ঢাকা ১১:২৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ৩ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে পিসিসিপি বান্দরবানের শিক্ষাসামগ্রী বিতরণ গাজীপুরে ব্যানার-বিলবোর্ড অপসারণে বিশেষ অভিযান বাংলাদেশ সেন্ট্রাল প্রেস ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি খান সেলিম রহমান এর মানবিক উদ্যোগ বাউফলে জামায়াত কর্তৃক সাংবা‌দিক‌ লা‌ঞ্চিত, প্রতিবাদে তাৎক্ষ‌ণিক মানববন্ধন বীর শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানালেন গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন সাভার স্মৃতিসৌধে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যের শ্রদ্ধা নিবেদন বারি’তে মহান বিজয় দিবস উদযাপিত ১৬ই ডিসেম্বর উপলক্ষে শহীদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা গাজীপুরে নবনিযুক্ত পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে সিটি কর্মকর্তাদের মতবিনিময় গাজীপুর-২ আসনে বিএনপির মনোনয়ন পুনর্বিবেচনার দাবি

গাজীপুর-২ আসনে বিএনপির মনোনয়ন পুনর্বিবেচনার দাবি

রেজাউল মোল্লা,গাজীপুর-
গাজীপুর-৬ আসন বিলুপ্তির ফলে পুনর্গঠিত গাজীপুর-২ সংসদীয় আসনে বিএনপির বর্তমান মনোনয়ন পুনর্বিবেচনার জোরালো দাবি উঠেছে। ভোটার বাস্তবতা, ভৌগোলিক ভারসাম্য ও নির্বাচনী সক্ষমতার যুক্তিতে মনোনয়ন পুনর্মূল্যায়নের আহ্বান জানিয়ে সোমবার সকালে গাজীপুরে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, আপিল বিভাগের রায়ের মাধ্যমে গাজীপুর-৬ আসন বাতিল হয়ে পূর্বের গাজীপুর-২ আসনে ফিরে আসায় এ আসনের রাজনৈতিক ও নির্বাচনী বাস্তবতায় মৌলিক পরিবর্তন এসেছে। বর্তমানে গাজীপুর-২ আসনে মোট ভোটার সংখ্যা প্রায় ৮ লাখ, যা এটিকে দেশের অন্যতম বৃহৎ ও চ্যালেঞ্জিং আসনে পরিণত করেছে।

বক্তব্যে থানা ও ওয়ার্ডভিত্তিক ভোটার পরিসংখ্যান তুলে ধরে জানানো হয়, গাছা থানার ৭টি ওয়ার্ডে ভোটার ১ লাখ ৫৫ হাজার ৩০৯ জন এবং পূবাইল থানার আংশিক অংশে (ওয়ার্ড-৩৯) ভোটার ১৩ হাজার ২৮৬ জন। অর্থাৎ গাছা ও পূবাইল মিলিয়ে ভোটার ১ লাখ ৬৬ হাজার ৫৯৫ জন। অপরদিকে টঙ্গী পূর্ব ও পশ্চিম থানার ১৫টি ওয়ার্ডে ভোটার ৩ লাখ ৭৩ হাজার ৬৫৯ জন এবং মেট্রো সদর থানার ১৩টি ওয়ার্ডে ভোটার ২ লাখ ৪৮ হাজার ২০ জন। এর মধ্যে কাউলতিয়া এলাকার চারটি ওয়ার্ডে ভোটার মাত্র ৭৩ হাজার ৭৩৮ জন। এতে স্পষ্ট হয়, গাজীপুর-২ আসনের সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটার টঙ্গী, গাছা ও পূবাইল এলাকায় বসবাস করেন।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বর্তমান মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন বাস্তবতায়—যখন গাজীপুর-৬ আসন বহাল ছিল এবং টঙ্গী, গাছা ও পূবাইল আলাদা সংসদীয় আসনের আওতায় ছিল। নতুন বাস্তবতায় সেই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করা রাজনৈতিকভাবে যৌক্তিক ও সময়োপযোগী। বক্তারা স্পষ্ট করেন, এটি কোনো ব্যক্তিবিরোধিতা নয়; বরং দলীয় স্বার্থ, ভোটার প্রতিনিধিত্ব ও বিজয়ের সম্ভাবনা নিশ্চিত করার প্রশ্ন।

লিখিত বক্তব্যে আরও উল্লেখ করা হয়, টঙ্গী, গাছা ও পূবাইল একটি অভিন্ন নগর বাস্তবতার অংশ। অতীতে গাজীপুর সিটি করপোরেশন গঠনের আগে এই এলাকাগুলো টঙ্গী পৌরসভার আওতায় ছিল এবং দীর্ঘদিন ধরে একই সামাজিক-রাজনৈতিক ধারায় পরিচালিত হয়ে আসছে। ঐতিহাসিকভাবে এ আসনের নেতৃত্বও অধিকাংশ সময় টঙ্গীকেন্দ্রিক ছিল। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ক্ষেত্রেও টঙ্গী থেকে নেতৃত্ব নির্বাচিত হওয়ার নজির রয়েছে।

