ঢাকা ০৮:৩৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২২ নভেম্বর ২০২৫, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
সিরাজদিখানে বাসাইল ইউনিয়ন বিএনপির কর্মী সভা ও লিফলেট বিতরণ অনুষ্ঠিত লাজফার্মার ঔষধ খেয়ে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন (পর্ব-১) নওগাঁ ইউনাইটেড প্রেসক্লাবের নির্বাচন তফসিল ঘোষণা নওগাঁয় সাবেক স্ত্রীর আপত্তিকর ভিডিও ভাইরাল: থানায় মামলা না নেবার অভিযোগ তারেক রহমানের জন্মদিনে নওগাঁয় দোয়া ও খাবার বিতরণ মাগুরা-২ আসনে পরিবর্তনের হাওয়া মাগুরা-২ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে তৃণমূলের সমাবেশ পাবনায় “তারুণ্যের উৎসব ২০২৫”: আন্তঃকলেজ ফুটবল টুর্নামেন্টের মধ্য দিয়ে নবাগত জেলা প্রশাসকের কর্মদিবস শুরু মাগুরা ২ আসনে কাজী কামালের লক্ষ্যাধিক লোকের সমাবেশের প্রস্তুতি শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ড

নওগাঁয় সাবেক স্ত্রীর আপত্তিকর ভিডিও ভাইরাল: থানায় মামলা না নেবার অভিযোগ

নাদিম আহমেদ অনিক, নিজস্ব প্রতিবেদক-
নওগাঁয় সাবেক স্ত্রীর আপত্তিকর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইমু তে ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে আনোয়ার হোসেন নামের এক সদর হাসপাতালের কর্মচারীর বিরুদ্ধে।
আনোয়ার হোসেন নওগাঁ সদর হাসপাতালের অস্থায়ী কর্মচারী ও নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার পারইল গ্রামের দবির উদ্দিনের ছেলে।
ঘটনাটি স্থানীয় ভাবে জানাজানি হলে সামাজিক মানক্ষুণ্য হওয়ায় ওই নারী দুইবার আত্মহত্যার চেষ্টা করেন।
এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় নওগাঁ সদর মডেল থানায় সাবেক স্বামীর বিরুদ্ধে প্রমাণাদিসহ মামলা দিতে গেলে থানার দায়িত্বরত অফিসার ইনচার্জ জোরালো কোন পদক্ষেপ গ্রহণ না করে একটি অভিযোগ দিতে বলেন।পরবর্তীতে রোববার (১৬ নভেম্বর) লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।  পরবর্তীতে ৭ দিন অতিবাহিত হলেও এখনো কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি পুলিশ। ফলে পুলিশের এমন ভূমিকায় প্রশ্ন তুলেছেন ভুক্তভোগী ও সচেতন মহল।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালে নওগাঁ জেলার সদর উপজেলার তিলকপুর ইউনিয়নের মির্জাপুর গ্রামের ওবাইদুর রহমানের মেয়ের সঙ্গে একই জেলার রাণীনগর উপজেলার পারইল গ্রামের দবির উদ্দিনের ছেলে আনোয়ার হোসেনের ধর্মীয় অনুসারে বিয়ে হয়। দাম্পত্য জীবনে তাদের একটি ছেলে সন্তান জন্ম হয়। এরপর সংসার জীবনে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে কলহ সৃষ্টি হয়। প্রতিনিয়ত যৌতুকের দাবীতে স্ত্রীর উপর নির্যাতন করতো।
