ঢাকা ০১:১০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
জাতীয় পর্যায়ে অংশগ্রহণ করতে যাচ্ছে কুষ্টিয়া সিরাজুল হক মুসলিম মাধ্যমিক বিদ্যালয় পার্লামেন্টের নারী স্পীকারদের সামিট বৈশ্বিক গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে অভিজ্ঞতা বিনিময়ের এক অনবদ্য প্লাটফর্ম– স্পীকার ফায়ার সার্ভিসের সেই দুর্নীতিবাজ উপপরিচালক ওহিদুল আবার অধিদপ্তরে! নওগাঁয় নিউ মডার্ন ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপ এর কমাশিয়াল সেমিনার অনুষ্ঠিত সিরাজদিখানে চায়না দুয়ারী জাল বন্ধে মৎস্য কর্মকর্তার অভিযান বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটি প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত কুষ্টিয়ায় ডা: লিজা নার্সিং ইন্সটিটিউটে নবীন বরন অনুষ্ঠিত নিশ্চিত হলো মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রার্থীদের প্রতীক প্রতিশ্রুতি অনেক, বাস্তবায়ন কম ভাইয়ের মৃত্যুতে বোনের এসএসসি পাসের আনন্দ মাটি

নেতৃত্ব সংকটে বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়

বিশেষ প্রতিনিধি
বাংলাদেশ সরকার ২০১০ সালে টেক্সটাইল খাতকে যুগোপযোগী করার জন্য তৎকালীন টেক্সটাইল কলেজকে টেক্সটাইল বিশ^বিদ্যালয়ে (বুটেক্স) রুপান্তর করে। লক্ষ্য ছিল কলেজটিকে নেতৃত্ব দিয়ে সামনে নিয়ে যাওয়া। বর্তমান উপাচার্যসহ সবশেষ তিন জন উপাচার্যের কারোরই বিশ^বিদ্যালয় ম্যানেজমেন্ট সম্পর্কে ধারনা না থাকার কারনে তারা সবাই প্রতিষ্ঠানটিকে কলেজের মতন করেই পরিচালিত করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। ফলে বিশ^বিদ্যালয় এগিয়ে যাওয়ার পরিবর্তে পিছিয়ে পড়েছে। টেক্সটাইল বিশ^বিদ্যালয় আইন ২০১০ এর ৫(ক) ধারা অনুযায়ী বিশ^বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য ছিল-টেক্সটাইল সায়েন্স, টেক্সটাইল ম্যানেজমেন্ট, টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং এবং টেক্সটাইল প্রযুক্তিতে শিক্ষা ও গবেষণা করা। কিন্ত বিশ^বিদ্যালয়টি টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষার উর্ধ্বে যেতেই পারেনি। এমনকি পরিবেশ বিজ্ঞান এবং ফ্যাশন ডিজাইন নামে সময়-উপযোগী বিভাগে ডিগ্রী প্রদান করা হচ্ছে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং-এর নামে। বিশ^বিদ্যালয়ে ৫টি অনুষদ, ১৪টি বিভাগ এবং ১০ টি অধিভুক্ত কলেজ রয়েছে। বিশ^বিদ্যালয় এবং অধিভুক্ত কলেজের পাঠ্যসূচী একই। প্রতিষ্ঠার ১২বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো বিভাগভিত্তিক কার্যক্রম চালুই করতে পারেনি বুটেক্স। এমনকি এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি নিয়ে কখনো কোনো উপাচার্যই কার্যকর আলোচনার উদ্যোগ নেয়নি বলে অভিযোগ আছে। এসবের প্রধান কারন হিসেবে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন-বিশ^বিদ্যালয়ের উপাচার্যগণের কলেজ আমলের মনোভাব। যেহেতু কলেজটির শিল্পের চাহিদা পুরনের জন্য শিক্ষাগত কর্মসূচীগুলো কাস্টমাইজ করার সীমাবদ্ধতা ছিল, তাই সরকার আশা করেছিলেন যে, বিশ^বিদ্যালয়টি শিল্পের প্রয়োজনীয় সেই শূণ্যতা পূরন করবে। তবে উপাচার্যগন তা করতে ব্যর্থ হয়েছেন বলে সম্প্রতি একাধিক আলোচনা অনুষ্ঠানে উঠে এসেছে। বলতে গেলে, কেউই বিষয়টি সামনে না এনে