এ সময় বক্তারা আন্দোলন-সংগ্রামে গাজীপুর এলাকার বিএনপির নেতাকর্মীদের ত্যাগ ও নির্যাতনের কথা স্মরণ করিয়ে দেন। তাঁরা বলেন, ফ্যাসিবাদী সরকারের আমলে বহু নেতাকর্মী জেল-জুলুম, মামলা ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোটকেন্দ্র দখল ও ভোট ডাকাতির মাধ্যমে বিএনপির প্রার্থীদের বিজয় ছিনিয়ে নেওয়া হয়, যার ফলে সংশ্লিষ্ট নেতারা রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগতভাবে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েন।

এই প্রেক্ষাপটে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান, মহাসচিব ও কেন্দ্রীয় মনোনয়ন বোর্ডের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলা হয়, পুনর্গঠিত গাজীপুর-২ আসনের বর্তমান ভোটার ও ভৌগোলিক বাস্তবতা বিবেচনায় নিয়ে টঙ্গী, গাছা ও পূবাইল এলাকার সাংগঠনিক মতামত গুরুত্বসহকারে শোনা হোক। প্রয়োজনে বর্তমান মনোনয়ন পুনর্বিবেচনা করে এমন প্রার্থী মনোনীত করা হোক, যিনি এই বৃহৎ ও প্রতিযোগিতামূলক আসনে সর্বোচ্চ ভোট সংহত করে বিএনপিকে বিজয়ের পথে নিতে পারবেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পেশ করেন গাজীপুর-২ আসনের সাবেক এমপি বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা হাসান উদ্দিন সরকার। তিনি এসময় এ আসনে মহানগর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক সালাহ উদ্দিন সরকারের প্রতি সম্মিলিত সমর্থন ব্যক্ত করেন। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন সম্ভাব্য প্রার্থী ও মহানগর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক সালাহ উদ্দিন সরকার, সাবেক সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক রাকিব উদ্দিন সরকার পাপ্পু, সাবেক সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও মহানগর বিএনপির সাবেক সহসভাপতি আফজাল হোসেন কায়সার, মহানগর বিএনপির সাবেক সহসভাপতি মাহবুবুল হক গোলাপ ও আক্তারুজ্জামান, মহানগর যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সম্ভাব্য প্রার্থী জসিম উদ্দিন ভাট, বিএনপি নেতা সরকার শাহনূর ইসলাম রনি, যুবদল নেতা সৌমিক সরকারসহ বিএনপির বিভিন্ন থানা ও ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।

ট্যাগস
জনপ্রিয় সংবাদ

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে পিসিসিপি বান্দরবানের শিক্ষাসামগ্রী বিতরণ

গাজীপুর-২ আসনে বিএনপির মনোনয়ন পুনর্বিবেচনার দাবি

আপডেট টাইম : ০৩:০১:০২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫

রেজাউল মোল্লা,গাজীপুর-
গাজীপুর-৬ আসন বিলুপ্তির ফলে পুনর্গঠিত গাজীপুর-২ সংসদীয় আসনে বিএনপির বর্তমান মনোনয়ন পুনর্বিবেচনার জোরালো দাবি উঠেছে। ভোটার বাস্তবতা, ভৌগোলিক ভারসাম্য ও নির্বাচনী সক্ষমতার যুক্তিতে মনোনয়ন পুনর্মূল্যায়নের আহ্বান জানিয়ে সোমবার সকালে গাজীপুরে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, আপিল বিভাগের রায়ের মাধ্যমে গাজীপুর-৬ আসন বাতিল হয়ে পূর্বের গাজীপুর-২ আসনে ফিরে আসায় এ আসনের রাজনৈতিক ও নির্বাচনী বাস্তবতায় মৌলিক পরিবর্তন এসেছে। বর্তমানে গাজীপুর-২ আসনে মোট ভোটার সংখ্যা প্রায় ৮ লাখ, যা এটিকে দেশের অন্যতম বৃহৎ ও চ্যালেঞ্জিং আসনে পরিণত করেছে।