একপর্যায়ে স্ত্রীকে তালাক দেন স্বামী আনোয়ার হোসেন। পরে ভুক্তভোগী আদালতে যৌতুক ও দেনমোহরের মামলা দায়ে করেন। মামলার চলমান অবস্থায় তাকে বিভিন্নভাবে হুমকি ধামকি দিয়ে আসছিলো সাবেক স্বামী আনোয়ার হোসেন। হুমকি ধামকির একপর্যায়ে সাংসারিক জীবনে ভিডিও ফোনে কথা বলার সময় কৌশলে স্ত্রীর আপত্তিকর ভিডিও গোপনে ধারণ করে রাখে স্বামী। পরে সেগুলোর বিষয়ে তাকে বলে বিভিন্ন কুপ্রস্তাব দিতো এবং ভিডিওগুলো ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয়ভীতি দেখাতেন। তার কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ভিডিওগুলো সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ইমুতে সাবেক স্ত্রীর বাড়ির এলাকার একাধিক ব্যক্তিদের পাঠিয়ে বলেন “এখন এগুলো করে খায়’।
বিষয়টি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে ভুক্তভোগী ও তার পরিবারের লোকজনের ব্যাপক সন্মানহানি ও সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন হয়।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী দুইবার আত্মহত্যার চেষ্টাও করলে পরে পরিবার লোকজন তাকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে গিয়ে প্রাথমিকভাবে সুস্থ করে। এখনো মানসিক ও শারীরিক ভাবে সন্তান নিয়ে অসুস্থতার মধ্যে বাবার বাড়িতে দিনযাপন করছেন ভুক্তভোগী।
পরে আইনগত পদক্ষেপের জন্য নওগাঁ সদর থানায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সাবেক স্বামী আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে তথ্য প্রমাণাদিসহ ভুক্তভোগী নিজেই মামলা দিতে গেলে মামলা নেয়না থানার দায়িত্বরত অফিসার ইনচার্জ। তিনি মামলা নেওয়ার বদলে একটি অভিযোগ দিতে বলেন। পরে রবিবারে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ দায়ের ৬ দিন অতিবাহিত হলেও এখনো পুলিশের কোন পদক্ষেপ নেই বলে জানান ভুক্তভোগী। যারফলে পুলিশের এমন ভূমিকায় প্রশ্ন তুলেছেন ভুক্তভোগী পরিবারসহ স্থানীয় লোকজন।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী মোছাঃ ওয়ারিনা বলেন, আমি নওগাঁ সদর থানায় আমার সাবেক স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা করলে গেলে সেদিন রাত ১১ টা পর্যন্ত বসে থেকে অবশেষে পুলিশের সাথে কথা বলেও মামলা নেয়নী পুলিশ। পরবর্তীতে এ বিষয়ে আমাকে অভিযোগ করতে বললে তা গত রবিবার ১৬ নভেম্বর অভিযোগ করি। অভিযোগ করার ৭ দিন হয়ে গেলেও পুলিশ এ বিষয়ে কোন ব্যাবস্থা নেয়নী।
অভিযুক্ত আনোয়ার হোসেন সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি তার কোন ভিডিও ভাইরাল করিনি তার ৩ জন প্রেমিক রয়েছে তারা করলে করতে পারে।
নওগাঁ সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি নূরে আলম সিদ্দিকী বলেন,  ভিডিও  এর বিষয়টা যেহেতু একটা ইমু অ্যাকাউন্ট থেকে করা হয়েছে সেক্ষেত্রে এটা আইডেন্টিফাই ছাড়া তো মামলা নিতে পারিনা, অভিযোগ পাবার পর থেকে তদন্ত প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, হঠাৎ করে কেউ এসে আপনার নামেও মামলা করতে চাইতে পারে, তবে বিষয়টি সত্যি কিনা তা প্রথমে আমরা যাচাই করি । সত্য ঘটনার রহস্য খুঁজে বের করে তারপর আইনগত প্রদক্ষেপ।
ট্যাগস