বেকারহীন বিশ^বিদ্যালয়ের ধোয়া তুলে নিজেদের কলেজ আমলের মনোভাবের আড়ালে নিজেদের ব্যর্থতাকে আড়াল করতে চেয়েছেন বলেও সেসব সভাগুলোতে আলোচনা হয়েছে। সার্বিক সম্প্রসারনের পরিবর্তে বিশ^বিদ্যালয়টি কারিকুলাম সংকোচন নীতি বেছে নিয়েছে। ২০১০ সালে বিশ^বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার আগে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং এবং টেক্সটাইল ম্যানেজমেন্ট নামে দুটি ডিগ্রী চালু ছিল। বিশ^বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর কর্তৃপক্ষ ম্যানেজমেন্ট ডিগ্রী বাদ দিয়ে শুধু টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রী নিয়ে এগিয়ে চলেছে। যা ছিল দূরদর্শীতার অভাব, তা এখন প্রমানিত সত্য। সম্প্রতি এশিয় উন্নয়ন ব্যাংকের অর্থায়নে টেক্সটাইল শিল্পের মধ্যম-সারির ব্যবস্থাপকদের দক্ষতা উন্নয়নের জন্য ‘পিজিডি ইন টেক্সটাইল ম্যানেজমেন্ট’ প্রোগ্রামটি চালু রেখেছে। যা পরিচালনা করছেন আবার টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়াররা। এখানে কোনো বিশেষজ্ঞদের মতামত ছাড়াই কোর্স কারিকুলাম তৈরি হয়ছে বলে অভিযোগ রয়েছে শিক্ষকদের একাংশের। এশিয়া উন্নয়ন ব্যাংকের অর্থায়নে‘এক্সেকিউটিভ এমবিএ’ ও ‘পিজিডি ইন টেক্সটাইল ম্যানেজমেন্ট’ পড়ানোর জন্য ইনস্টিটিউট অফ টেক্সটাইল ডেভেলপমেন্ট খোলার সিদ্ধান্ত হয়। যেহেতু ব্যাবস্থাপক উন্নয়নের জন্য
ইন্সটিটিউটটি খোলা হচ্ছে সেহেতু সবাই জাতীয় ও আন্তঃর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী ইনস্টিটিউটের নামকরণ করতে চেয়েছিলেন ‘ইনস্টিটিউট অফ টেক্সটাইল বিজনেস’ কিন্তু‘ সভাপতি কাউকে কোনো কথা বলতে দেননি বলে অভিযোগ আছে। উপাচার্যগন নিজেদের ইচ্ছেমত প্রশাসন পরিচালনার জন্যই বিশ^বিদ্যালয় গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে অতিরিক্ত দায়িত্ব দিয়ে কিংবা চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের মাধ্যমে পূর্ণ রেখেখেন। গত বছরের শেষ দিকের আগ পর্যন্ত প্রায় ১২ বছর বিশ^বিদ্যালটির রেজিস্ট্রার দপ্তর পরিচালনা করেছেন বিশ^বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষকরা। রেজিস্ট্রার অফিসকে তারা বানিয়েছেন প্রধান একাডেমিক অফিস। ফলে ডীন অফিস, কিংবা বিভাগ ভিত্তিক কালচার এখানে চালুর কথা কেউ চিন্তাই করেনি। অথচ বিশ^বিদ্যালয়ের সার্বজনীন ক্রমধারা হলো-বিভাগীয় দপ্তর ঘুরে ডীন অফিস হয়ে সিদ্ধান্ত সমূহ রেজিস্ট্রার দপ্তরে ফাইলবন্দী হওয়া। তবে বুটেক্সে ভিসির সিদ্ধান্ত রেজিস্ট্রার বাস্তবায়ন করে তা সংরক্ষন করে। এখানে ডীনের চেয়ে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে রেজিস্ট্রার পদকে। ফলে যা হবার তাইই হয়েছে, বিশ^বিদ্যালয়ের মূল কালচার থেকে উল্টো পথে হাটছে বুটেক্স। সম্প্রতি ইউজিসি থেকে রেজিস্ট্রার পদ কর্মকর্তাদের থেকে নিয়োগ করার বাধ্যবাধকতা এবং সিন্ডিকেটের জোরাজুরির কারনে একজন ডেপুটি রেজিস্ট্রারকে রেজিস্ট্রারের চলতি দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। বিশ^বিদ্যালয়টিতে প্রকৌশল দপ্তরের প্রধান হিসেবে যিনি দায়িত্ব পালন করছেন তিনি একজন ডিপ্লোমা ডিগ্রীধারী। বুটেক্স ছাড়া বাংলাদেশের কোনো বিশ^বিদ্যালয়েই ডিপ্লোমা ডিগ্রীধারী ব্যক্তি এই পদে নেই। ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে এখন যিনি দায়িত্বে আছেন তার চাকুরি চুক্তিভিত্তিকভাবে ৬ বার বাড়িয়েছেন উপাচার্যগন। এই অনিয়মের কারন অবশ্য একটু আলাদা। বুটেক্সের বর্তমান উপাচার্যসহ সাবেক উপাচার্যগনের সবাই উক্ত ইঞ্জিনিয়োরে দিয়ে স্বল্প টাকায় নিজেদের বাড়ী এবং ফ্ল্যাট নির্মান করিয়ে নিয়েছেন। চিকিৎসা বিভাগও একজন চুক্তিভিত্তিক মেডিকেল অফিসার দ্বারা পরিচালিত হয়। কম্পাউন্ডার (চিকিৎসা সহকারী) বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালযয়ের চাকরি থেকে অবসর গ্রহণ করার পরও চুক্তিভিত্তিক কাজ করছেন। লাইব্রেরিয়ান ছাড়া চলছে গ্রন্থগার। বিশ^বিদ্যালয়ের আর্থিক সচ্ছতা আনায়নে দরকার দক্ষ অর্থ পরিচালকের। সেখানে কোনো ব্যক্তির নিয়োগ না দিয়ে প্রতিটি টাকার হিসেব রাখছেন উপাচার্য স্বয়ং। প্রশাসনিক এবং আর্থিক অনুমোদন সবই হয় এখানে উপাচার্যের মর্জি মত। যা স্পটতই সরকারী নীতির লঙ্ঘন। বিশ^বিদ্যালয় আইনে কোষাধ্যক্ষ পদটি থাকলেও কোনো উপাচার্যই এ বিষয়ে উদ্যোগ নেয়নি। ফলে আর্থিক ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরন নেই। উপাচার্য একাই বিশ^বিদ্যালয়ের সকল একাউন্ট পরিচালনা করে থাকেন। সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক মাসউদ আহমেদের মেয়াদকালে একজন অবসরপ্রাপ্ত প্রিন্সিপালকে চুক্তিভিত্তিক পরিকল্পনা ও উন্নয়ন পরিচালক হিসেবে নিয়োগ করেন। তার মেয়াদ শেষ হওয়ার পর এই পদে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন বুটেক্সের একজন অধ্যাপক যিনি একই সাথে অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে প্রক্টর ও ঞ্জিখনে দায়িত্বও পালন করছেন। একজন ডেপুটি পরীক্ষা নিয়ন্ত্রককে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের চলতি দায়িত্ব দিয়ে রাখা হয়েছে। তিনি টেক্সটাইল বিশ^বিদ্যালয়সহ ১০টি অধিভুক্ত কলেজেরও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের দায়িত্ব পালন করছেন। যা অনেকটা অসম্ভবকে সম্ভব করা বিজ্ঞাপনের মত। ফলে পরীক্ষা জটিলতা নিরসনে শিক্ষার্থীদের হতে হচ্ছে উচ্চ আদালতের দারস্ত’। ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশেও ভুল ধরা পড়েছে গত শিক্ষাবর্ষে। হল প্রভোস্টের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে সহকারী অধ্যাপকদের মধ্যে থেকে যাদের অনেকের মধ্যে ছাত্র সামলানোর মতো দক্ষতা গড়ে ওঠেনি। সম্প্রতি সব হল প্রভোস্টরা একযোগে পদত্যাগ করেছেন যা ছাত্র সামলানোর অদক্ষতাকে ফুটিয়ে তুলেছে। উপাচার্যদের নিজস্ব ক্ষমতাবলে গবেষণা চুরির অভিযোগ আড়াল করে অনেককে উচ্চ পদে পদোন্নতি দেয়ার উদাহরণও আছে বিশ্ববিদ্যালয়টির ।একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালিত হয় রেজিস্ট্রার অফিস, হেডস কমিটি এবং ডীনস কমিটির দ্বারা। বিভাগগুলোতে নেই কোনো পরীক্ষা কমিটি। এখানে কলেজের মত কেন্দ্রীয় পরীক্ষা কমিটি কাজ করেন। অভিযোগ আছে- বিশ^বিদ্যালয় রুপান্তরের পর তৎকালীন সিনিয়র অধ্যাপকদের সম্মানিত করতেই নাকি বিভাগ ও অনুষদ করা হয়েছিল। সে সময় সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক মাসউদ আহমদের জন্য খোলা হয়েছিল টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদ। টেক্সটাইল ম্যানেজমেন্ট এবং বিজনেজ স্টাডিস অনুষদ খোলা হয় সাবেক অধ্যাপক মনিরুল ইসলামের জন্য। বুটেক্সে অনুষদ ভিত্তিক কার্যক্রম একেবারেই অনুপস্থিত। পাাঁচটি অনুষদের তিনটিতেই নির্বাহী কমিটির কোনো সভা হয় না ১২ বছর ধরে। যা বিশ^বিদ্যালয় আইনের প্রথম প্রবিধির ২(২) ধারার স্পস্টতই লঙ্ঘন। আইনে বর্ণিত বিভাগ ও অনুষদ ভিত্তিক কমিটির পরিবর্তে উপাচার্যের নিয়ন্ত্রনাধীন কিছু অনানুষ্ঠানিক কমিটি সকল বিভাগ ও অনুষদের সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। বিশ^বিদ্যালয়টিতে এখন পর্যন্ত কোনো দিন অফিসই নেই। বরাদ্দকৃত অর্থ ব্যয় না করতে পেরে বাংলাদেশে একমাত্র টেক্সটাইল বিশ^বিদ্যালয়ই ইউজিসিকে টাকা ফেরত দিয়েছে। আধুনিক মেশিনারিজের অভাবে যেখানে শিক্ষার্থীরা আধুনিক প্রযুক্তির মেশিনারিজের সাথে পরিচিত হতে পারছে না। সেখানে উন্নয়ন বাজেটের টাকা আবার ফেরত দিয়েছে বুটেক্স। এই পিছিয়ে পড়ার কারনে ইন্ডাস্ট্রির মুল অংশে না গিয়ে পাস করা শিক্ষার্থীরা চলে যাচ্ছে বায়িং হাউজ আর ফ্যাশন হাউজে। ফলে ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ বলে টেক্সটাইল শিল্পের যে খাত সেখানে না গিয়ে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ে সবাই বস্ত্রের ক্রয় বিক্রয়ের সাথে জড়িত হয়ে পড়ছে। ফলে টেক্সটাইল শিল্পের মালিকদের বিদেশ থেকেই দক্ষ জনবল এনে কারখানা পরিচালনা করতে হচ্ছে। তাইতো সম্প্রতি বুটেক্সের প্রথম আন্তর্জাতিক সেমিনারে সমাপনী অনুষ্ঠানে এমন আক্ষেপের সুর ছিল রোখনা বক্তার কথায়। সেখানে বক্তাগন বেশ আক্ষেপের সুরেই বলেছেন-টেক্সটাইল খাতের দক্ষ জনবল সরবরাহের যে অভাব পুরনের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কলেজ থেকে প্রতিষ্ঠানটিকে বিশ^বিদ্যালয়ে রুপান্তর করলেন সেই লক্ষ পূরনে বুটেক্সের অবদান আরো ভালো হতে পারতো। সম্প্রতি বুটেক্স প্রশাসন বিশ^বিদ্যালয়ের জন্য ১০ বছরের একাডেমিক কৌশলগত পরকল্পনা প্রস্তত করেছে। যেখানে বস্ত্র প্রকৌশলের বাইরে অন্য কোনো কাডেমিক শাখার পরিকল্পনা সন্নিবেশ করা হয়নি। দেশ বিদেশের আধুনিক টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রিতে দক্ষ জনবল সরবরাহের চাহিদা পুরনে ব্যাচেলর অফ মেডিকেল টেক্সটাইলস, ব্যাচেলর অফ টেকনিকাল টক্সটাইলস,ব্যাচেলর অফ টেক্সটাইল কেমেস্ট্রি, ব্যাচেলর অব বিজনেস ইংলিশ প্রোগ্রাম, ব্যাচেলর অব টেক্সটাইল ম্যানেজমেন্ট প্রোগ্রাম, ব্যাচেলর অব টেক্সটাইল ইকোনেমিকস প্রোগ্রাম, ব্যাচেলর অব মার্চেন্ডাইজিং প্রোগ্রাম চালু এখন সময়ের দাবিতে পরিণত হয়েছে। এছাড়া এসব বিভাগে আরো অন্তত ৫শ অতিরিক্ত শিক্ষার্থী ভর্তি করে দেশে উচ্চ শিক্ষার আসন সংকটেও ভুমিকা রাখতে পারে বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ^বিদ্যালয়। উল্লেখ্যযে নতুন একাডেমিক ভবনে অনেক অব্যবহৃত কক্ষ পড়ে আছে।
খোজ নিয়ে জানা যায়, বিশ^বিদ্যালয়টির কলেজ আমলে প্রতি বছর বেশ কিছু বিদেশী শিক্ষার্থী ভর্তি হতো।
কিন্তু বিশ^বিদ্যালয়ে রুপান্তর হওয়ার পর প্রথম থেকেই বিদেশী ছাত্র ভর্তি বন্ধ রেখেছে বুটেক্স। উচ্চ শিক্ষায়
