ঢাকা ০১:১৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৭ জানুয়ারী ২০২৫, ২৩ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
গাজীপুরে শহীদ তোফাজ্জল হোসাইন স্মৃতি সংসদ এর উদ্যোগে শীত বস্ত্র বিতরণ গাজীপুরে আব্দুস সালামের নেতৃত্বে সন্ত্রাস-চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে চীনের সহযোগিতা চাইলেন পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা চলতি বছরের মধ্যেই পুরোপুরি চালু হবে ই-পাসপোর্ট- স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সান্তাহারে প্রি-পেইড মিটার স্থাপনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ দেশ জনতা পার্টির আত্মপ্রকাশ বোদা থানা কর্তৃক ০১টি চোরাই মোটর সাইকেল উদ্ধার মাগুরায় ভিডিপি দিবস উদযাপন উপলক্ষে স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি গাজীপুরে সাংবাদিকদের সাথে নবাগত পুলিশ সুপারের মতবিনিময় সাপাহারে স্বাস্থ্যসেবা ক্যাম্পেইনে অনুষ্ঠিত 

সান্তাহার একাডেমি প্রধানের বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ

এমামুল, আদমদীঘি (বগুড়া) প্রতিনিধি-

বগুড়ার আদমদীঘির সান্তাহারে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। সান্তাহার এসএমআই একাডেমীর প্রধান শিক্ষক তহমিনা বেগমের নামে নিয়োগ বাণিজ্য, প্রাচীর নির্মাণ, বাগান করা, স্কুল মাঠের উন্নয়ন, স্বেচ্ছাচারীতাসহ নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন এলাকাবাসী। তার একক আধিপত্যের কারনে তিনি সমালোচনার মুখে পড়েছেন। বিষয়টি প্রকাশ্যে এলে ব্যাপক চাঞ্চল্যকর সৃষ্টি হয়। এ ঘটনায় বগুড়া জেলা প্রশাসক বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন অভিভাবক ও এলাকাবাসী।

স্থানীয় ও অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বিগত আওয়ামীলীগ সরকারের সময় ১৯৯৭ সালে সান্তাহার এসএমআই (সুন্দর মাহমুদিয়া ইসলামিয়া) একাডেমীর ইংরেজি বিভাগে সহকারী শিক্ষিক হিসেবে যোগদান করেন তহমিনা বেগম। ওই সময়ে তার পিতা মোশারফ হোসেন বিদ্যালয়টির ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি এবং তার বোন জামাই (দুলাভাই) সিরাজুল ইসলাম খান রাজু আদমদীঘি সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের দায়িত্বে ছিলেন। ফলে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে শিক্ষক নিয়োগ কমিটিকে হাত করে তিনি নিয়ম বহির্ভূতভাবে নিয়োগ প্রাপ্ত হন। নিয়োগ প্রাপ্তের পর থেকে স্কুলে নিজের খেলায় খুশি মতো যাওয়া-আসা করতেন। কাওকে পরোয়া না করে ক্লাস বা অন্যান্য বিষয়ে সরকারি নিয়মনীতি লঙ্ঘনও করতেন তিনি৷ বিষয়টি জানাজানি হলেও প্রভাবশালী ছত্রছায়ায় থাকায় তার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে বাধাগ্রস্ত হন উপজেলা প্রশাসন। এই ভাবে কয়েকবছর ধরে চাকরি করে আসছিলেন তিনি। এরপর আওয়ামী লীগ সরকার ২০০৯ সালে পূণরায় ক্ষমতায় এলে তার বোন জামাই (দুলাভাই) সিরাজুল ইসলাম খান রাজু উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান ভোটে নির্বাচিত হন। এরপর থেকে শুরু হয় সহকারী শিক্ষক তহমিনা বেগমের একক আধিপত্য। এরমধ্যে ২০১২ সালে স্কুলের প্রধান শিক্ষকের পদ খালি হয়৷ ফলে যোগ্য সম্পন্ন দুই সিনিয়র শিক্ষকের প্রাধান্য থাকা সত্বেও ক্ষমতার কাছে অসহায় হয়ে পড়েন তারা। এদিকে সহকারী শিক্ষক তহমিনা বেগম বিধি অনুসারে বয়সে কম এবং বিএড ডিগ্রী না থাকায় জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নিয়োগ স্থগিত করে রাখেন। পরিবর্তীতে বিএড পরীক্ষায় একাধিক বার অকৃতকার্য হলে তার বোন জামাই ক্ষমতার অপব্যবহার করে বহুবার নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি বাতিল করেন৷ পরিশেষে অবৈধ উপায়ে বিএড পরীক্ষায় কৃতকার্য দেখিয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে তাকে পদোন্নতি দেন। বিষয়টি নিয়ে সিনিয়র শিক্ষকরা অভিযোগ করলে উল্টো তাদের চাকুরীচ্যুত এবং প্রাণনাশের হুমকি-ধামকি প্রদান করেন উপজেলা চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম খান রাজু। অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, স্কুলের আয়-ব্যয়ের কোন সঠিক হিসাব দিতেন না কাওকে। আয়ের একটি অংশ শিক্ষকদের বেতনের সাথে যুক্ত করার কথা থাকলেও কাউকে এ সুবিধা প্রদান করতেন না। বরং শিক্ষক বা স্কুলের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডের জন্য বিভিন্ন সময় বরাদ্দকৃত বাজেট খরচ না করে ভুয়া বিল ভাউচারে টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেছেন। এ ব্যপারে কোন শিক্ষক বা কমিটির কাউকে তিনি বলার প্রয়োজন মনে করেননি। এরপর স্কুল কমিটিতে যোগ্য লোকের পরিবর্তে অযোগ্য ও আওয়ামী সরকারের সমর্থক নেতাকর্মী বা নাম পরিচয়হীন ব্যক্তিদের দিয়ে নিজের ইচ্ছে মতো কমিটি তৈরী করেন। কমিটির রেজুলেশন অনুযায়ী স্কুলের জমিদাতার উত্তরাধীকারিদের মধ্যে থেকে সভাপতির প্রথা থাকলেও তা মানা হয়নি। যার ফলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন জমিদাতারা। বিভিন্ন সময় স্কুলে অডিট আসলে তার বোন জামাইকে দিয়ে উৎকুচ প্রদান করে তাদের ম্যানেজ করতেন। এবং সেই টাকা সকল শিক্ষকের বেতন থেকে কেটে নেওয়া হয় বলে জানান ভুক্তভোগী শিক্ষকরা। এরপর গত একযুগ ধরে বিভিন্ন সময় স্কুলে নতুন শিক্ষক ও কর্মচারী নিয়োগের নামে নিয়োগ বানিজ্য করতেন তারা। প্রতিটি শিক্ষকের থেকে ১০/১৫ লাখ টাকা নিয়েছেন৷ এই টাকা কমিটি বা স্কুল ফান্ডে না রেখে সম্পন্ন টাকা তারা আত্মসাৎ করেন। প্রাচীর নির্মাণ, বাগান করা, স্কুল মাঠের উন্নয়ন করা, পরিচ্ছন্নতার জন্য বিভিন্ন সময় বিপুল অর্থ বরাদ্দ করা হলেও নাম মাত্র কাজ দেখিয়ে ওই টাকা আত্মসাৎ করেন তিনি। স্কুলের ভিতরে জঙ্গলাকীর্ণ এবং ভবনগুলো ধ্বংসস্তুপে পরিনত হলেও এ ব্যাপারে কোন মাথাব্যথা নেই তার। সিনেমা হল সংলগ্ন পুরাতন ধ্বংসপ্রাপ্ত ভবন গুলোতে সাপ বিচ্ছুর বসত, রাতের বেলা মাদকসেবিদের আড্ডা। যার ফলে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা সর্বদা আতঙ্কগ্রস্থ থাকেন বলে জানান অভিভাবকরা। শুধু তাই নয় গত সংসদ নির্বাচনে ওই স্কুলে ভোট কেন্দ্র স্থাপন করা হয়। এই কেন্দ্রে ভোট গ্রহণের সময় প্রধান শিক্ষক তহমিনা বেগম নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করে তার ভাগ্নে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সাইফুল্লাহ আল মেহেদী বাধনের পক্ষে কাজ করেন। বিষয়টি জানার পর উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাকে ৮ ঘন্টা আটকে রাখেন। এদিকে স্কুলের সীমানা নিয়ে পার্শ্ববর্তী আকবর হোসের সঙ্গে বিরোধের জেরে স্কুল সময় অতিবাহিত কয়ে দুপুর বেলা শিক্ষার্থীদের দিয়ে সড়কে মানববন্ধন, র‍্যালি ও স্মারকলিপি প্রদান এবং অযৌক্তিকভাবে রাষ্ট্রীয় গণপরিবহন ট্রেন থামিয়ে রাষ্ট্রদ্রোহী কাজে লিপ্ত করিয়েছেন তিনি। এ ঘটনার পর তার বিরুদ্ধে ব্যাপক সমালোচনা সৃষ্টি হয়। সম্প্রতি ৫ আগষ্ট আওয়ামী সরকারের পতনের পর বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী পন্থি প্রধান শিক্ষক/ প্রিন্সিপালদের পদত্যাগ ঘটলেও তিনি কৌশলে স্থানীয় বিএনপির কিছু নেতাকর্মীদের আশ্রয় নেন। তার বড় বোন উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের সদস্য মঞ্জু আরা বেগম, ভাগ্নে সংসদ সদস্য ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক সাইফুল্লাহ আল মেহেদী, ছোট ভাই সান্তাহার পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মনোয়ার জাহিদ রোকন। ফলে বৃহত্তর এমন আওয়ামী পরিবার হয়েও সবাইকে বৃদ্ধা আঙ্গুল দেখিয়ে নিজের জায়গায় তিনি অটুট রয়েছেন। এ বিষয়ে পরিত্রাণ পেতে বগুড়া জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন অভিভাবক ও এলাকাবাসী।

