সংগ্রামী নারী অটোরিকশাচালক নাছিমা আক্তারের পাশে দাঁড়িয়েছেন নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক (ডিসি) জাহিদুল ইসলাম। গত ৫ মার্চ (বুধবার) জেলা প্রশাসকের কার্যালয় প্রাঙ্গণে নাছিমা আক্তারের হাতে আর্থিক অনুদান তুলে দেন তিনি।
জানা গেছে, নাছিমা আক্তার স্বামীহারা দুই কন্যা সন্তানের জননী। তার স্বামী আব্দুল বারেক প্রায় এক দশক আগে মারা যান। সেই থেকে জীবনের কঠিন বাস্তবতার সঙ্গে লড়াই করে তিনি নিজের ও সন্তানদের ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার চেষ্টা করে যাচ্ছেন। সমাজের প্রচলিত ধারণাকে অতিক্রম করে একজন নারী হিসেবে তিনি শিল্পনগরী নারায়ণগঞ্জে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। যা নিঃসন্দেহে তার অদম্য সাহস ও সংগ্রামী মানসিকতার প্রতীক।
সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক উপজেলার মুফতির গ্রামের নাছিমা এখন সংসারের হাল ধরতে বাধ্য হয়েছেন। চিটাগাং রোডে চায়ের দোকানের পাশাপাশি অটোরিকশা চালিয়ে কোনো রকমে সংসার চালিয়ে নিচ্ছেন। ভাড়ায় অটোরিকশা চালিয়ে আয়ের সিংহভাগই দিতে হয় রিকশার মালিককে।
নাছিমা বলেন, প্রতিদিন ৫০০ টাকা রিকশার ভাড়া মালিককে দিয়ে দুইশ-তিনশ টাকা আয় থাকে। কোনো কোনো দিন জমার টাকাই ওঠে না। এছাড়া সময় পেলে ভ্রাম্যমাণ চায়ের দোকান চালান। আয় রোজগার কমে যাওয়ায় সম্প্রতি ভাড়া বাসা ছেড়ে চিটাগাং রোডে পরিত্যাক্ত সরকারি জমিতে বস্তি ঘর করে সেখানেই কোনো রকম রাত পার করেন। তার বড় মেয়ে জ্যোৎস্নার বিয়ে দিয়েছেন অনেক ধার দেনা করে। কিন্তু ছোট মেয়ে ফারিহা আক্তার রাজধানীর কুড়িল বিশ্বরোড এলাকায় একটি মাদরাসায় পড়ালেখা করে।
তিনি বলেন, কেউ যদি একটা অটোরিকশা কিনে দিতেন, তাহলে অন্তত প্রতিদিন রিকশার মালিককে দেওয়ার ৫০০ টাকা বেঁচে যেত। এতে অভাব অনটন কিছুটা হলেও দূর হতো। অনেকে আমার রিকশা চালানোর ভিডিও করেন। কিন্তু কেউ কোনো সাহায্য করেন না। তবে আজ ডিসি স্যার সাহায্য করলেন। আমি অনেক খুশি। আমি নামাজ পড়ে ডিসি স্যারের জন্য দোয়া করব।
জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলাম নাছিমার আত্মনির্ভরশীলতা ও দৃঢ় মনোবলের ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং তাকে উৎসাহিত করেন সামনে এগিয়ে যাওয়ার জন্য।