প্রতিবন্ধক হয়ে উঠছে বিশ্ববিদ্যলয়। কিছুদিন আগে দুইজন সহকারী অধ্যাপককে শিক্ষা ছুটি দেয়া হয়নি। অর্থনীতির শিক্ষক চাকরি ছেড়ে আর এপারেলের শিক্ষক অর্জিত ছুটি নিয়ে দেশ ছেড়েছেন। দুজনেই কানাডায় নিজ উদ্যোগে ফুল স্কলারশিপ অর্জন করেছিলেন। সব মিলিয়ে পিছিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়। ৫টি অনুষদ, ১৪টি বিভাগ, ১০টি অধিভুক্ত কলেজ কিন্তু ডিগ্রী একটাই-এমন বিশ্ববিদ্যালয় খুবই বিরল হবে দুনিয়াতে নিশ্চই। এমন বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে সরকারের নজর দেয়া আবশ্যক বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন।

ট্যাগস
জনপ্রিয় সংবাদ

জাতীয় পর্যায়ে অংশগ্রহণ করতে যাচ্ছে কুষ্টিয়া সিরাজুল হক মুসলিম মাধ্যমিক বিদ্যালয়

নেতৃত্ব সংকটে বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়

আপডেট টাইম : ০৬:০৩:৪৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

বিশেষ প্রতিনিধি
বাংলাদেশ সরকার ২০১০ সালে টেক্সটাইল খাতকে যুগোপযোগী করার জন্য তৎকালীন টেক্সটাইল কলেজকে টেক্সটাইল বিশ^বিদ্যালয়ে (বুটেক্স) রুপান্তর করে। লক্ষ্য ছিল কলেজটিকে নেতৃত্ব দিয়ে সামনে নিয়ে যাওয়া। বর্তমান উপাচার্যসহ সবশেষ তিন জন উপাচার্যের কারোরই বিশ^বিদ্যালয় ম্যানেজমেন্ট সম্পর্কে ধারনা না থাকার কারনে তারা সবাই প্রতিষ্ঠানটিকে কলেজের মতন করেই পরিচালিত করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। ফলে বিশ^বিদ্যালয় এগিয়ে যাওয়ার পরিবর্তে পিছিয়ে পড়েছে। টেক্সটাইল বিশ^বিদ্যালয় আইন ২০১০ এর ৫(ক) ধারা অনুযায়ী বিশ^বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য ছিল-টেক্সটাইল সায়েন্স, টেক্সটাইল ম্যানেজমেন্ট, টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং এবং টেক্সটাইল প্রযুক্তিতে শিক্ষা ও গবেষণা করা। কিন্ত বিশ^বিদ্যালয়টি টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষার উর্ধ্বে যেতেই পারেনি। এমনকি পরিবেশ বিজ্ঞান এবং ফ্যাশন ডিজাইন নামে সময়-উপযোগী বিভাগে ডিগ্রী প্রদান করা হচ্ছে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং-এর নামে। বিশ^বিদ্যালয়ে ৫টি অনুষদ, ১৪টি বিভাগ এবং ১০ টি অধিভুক্ত কলেজ রয়েছে। বিশ^বিদ্যালয় এবং অধিভুক্ত কলেজের পাঠ্যসূচী একই। প্রতিষ্ঠার ১২বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো বিভাগভিত্তিক কার্যক্রম চালুই করতে পারেনি বুটেক্স। এমনকি এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি নিয়ে কখনো কোনো উপাচার্যই কার্যকর আলোচনার উদ্যোগ নেয়নি বলে অভিযোগ আছে। এসবের প্রধান কারন হিসেবে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন-বিশ^বিদ্যালয়ের উপাচার্যগণের কলেজ আমলের মনোভাব। যেহেতু কলেজটির শিল্পের চাহিদা পুরনের জন্য শিক্ষাগত কর্মসূচীগুলো কাস্টমাইজ করার সীমাবদ্ধতা ছিল, তাই সরকার আশা করেছিলেন যে, বিশ^বিদ্যালয়টি শিল্পের প্রয়োজনীয় সেই শূণ্যতা পূরন করবে। তবে উপাচার্যগন তা করতে ব্যর্থ হয়েছেন বলে সম্প্রতি একাধিক আলোচনা অনুষ্ঠানে উঠে এসেছে। বলতে গেলে, কেউই বিষয়টি সামনে না এনে বেকারহীন বিশ^বিদ্যালয়ের ধোয়া তুলে নিজেদের কলেজ আমলের মনোভাবের আড়ালে নিজেদের ব্যর্থতাকে আড়াল করতে চেয়েছেন বলেও সেসব সভাগুলোতে আলোচনা হয়েছে। সার্বিক সম্প্রসারনের পরিবর্তে বিশ^বিদ্যালয়টি কারিকুলাম সংকোচন নীতি বেছে নিয়েছে। ২০১০ সালে বিশ^বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার আগে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং এবং টেক্সটাইল ম্যানেজমেন্ট নামে দুটি ডিগ্রী চালু ছিল। বিশ^বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর কর্তৃপক্ষ ম্যানেজমেন্ট ডিগ্রী বাদ দিয়ে শুধু টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রী নিয়ে এগিয়ে চলেছে। যা ছিল দূরদর্শীতার অভাব, তা এখন প্রমানিত সত্য। সম্প্রতি এশিয় উন্নয়ন ব্যাংকের অর্থায়নে টেক্সটাইল শিল্পের মধ্যম-সারির ব্যবস্থাপকদের দক্ষতা উন্নয়নের জন্য ‘পিজিডি ইন টেক্সটাইল ম্যানেজমেন্ট’ প্রোগ্রামটি চালু রেখেছে। যা পরিচালনা করছেন আবার টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়াররা। এখানে কোনো বিশেষজ্ঞদের মতামত ছাড়াই কোর্স কারিকুলাম তৈরি হয়ছে বলে অভিযোগ রয়েছে শিক্ষকদের একাংশের। এশিয়া উন্নয়ন ব্যাংকের অর্থায়নে‘এক্সেকিউটিভ এমবিএ’ ও ‘পিজিডি ইন টেক্সটাইল ম্যানেজমেন্ট’ পড়ানোর জন্য ইনস্টিটিউট অফ টেক্সটাইল ডেভেলপমেন্ট খোলার সিদ্ধান্ত হয়। যেহেতু ব্যাবস্থাপক উন্নয়নের জন্য
ইন্সটিটিউটটি খোলা হচ্ছে সেহেতু সবাই জাতীয় ও আন্তঃর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী ইনস্টিটিউটের নামকরণ করতে চেয়েছিলেন ‘ইনস্টিটিউট অফ টেক্সটাইল বিজনেস’ কিন্তু‘ সভাপতি কাউকে কোনো কথা বলতে দেননি বলে অভিযোগ আছে। উপাচার্যগন নিজেদের ইচ্ছেমত প্রশাসন পরিচালনার জন্যই বিশ^বিদ্যালয় গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে অতিরিক্ত দায়িত্ব দিয়ে কিংবা চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের মাধ্যমে পূর্ণ রেখেখেন। গত বছরের শেষ দিকের আগ পর্যন্ত প্রায় ১২ বছর বিশ^বিদ্যালটির রেজিস্ট্রার দপ্তর পরিচালনা করেছেন বিশ^বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষকরা। রেজিস্ট্রার অফিসকে তারা বানিয়েছেন প্রধান একাডেমিক অফিস। ফলে ডীন অফিস, কিংবা বিভাগ ভিত্তিক কালচার এখানে চালুর কথা কেউ চিন্তাই করেনি। অথচ বিশ^বিদ্যালয়ের সার্বজনীন ক্রমধারা হলো-বিভাগীয় দপ্তর ঘুরে ডীন অফিস হয়ে সিদ্ধান্ত সমূহ রেজিস্ট্রার দপ্তরে ফাইলবন্দী হওয়া। তবে বুটেক্সে ভিসির সিদ্ধান্ত রেজিস্ট্রার বাস্তবায়ন করে তা সংরক্ষন করে। এখানে ডীনের চেয়ে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে রেজিস্ট্রার পদকে। ফলে যা হবার তাইই হয়েছে, বিশ^বিদ্যালয়ের মূল কালচার থেকে উল্টো পথে হাটছে বুটেক্স। সম্প্রতি ইউজিসি থেকে রেজিস্ট্রার পদ কর্মকর্তাদের থেকে নিয়োগ করার বাধ্যবাধকতা এবং সিন্ডিকেটের জোরাজুরির কারনে একজন ডেপুটি রেজিস্ট্রারকে রেজিস্ট্রারের চলতি দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। বিশ^বিদ্যালয়টিতে প্রকৌশল দপ্তরের প্রধান হিসেবে যিনি দায়িত্ব পালন করছেন তিনি একজন ডিপ্লোমা ডিগ্রীধারী। বুটেক্স ছাড়া বাংলাদেশের কোনো বিশ^বিদ্যালয়েই ডিপ্লোমা ডিগ্রীধারী ব্যক্তি এই পদে নেই। ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে এখন যিনি দায়িত্বে আছেন তার চাকুরি চুক্তিভিত্তিকভাবে ৬ বার বাড়িয়েছেন উপাচার্যগন। এই অনিয়মের কারন অবশ্য একটু আলাদা। বুটেক্সের বর্তমান উপাচার্যসহ সাবেক উপাচার্যগনের সবাই উক্ত ইঞ্জিনিয়োরে দিয়ে স্বল্প টাকায় নিজেদের বাড়ী এবং ফ্ল্যাট নির্মান করিয়ে নিয়েছেন। চিকিৎসা বিভাগও একজন চুক্তিভিত্তিক মেডিকেল অফিসার দ্বারা পরিচালিত হয়। কম্পাউন্ডার (চিকিৎসা সহকারী) বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালযয়ের চাকরি থেকে অবসর গ্রহণ করার পরও চুক্তিভিত্তিক কাজ করছেন। লাইব্রেরিয়ান ছাড়া চলছে গ্রন্থগার। বিশ^বিদ্যালয়ের আর্থিক সচ্ছতা আনায়নে দরকার দক্ষ অর্থ পরিচালকের। সেখানে কোনো ব্যক্তির নিয়োগ না দিয়ে প্রতিটি টাকার হিসেব রাখছেন উপাচার্য স্বয়ং। প্রশাসনিক এবং আর্থিক অনুমোদন সবই হয় এখানে উপাচার্যের মর্জি মত। যা স্পটতই সরকারী নীতির লঙ্ঘন। বিশ^বিদ্যালয় আইনে কোষাধ্যক্ষ পদটি থাকলেও কোনো উপাচার্যই এ বিষয়ে উদ্যোগ নেয়নি। ফলে আর্থিক ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরন নেই। উপাচার্য একাই বিশ^বিদ্যালয়ের সকল একাউন্ট পরিচালনা করে থাকেন। সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক মাসউদ আহমেদের মেয়াদকালে একজন অবসরপ্রাপ্ত প্রিন্সিপালকে চুক্তিভিত্তিক পরিকল্পনা ও উন্নয়ন পরিচালক হিসেবে নিয়োগ করেন। তার মেয়াদ শেষ হওয়ার পর এই পদে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন বুটেক্সের একজন অধ্যাপক যিনি একই সাথে অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে প্রক্টর ও ঞ্জিখনে দায়িত্বও পালন করছেন। একজন ডেপুটি পরীক্ষা নিয়ন্ত্রককে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের চলতি দায়িত্ব দিয়ে রাখা হয়েছে। তিনি টেক্সটাইল বিশ^বিদ্যালয়সহ ১০টি অধিভুক্ত কলেজেরও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের দায়িত্ব পালন করছেন। যা অনেকটা অসম্ভবকে সম্ভব করা বিজ্ঞাপনের মত। ফলে পরীক্ষা জটিলতা নিরসনে শিক্ষার্থীদের হতে হচ্ছে উচ্চ আদালতের দারস্ত’। ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশেও ভুল ধরা পড়েছে গত শিক্ষাবর্ষে। হল প্রভোস্টের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে সহকারী অধ্যাপকদের মধ্যে থেকে যাদের অনেকের মধ্যে ছাত্র সামলানোর মতো দক্ষতা গড়ে ওঠেনি। সম্প্রতি সব হল প্রভোস্টরা একযোগে পদত্যাগ করেছেন যা ছাত্র সামলানোর অদক্ষতাকে ফুটিয়ে তুলেছে। উপাচার্যদের নিজস্ব ক্ষমতাবলে গবেষণা চুরির অভিযোগ আড়াল করে অনেককে উচ্চ পদে পদোন্নতি দেয়ার উদাহরণও আছে বিশ্ববিদ্যালয়টির ।একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালিত হয় রেজিস্ট্রার অফিস, হেডস কমিটি এবং ডীনস কমিটির দ্বারা। বিভাগগুলোতে নেই কোনো পরীক্ষা কমিটি। এখানে কলেজের মত কেন্দ্রীয় পরীক্ষা কমিটি কাজ করেন। অভিযোগ আছে- বিশ^বিদ্যালয় রুপান্তরের পর তৎকালীন সিনিয়র অধ্যাপকদের সম্মানিত করতেই নাকি বিভাগ ও অনুষদ করা হয়েছিল। সে সময় সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক মাসউদ আহমদের জন্য খোলা হয়েছিল টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদ। টেক্সটাইল ম্যানেজমেন্ট এবং বিজনেজ স্টাডিস অনুষদ খোলা হয় সাবেক অধ্যাপক মনিরুল ইসলামের জন্য। বুটেক্সে অনুষদ ভিত্তিক কার্যক্রম একেবারেই অনুপস্থিত। পাাঁচটি অনুষদের তিনটিতেই নির্বাহী কমিটির কোনো সভা হয় না ১২ বছর ধরে। যা বিশ^বিদ্যালয় আইনের প্রথম প্রবিধির ২(২) ধারার স্পস্টতই লঙ্ঘন। আইনে বর্ণিত বিভাগ ও অনুষদ ভিত্তিক কমিটির পরিবর্তে উপাচার্যের নিয়ন্ত্রনাধীন কিছু অনানুষ্ঠানিক কমিটি সকল