্ডারে অংশগ্রহণকারী সকল প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে লটারীর মাধ্যমে কাজ দেয়া হতো। সমস্যা সৃষ্টি হয় চলতি বছরের এপ্রিল মাস থেকে। বিটিসিএলের খুলনা, বগুড়া ও রংপুর অঞ্চলের দুর্নীতিবাদ ডিজিএম ও ই-টেন্ডার নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা সিপিটিইউ’র দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা আইটি সেকশনকে হাত করে টেন্ডারে অংশ নেয়া সকল প্রতিষ্ঠানকে আড়াল করে নিজেদের পছন্দের প্রতিষ্ঠানকে কাজ ভাগ করে দেয়। বিগত ই-জিপি প্রক্রিয়া চালু করেছিল সরকারি সকল দফতরের টেন্ডার কাজে দুর্নীতি কমিয়ে জবাবদিহিতার আনয়ন করার জন্য। অথচ সেই ই-জিপি প্রক্রিয়ার ঘাড়ে বন্দুক রেখেই বিটিসিএল ও নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা সিপিটিইউ’র কর্মকর্তারা দুর্নীতির উৎসবে মেতেছেন। টেন্ডারে অংশ নেয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর অভিযোগ বিগত তিন বছর ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার মাধ্যমে টেন্ডার প্রক্রিয়া চলে আসছিল। হঠাৎ করে এমনকি হলো যে ই-জিপিতে টেন্ডার করতে হবে? নিশ্চয়ই এখানে তথ্য গোপন করে অবৈধ সুবিধার বিনিময়ে পছন্দের প্রতিষ্ঠানকে কাজ পাইয়ে দেয়া ষড়যন্ত্র হয়েছে। যার মধ্যে খুলনা অঞ্চলে ছয়টি কাজের টেন্ডার হয় সেখানে আরিয়ান নামের একটি প্রতিষ্ঠানই চারটি কাজ পায়। বগুড়া অঞ্চলে চারটি কাজের টেন্ডার হয় যেখানে ঐ একই প্রতিষ্ঠান পায় ২টি কাজ। রংপুর অঞ্চলে তিনটি কাজের টেন্ডার হয় সেখানেও ২টি কাজ পায় সেই আরিয়ান এন্টারপ্রাইজ। বিটিসিএলে নতুন তালিকাভুক্ত খুলনা অঞ্চলের একটি প্রতিষ্ঠান দুর্নীতি ছাড়া এত কাজ পায় কিভাবে? অন্যদিকে প্রডাক্ট প্লাস নামক একটি প্রতিষ্ঠান তিনটি অঞ্চলেই একটি করে কাজ পায়।
প্রশ্ন হলো, একটি প্রতিষ্ঠান তিনটি অঞ্চলে কিভাবে একটি করে কাজ পায়। বিটিসিএলে টেন্ডার প্রক্রিয়ায় এমন অভিনব জালিয়াতিতে টেন্ডারে অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলো হতবাক। ২২টি প্রতিষ্ঠান টেন্ডারে অংশ নিয়েছিল। ১৩টি টেন্ডার সিডিউলে একই প্রতিষ্ঠান কিভাবে আটটি কাজ পায়? অন্য একটি প্রতিষ্ঠান তিন বিভাগেই একটি করে কাজ পাওয়া এটা দুর্নীতি ছাড়া কোনোভাবেই সম্ভব নয়। টেন্ডার প্রক্রিয়া চুড়ান্ত করার সময় অংশ নেয়া কোনো প্রতিষ্ঠানকেই ডাকা হয়নি। সরকারি বিধি অনুযায়ী দরপত্রে অংশ নেয়া সকল প্রতিষ্ঠানকে চিঠি বা ই-মেইলে অবহিত করার নিয়ম রয়েছে। টেন্ডারে অংশ নেয়া কোনো প্রতিষ্ঠানকে অবহিত না করে টেন্ডার মূল্যায়ন কমিটি গোপন লেনদেনের মাধ্যমে শুধুমাত্র পছন্দমত প্রতিষ্ঠানগুলোকে ডেকে কাজ দিয়ে দেয় যা বিটিসিএলে এক নজিরবিহীন ঘটনা।
এ ব্যাপারে দুর্নীতি দমন কমিশন ও সরকারের গোয়েন্দা সংস্থা তদন্ত করলেই থলের বিড়াল বের হয়ে পড়বে। এ ব্যাপারে খুলনা অঞ্চলের ডিজিএম তরিকুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ই-জিপিতে টেন্ডার হয়েছে কোনো অনিয়ম হয়নি। তবে এপ্রিল থেকে কেন ই-জিপি চালু করলেন এমন প্রশ্ন তিনি এড়িয়ে যান।
বগুড়া অঞ্চলের ডিজিএম দিপুল কুমার রায় দাবি করেন তার অঞ্চলে কোনো অনিয়ম হয়নি। রংপুর অঞ্চলের ডিজিএম জগেন্দ্রনাথ রায় জানান, এ ব্যাপারে তার কোনো ভূমিকা নেই। তিনি প্রধান কার্যালয়ে যোগাযোগ করতে বলেন। অভিযুক্ত আরিয়া এন্টারপ্রাইজের নাম্বারে বার বার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে এই প্রতিষ্ঠানের কর্ণধারের বিরুদ্ধে রয়েছে নানান অভিযোগ। তার নিকটজনরা জানান, দুর্নীতিবাজ এই ব্যক্তি যেকোনোভাবে নিজের সফলতা লাভ করতে চান। নিকটজনদের তিনি নাকি এও বলেছেন দেশের মেইন ব্যক্তির সাথে আমার কানেকশন। আমাকে কাজ দিতেই হবে। বিটিসিএলে নতুন তালিকাভুক্ত এই প্রতিষ্ঠান দুর্নীতি ছাড়া কোনোভাবেই এতগুলো কাজ একত্রে পেতে পারেন না। দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের জন্য বর্তমান সরকার ক্রমাগত বিতর্কিত হচ্ছে। এজন্য এদের আইনের আওতায় আনা অত্যন্ত জরুরী। অতি লোভী কর্মকর্তাদের চিহ্নিত করা এখন সময়ের দাবি। বিষয়টি প্রধান উপদেষ্টা ও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের নজরে দেয়া হলো।