সান্তাহার এসএমআই একাডেমীর প্রধান শিক্ষক তহমিনা বেগম জানান, এটা উদ্দেশ্য প্রণোদিত। যার কোন ভিত্তি নাই। আমি সততার সহিত চাকরি করে আসতেছি।

বগুড়া জেলা প্রশাসক হোসনা আফরোজা জানান, এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

ট্যাগস
জনপ্রিয় সংবাদ

গাজীপুরে শহীদ তোফাজ্জল হোসাইন স্মৃতি সংসদ এর উদ্যোগে শীত বস্ত্র বিতরণ

সান্তাহার একাডেমি প্রধানের বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ

আপডেট টাইম : ০২:২০:৫৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ৪ জানুয়ারী ২০২৫

এমামুল, আদমদীঘি (বগুড়া) প্রতিনিধি-

বগুড়ার আদমদীঘির সান্তাহারে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। সান্তাহার এসএমআই একাডেমীর প্রধান শিক্ষক তহমিনা বেগমের নামে নিয়োগ বাণিজ্য, প্রাচীর নির্মাণ, বাগান করা, স্কুল মাঠের উন্নয়ন, স্বেচ্ছাচারীতাসহ নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন এলাকাবাসী। তার একক আধিপত্যের কারনে তিনি সমালোচনার মুখে পড়েছেন। বিষয়টি প্রকাশ্যে এলে ব্যাপক চাঞ্চল্যকর সৃষ্টি হয়। এ ঘটনায় বগুড়া জেলা প্রশাসক বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন অভিভাবক ও এলাকাবাসী।

স্থানীয় ও অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বিগত আওয়ামীলীগ সরকারের সময় ১৯৯৭ সালে সান্তাহার এসএমআই (সুন্দর মাহমুদিয়া ইসলামিয়া) একাডেমীর ইংরেজি বিভাগে সহকারী শিক্ষিক হিসেবে যোগদান করেন তহমিনা বেগম। ওই সময়ে তার পিতা মোশারফ হোসেন বিদ্যালয়টির ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি এবং তার বোন জামাই (দুলাভাই) সিরাজুল ইসলাম খান রাজু আদমদীঘি সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের দায়িত্বে ছিলেন। ফলে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে শিক্ষক নিয়োগ কমিটিকে হাত করে তিনি নিয়ম বহির্ভূতভাবে নিয়োগ প্রাপ্ত হন। নিয়োগ প্রাপ্তের পর থেকে স্কুলে নিজের খেলায় খুশি মতো যাওয়া-আসা করতেন। কাওকে পরোয়া না করে ক্লাস বা অন্যান্য বিষয়ে সরকারি নিয়মনীতি লঙ্ঘনও করতেন তিনি৷ বিষয়টি জানাজানি হলেও প্রভাবশালী ছত্রছায়ায় থাকায় তার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে বাধাগ্রস্ত হন উপজেলা প্রশাসন। এই ভাবে কয়েকবছর ধরে চাকরি করে আসছিলেন তিনি। এরপর আওয়ামী লীগ সরকার ২০০৯ সালে পূণরায় ক্ষমতায় এলে তার বোন জামাই (দুলাভাই) সিরাজুল ইসলাম খান রাজু উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান ভোটে নির্বাচিত হন। এরপর থেকে শুরু হয় সহকারী শিক্ষক তহমিনা বেগমের একক আধিপত্য। এরমধ্যে ২০১২ সালে স্কুলের প্রধান শিক্ষকের পদ খালি হয়৷ ফলে যোগ্য সম্পন্ন দুই সিনিয়র শিক্ষকের প্রাধান্য থাকা সত্বেও ক্ষমতার কাছে অসহায় হয়ে পড়েন তারা। এদিকে সহকারী শিক্ষক তহমিনা বেগম বিধি অনুসারে বয়সে কম এবং বিএড ডিগ্রী না থাকায় জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নিয়োগ স্থগিত করে রাখেন। পরিবর্তীতে বিএড পরীক্ষায় একাধিক বার অকৃতকার্য হলে তার বোন জামাই ক্ষমতার অপব্যবহার করে বহুবার নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি বাতিল করেন৷ পরিশেষে অবৈধ উপায়ে বিএড পরীক্ষায় কৃতকার্য দেখিয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে তাকে পদোন্নতি দেন। বিষয়টি নিয়ে সিনিয়র শিক্ষকরা অভিযোগ করলে উল্টো তাদের চাকুরীচ্যুত এবং প্রাণনাশের হুমকি-ধামকি প্রদান করেন উপজেলা চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম খান রাজু। অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, স্কুলের আয়-ব্যয়ের কোন সঠিক হিসাব দিতেন না কাওকে। আয়ের একটি অংশ শিক্ষকদের বেতনের সাথে যুক্ত করার কথা থাকলেও কাউকে এ সুবিধা প্রদান করতেন না। বরং শিক্ষক বা স্কুলের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডের জন্য বিভিন্ন সময় বরাদ্দকৃত বাজেট খরচ না করে ভুয়া বিল ভাউচারে টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেছেন। এ ব্যপারে কোন শিক্ষক বা কমিটির কাউকে তিনি বলার প্রয়োজন মনে করেননি। এরপর স্কুল কমিটিতে যোগ্য লোকের পরিবর্তে অযোগ্য ও আওয়ামী সরকারের সমর্থক নেতাকর্মী বা নাম পরিচয়হীন ব্যক্তিদের দিয়ে নিজের ইচ্ছে মতো কমিটি তৈরী করেন। কমিটির রেজুলেশন অনুযায়ী স্কুলের জমিদাতার উত্তরাধীকারিদের মধ্যে থেকে সভাপতির প্রথা থাকলেও তা মানা হয়নি। যার ফলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন জমিদাতারা। বিভিন্ন সময় স্কুলে অডিট আসলে তার বোন জামাইকে দিয়ে উৎকুচ প্রদান করে তাদের ম্যানেজ করতেন। এবং সেই টাকা সকল শিক্ষকের বেতন থেকে কেটে নেওয়া হয় বলে জানান ভুক্তভোগী শিক্ষকরা। এরপর গত একযুগ ধরে বিভিন্ন সময় স্কুলে নতুন শিক্ষক ও কর্মচারী নিয়োগের নামে নিয়োগ বানিজ্য করতেন তারা। প্রতিটি শিক্ষকের থেকে ১০/১৫ লাখ টাকা নিয়েছেন৷ এই টাকা কমিটি বা স্কুল ফান্ডে না রেখে সম্পন্ন টাকা তারা আত্মসাৎ করেন। প্রাচীর নির্মাণ, বাগান করা, স্কুল মাঠের উন্নয়ন করা, পরিচ্ছন্নতার জন্য বিভিন্ন সময় বিপুল অর্থ বরাদ্দ করা হলেও নাম মাত্র কাজ দেখিয়ে ওই টাকা আত্মসাৎ করেন তিনি। স্কুলের ভিতরে জঙ্গলাকীর্ণ এবং ভবনগুলো ধ্বংসস্তুপে পরিনত হলেও এ ব্যাপারে কোন মাথাব্যথা নেই তার। সিনেমা হল সংলগ্ন পুরাতন ধ্বংসপ্রাপ্ত ভবন গুলোতে সাপ বিচ্ছুর বসত, রাতের বেলা মাদকসেবিদের আড্ডা। যার ফলে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা সর্বদা আতঙ্কগ্রস্থ থাকেন বলে জানান অভিভাবকরা। শুধু তাই নয় গত সংসদ নির্বাচনে ওই স্কুলে ভোট কেন্দ্র স্থাপন করা হয়। এই কেন্দ্রে ভোট গ্রহণের সময় প্রধান শিক্ষক তহমিনা বেগম নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করে তার ভাগ্নে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সাইফুল্লাহ আল মেহেদী বাধনের পক্ষে কাজ করেন। বিষয়টি জানার পর উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাকে ৮ ঘন্টা আটকে রাখেন। এদিকে স্কুলের সীমানা নিয়ে পার্শ্ববর্তী আকবর হোসের সঙ্গে বিরোধের জেরে স্কুল সময় অতিবাহিত কয়ে দুপুর বেলা শিক্ষার্থীদের দিয়ে সড়কে মানববন্ধন, র‍্যালি ও স্মারকলিপি প্রদান এবং অযৌক্তিকভাবে রাষ্ট্রীয় গণপরিবহন ট্রেন থামিয়ে রাষ্ট্রদ্রোহী কাজে লিপ্ত করিয়েছেন তিনি। এ ঘটনার পর তার বিরুদ্ধে ব্যাপক সমালোচনা সৃষ্টি হয়। সম্প্রতি ৫ আগষ্ট আওয়ামী সরকারের পতনের পর বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী পন্থি প্রধান শিক্ষক/ প্রিন্সিপালদের পদত্যাগ ঘটলেও তিনি কৌশলে স্থানীয় বিএনপির কিছু নেতাকর্মীদের আশ্রয় নেন। তার বড় বোন উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের সদস্য মঞ্জু আরা বেগম, ভাগ্নে সংসদ সদস্য ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক সাইফুল্লাহ আল মেহেদী, ছোট ভাই সান্তাহার পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মনোয়ার জাহিদ রোকন। ফলে বৃহত্তর এমন আওয়ামী পরিবার হয়েও সবাইকে বৃদ্ধা আঙ্গুল দেখিয়ে নিজের জায়গায় তিনি অটুট রয়েছেন। এ বিষয়ে পরিত্রাণ পেতে বগুড়া জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন অভিভাবক ও এলাকাবাসী।

সান্তাহার এসএমআই একাডেমীর প্রধান শিক্ষক তহমিনা বেগম জানান, এটা উদ্দেশ্য প্রণোদিত। যার কোন ভিত্তি নাই। আমি সততার সহিত চাকরি করে আসতেছি।

বগুড়া জেলা প্রশাসক হোসনা আফরোজা জানান, এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।