বিভাগ ও অনুষদের সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। বিশ^বিদ্যালয়টিতে এখন পর্যন্ত কোনো দিন অফিসই নেই। বরাদ্দকৃত অর্থ ব্যয় না করতে পেরে বাংলাদেশে একমাত্র টেক্সটাইল বিশ^বিদ্যালয়ই ইউজিসিকে টাকা ফেরত দিয়েছে। আধুনিক মেশিনারিজের অভাবে যেখানে শিক্ষার্থীরা আধুনিক প্রযুক্তির মেশিনারিজের সাথে পরিচিত হতে পারছে না। সেখানে উন্নয়ন বাজেটের টাকা আবার ফেরত দিয়েছে বুটেক্স। এই পিছিয়ে পড়ার কারনে ইন্ডাস্ট্রির মুল অংশে না গিয়ে পাস করা শিক্ষার্থীরা চলে যাচ্ছে বায়িং হাউজ আর ফ্যাশন হাউজে। ফলে ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ বলে টেক্সটাইল শিল্পের যে খাত সেখানে না গিয়ে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ে সবাই বস্ত্রের ক্রয় বিক্রয়ের সাথে জড়িত হয়ে পড়ছে। ফলে টেক্সটাইল শিল্পের মালিকদের বিদেশ থেকেই দক্ষ জনবল এনে কারখানা পরিচালনা করতে হচ্ছে। তাইতো সম্প্রতি বুটেক্সের প্রথম আন্তর্জাতিক সেমিনারে সমাপনী অনুষ্ঠানে এমন আক্ষেপের সুর ছিল রোখনা বক্তার কথায়। সেখানে বক্তাগন বেশ আক্ষেপের সুরেই বলেছেন-টেক্সটাইল খাতের দক্ষ জনবল সরবরাহের যে অভাব পুরনের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কলেজ থেকে প্রতিষ্ঠানটিকে বিশ^বিদ্যালয়ে রুপান্তর করলেন সেই লক্ষ পূরনে বুটেক্সের অবদান আরো ভালো হতে পারতো। সম্প্রতি বুটেক্স প্রশাসন বিশ^বিদ্যালয়ের জন্য ১০ বছরের একাডেমিক কৌশলগত পরকল্পনা প্রস্তত করেছে। যেখানে বস্ত্র প্রকৌশলের বাইরে অন্য কোনো কাডেমিক শাখার পরিকল্পনা সন্নিবেশ করা হয়নি। দেশ বিদেশের আধুনিক টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রিতে দক্ষ জনবল সরবরাহের চাহিদা পুরনে ব্যাচেলর অফ মেডিকেল টেক্সটাইলস, ব্যাচেলর অফ টেকনিকাল টক্সটাইলস,ব্যাচেলর অফ টেক্সটাইল কেমেস্ট্রি, ব্যাচেলর অব বিজনেস ইংলিশ প্রোগ্রাম, ব্যাচেলর অব টেক্সটাইল ম্যানেজমেন্ট প্রোগ্রাম, ব্যাচেলর অব টেক্সটাইল ইকোনেমিকস প্রোগ্রাম, ব্যাচেলর অব মার্চেন্ডাইজিং প্রোগ্রাম চালু এখন সময়ের দাবিতে পরিণত হয়েছে। এছাড়া এসব বিভাগে আরো অন্তত ৫শ অতিরিক্ত শিক্ষার্থী ভর্তি করে দেশে উচ্চ শিক্ষার আসন সংকটেও ভুমিকা রাখতে পারে বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ^বিদ্যালয়। উল্লেখ্যযে নতুন একাডেমিক ভবনে অনেক অব্যবহৃত কক্ষ পড়ে আছে।
খোজ নিয়ে জানা যায়, বিশ^বিদ্যালয়টির কলেজ আমলে প্রতি বছর বেশ কিছু বিদেশী শিক্ষার্থী ভর্তি হতো।
কিন্তু বিশ^বিদ্যালয়ে রুপান্তর হওয়ার পর প্রথম থেকেই বিদেশী ছাত্র ভর্তি বন্ধ রেখেছে বুটেক্স। উচ্চ শিক্ষায়
প্রতিবন্ধক হয়ে উঠছে বিশ্ববিদ্যলয়। কিছুদিন আগে দুইজন সহকারী অধ্যাপককে শিক্ষা ছুটি দেয়া হয়নি। অর্থনীতির শিক্ষক চাকরি ছেড়ে আর এপারেলের শিক্ষক অর্জিত ছুটি নিয়ে দেশ ছেড়েছেন। দুজনেই কানাডায় নিজ উদ্যোগে ফুল স্কলারশিপ অর্জন করেছিলেন। সব মিলিয়ে পিছিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়। ৫টি অনুষদ, ১৪টি বিভাগ, ১০টি অধিভুক্ত কলেজ কিন্তু ডিগ্রী একটাই-এমন বিশ্ববিদ্যালয় খুবই বিরল হবে দুনিয়াতে নিশ্চই। এমন বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে সরকারের নজর দেয়া আবশ্যক বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন।