শাহ আলম, টাঙ্গাইল প্রতিনিধি :
টাঙ্গাইল জেলার কালিহাতীতে যমুনার পানি বৃদ্ধি ও উজানের ঢলের ফলে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। উপজেলার চারটি ইউনিয়নের প্রায় ৩০ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন, যার ফলে তাঁরা চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।
যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধির কারণে নতুন নতুন এলাকা বন্যায় প্লাবিত হচ্ছে। পানির তীব্র স্রোতে উপজেলার বেড়ীপটল এলাকার সড়ক ভেঙে যাওয়ায় প্রায় কয়েক হাজার মানুষের যাতায়াতে সমস্যা তৈরি হয়েছে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, রাস্তাটি ভেঙে যাওয়ায় তাদের ছেলে-মেয়েদের স্কুলে যাতায়াতে প্রচুর কষ্ট হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চরাঞ্চলের অনেক বাসিন্দা পরিবার ও গবাদি পশু নিয়ে উঁচু এলাকায় ও অন্যান্যের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। নিম্নাঞ্চলের কাঁচা-পাকা সড়ক তলিয়ে থাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে।
দুর্গাপুর ইউনিয়নের চরদুর্গাপুর গ্রামের নাছিমা জানান, ‘গত পাঁচ দিন ধরে পানিতে অবস্থান করছি। গরু ছাগল উঁচু জায়গায় রেখে অন্যদের বাড়িতে পরিবার নিয়ে কষ্টে আছি। নলকূপ তলিয়ে গেছে। এখন পর্যন্ত সরকারি কোনো সহায়তা পাইনি।’ একই এলাকার বাসিন্দা জায়দা বেগম বলেন, ‘বাড়ি নিচু হওয়ায় ঘরের ভিতরে পানি উঠে গেছে, খাওয়া দাওয়ার খুব কষ্ট চলছে।’
দুর্গাপুর ইউনিয়নের ইউপি সদস্য দেলোয়ার হোসেন জানান, যমুনা নদী সংলগ্ন হওয়ায় তার এলাকায় প্রায় ৪ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়েছেন এবং এখন পর্যন্ত কোনো সরকারি সহায়তা পাওয়া যায়নি।
উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম জানান, তার ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৭টি ওয়ার্ডে প্রায় ১৫ হাজার মানুষ পানিবন্দী অবস্থায় রয়েছেন। গোহালিয়াবাড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল হাই আকন্দ এবং সল্লা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল আলীম জানান, তাদের ইউনিয়নে যথাক্রমে ৫ হাজার এবং ৪-৫ হাজার মানুষ পানিবন্দী অবস্থায় আছেন এবং তাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শাহাদাত হুসাইন জানিয়েছেন, যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধির ফলে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পানি প্রবেশ করেছে এবং কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। এসব মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে তালিকা করা হচ্ছে এবং দ্রুত ত্রাণ সহায়তা প্রদান করা হয়।