সিরাজদিখানে বাসাইল ইউনিয়ন বিএনপির কর্মী সভা ও লিফলেট বিতরণ অনুষ্ঠিত

নওগাঁয় সাবেক স্ত্রীর আপত্তিকর ভিডিও ভাইরাল: থানায় মামলা না নেবার অভিযোগ

আপডেট টাইম : ০৮:২১:০৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২২ নভেম্বর ২০২৫
নাদিম আহমেদ অনিক, নিজস্ব প্রতিবেদক-
নওগাঁয় সাবেক স্ত্রীর আপত্তিকর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইমু তে ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে আনোয়ার হোসেন নামের এক সদর হাসপাতালের কর্মচারীর বিরুদ্ধে।
আনোয়ার হোসেন নওগাঁ সদর হাসপাতালের অস্থায়ী কর্মচারী ও নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার পারইল গ্রামের দবির উদ্দিনের ছেলে।
ঘটনাটি স্থানীয় ভাবে জানাজানি হলে সামাজিক মানক্ষুণ্য হওয়ায় ওই নারী দুইবার আত্মহত্যার চেষ্টা করেন।
এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় নওগাঁ সদর মডেল থানায় সাবেক স্বামীর বিরুদ্ধে প্রমাণাদিসহ মামলা দিতে গেলে থানার দায়িত্বরত অফিসার ইনচার্জ জোরালো কোন পদক্ষেপ গ্রহণ না করে একটি অভিযোগ দিতে বলেন।পরবর্তীতে রোববার (১৬ নভেম্বর) লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।  পরবর্তীতে ৭ দিন অতিবাহিত হলেও এখনো কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি পুলিশ। ফলে পুলিশের এমন ভূমিকায় প্রশ্ন তুলেছেন ভুক্তভোগী ও সচেতন মহল।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালে নওগাঁ জেলার সদর উপজেলার তিলকপুর ইউনিয়নের মির্জাপুর গ্রামের ওবাইদুর রহমানের মেয়ের সঙ্গে একই জেলার রাণীনগর উপজেলার পারইল গ্রামের দবির উদ্দিনের ছেলে আনোয়ার হোসেনের ধর্মীয় অনুসারে বিয়ে হয়। দাম্পত্য জীবনে তাদের একটি ছেলে সন্তান জন্ম হয়। এরপর সংসার জীবনে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে কলহ সৃষ্টি হয়। প্রতিনিয়ত যৌতুকের দাবীতে স্ত্রীর উপর নির্যাতন করতো।
একপর্যায়ে স্ত্রীকে তালাক দেন স্বামী আনোয়ার হোসেন। পরে ভুক্তভোগী আদালতে যৌতুক ও দেনমোহরের মামলা দায়ে করেন। মামলার চলমান অবস্থায় তাকে বিভিন্নভাবে হুমকি ধামকি দিয়ে আসছিলো সাবেক স্বামী আনোয়ার হোসেন। হুমকি ধামকির একপর্যায়ে সাংসারিক জীবনে ভিডিও ফোনে কথা বলার সময় কৌশলে স্ত্রীর আপত্তিকর ভিডিও গোপনে ধারণ করে রাখে স্বামী। পরে সেগুলোর বিষয়ে তাকে বলে বিভিন্ন কুপ্রস্তাব দিতো এবং ভিডিওগুলো ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয়ভীতি দেখাতেন। তার কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ভিডিওগুলো সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ইমুতে সাবেক স্ত্রীর বাড়ির এলাকার একাধিক ব্যক্তিদের পাঠিয়ে বলেন “এখন এগুলো করে খায়’।
বিষয়টি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে ভুক্তভোগী ও তার পরিবারের লোকজনের ব্যাপক সন্মানহানি ও সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন হয়।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী দুইবার আত্মহত্যার চেষ্টাও করলে পরে পরিবার লোকজন তাকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে গিয়ে প্রাথমিকভাবে সুস্থ করে। এখনো মানসিক ও শারীরিক ভাবে সন্তান নিয়ে অসুস্থতার মধ্যে বাবার বাড়িতে দিনযাপন করছেন ভুক্তভোগী।
পরে আইনগত পদক্ষেপের জন্য নওগাঁ সদর থানায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সাবেক স্বামী আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে তথ্য প্রমাণাদিসহ ভুক্তভোগী নিজেই মামলা দিতে গেলে মামলা নেয়না থানার দায়িত্বরত অফিসার ইনচার্জ। তিনি মামলা নেওয়ার বদলে একটি অভিযোগ দিতে বলেন। পরে রবিবারে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ দায়ের ৬ দিন অতিবাহিত হলেও এখনো পুলিশের কোন পদক্ষেপ নেই বলে জানান ভুক্তভোগী। যারফলে পুলিশের এমন ভূমিকায় প্রশ্ন তুলেছেন ভুক্তভোগী পরিবারসহ স্থানীয় লোকজন।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী মোছাঃ ওয়ারিনা বলেন, আমি নওগাঁ সদর থানায় আমার সাবেক স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা করলে গেলে সেদিন রাত ১১ টা পর্যন্ত বসে থেকে অবশেষে পুলিশের সাথে কথা বলেও মামলা নেয়নী পুলিশ। পরবর্তীতে এ বিষয়ে আমাকে অভিযোগ করতে বললে তা গত রবিবার ১৬ নভেম্বর অভিযোগ করি। অভিযোগ করার ৭ দিন হয়ে গেলেও পুলিশ এ বিষয়ে কোন ব্যাবস্থা নেয়নী।
অভিযুক্ত আনোয়ার হোসেন সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি তার কোন ভিডিও ভাইরাল করিনি তার ৩ জন প্রেমিক রয়েছে তারা করলে করতে পারে।
নওগাঁ সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি নূরে আলম সিদ্দিকী বলেন,  ভিডিও  এর বিষয়টা যেহেতু একটা ইমু অ্যাকাউন্ট থেকে করা হয়েছে সেক্ষেত্রে এটা আইডেন্টিফাই ছাড়া তো মামলা নিতে পারিনা, অভিযোগ পাবার পর থেকে তদন্ত প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, হঠাৎ করে কেউ এসে আপনার নামেও মামলা করতে চাইতে পারে, তবে বিষয়টি সত্যি কিনা তা প্রথমে আমরা যাচাই করি । সত্য ঘটনার রহস্য খুঁজে বের করে তারপর আইনগত প্রদক্ষেপ।