বক্তব্যে থানা ও ওয়ার্ডভিত্তিক ভোটার পরিসংখ্যান তুলে ধরে জানানো হয়, গাছা থানার ৭টি ওয়ার্ডে ভোটার ১ লাখ ৫৫ হাজার ৩০৯ জন এবং পূবাইল থানার আংশিক অংশে (ওয়ার্ড-৩৯) ভোটার ১৩ হাজার ২৮৬ জন। অর্থাৎ গাছা ও পূবাইল মিলিয়ে ভোটার ১ লাখ ৬৬ হাজার ৫৯৫ জন। অপরদিকে টঙ্গী পূর্ব ও পশ্চিম থানার ১৫টি ওয়ার্ডে ভোটার ৩ লাখ ৭৩ হাজার ৬৫৯ জন এবং মেট্রো সদর থানার ১৩টি ওয়ার্ডে ভোটার ২ লাখ ৪৮ হাজার ২০ জন। এর মধ্যে কাউলতিয়া এলাকার চারটি ওয়ার্ডে ভোটার মাত্র ৭৩ হাজার ৭৩৮ জন। এতে স্পষ্ট হয়, গাজীপুর-২ আসনের সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটার টঙ্গী, গাছা ও পূবাইল এলাকায় বসবাস করেন।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বর্তমান মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন বাস্তবতায়—যখন গাজীপুর-৬ আসন বহাল ছিল এবং টঙ্গী, গাছা ও পূবাইল আলাদা সংসদীয় আসনের আওতায় ছিল। নতুন বাস্তবতায় সেই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করা রাজনৈতিকভাবে যৌক্তিক ও সময়োপযোগী। বক্তারা স্পষ্ট করেন, এটি কোনো ব্যক্তিবিরোধিতা নয়; বরং দলীয় স্বার্থ, ভোটার প্রতিনিধিত্ব ও বিজয়ের সম্ভাবনা নিশ্চিত করার প্রশ্ন।

লিখিত বক্তব্যে আরও উল্লেখ করা হয়, টঙ্গী, গাছা ও পূবাইল একটি অভিন্ন নগর বাস্তবতার অংশ। অতীতে গাজীপুর সিটি করপোরেশন গঠনের আগে এই এলাকাগুলো টঙ্গী পৌরসভার আওতায় ছিল এবং দীর্ঘদিন ধরে একই সামাজিক-রাজনৈতিক ধারায় পরিচালিত হয়ে আসছে। ঐতিহাসিকভাবে এ আসনের নেতৃত্বও অধিকাংশ সময় টঙ্গীকেন্দ্রিক ছিল। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ক্ষেত্রেও টঙ্গী থেকে নেতৃত্ব নির্বাচিত হওয়ার নজির রয়েছে।

এ সময় বক্তারা আন্দোলন-সংগ্রামে গাজীপুর এলাকার বিএনপির নেতাকর্মীদের ত্যাগ ও নির্যাতনের কথা স্মরণ করিয়ে দেন। তাঁরা বলেন, ফ্যাসিবাদী সরকারের আমলে বহু নেতাকর্মী জেল-জুলুম, মামলা ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোটকেন্দ্র দখল ও ভোট ডাকাতির মাধ্যমে বিএনপির প্রার্থীদের বিজয় ছিনিয়ে নেওয়া হয়, যার ফলে সংশ্লিষ্ট নেতারা রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগতভাবে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েন।

এই প্রেক্ষাপটে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান, মহাসচিব ও কেন্দ্রীয় মনোনয়ন বোর্ডের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলা হয়, পুনর্গঠিত গাজীপুর-২ আসনের বর্তমান ভোটার ও ভৌগোলিক বাস্তবতা বিবেচনায় নিয়ে টঙ্গী, গাছা ও পূবাইল এলাকার সাংগঠনিক মতামত গুরুত্বসহকারে শোনা হোক। প্রয়োজনে বর্তমান মনোনয়ন পুনর্বিবেচনা করে এমন প্রার্থী মনোনীত করা হোক, যিনি এই বৃহৎ ও প্রতিযোগিতামূলক আসনে সর্বোচ্চ ভোট সংহত করে বিএনপিকে বিজয়ের পথে নিতে পারবেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পেশ করেন গাজীপুর-২ আসনের সাবেক এমপি বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা হাসান উদ্দিন সরকার। তিনি এসময় এ আসনে মহানগর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক সালাহ উদ্দিন সরকারের প্রতি সম্মিলিত সমর্থন ব্যক্ত করেন। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন সম্ভাব্য প্রার্থী ও মহানগর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক সালাহ উদ্দিন সরকার, সাবেক সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক রাকিব উদ্দিন সরকার পাপ্পু, সাবেক সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও মহানগর বিএনপির সাবেক সহসভাপতি আফজাল হোসেন কায়সার, মহানগর বিএনপির সাবেক সহসভাপতি মাহবুবুল হক গোলাপ ও আক্তারুজ্জামান, মহানগর যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সম্ভাব্য প্রার্থী জসিম উদ্দিন ভাট, বিএনপি নেতা সরকার শাহনূর ইসলাম রনি, যুবদল নেতা সৌমিক সরকারসহ বিএনপির বিভিন্ন থানা ও ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।