বিশেষ প্রতিনিধি:
বর্তমান সরকারের সময়ে ফায়ার সার্ভিসের নানা ধরনের উন্নয়ন সাধিত হয়েছে এবং হচ্ছে। ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ মাইন উদ্দিন মহাপরিচালক হিসেবে ফায়ার সার্ভিসে যোগদানের পর থেকে উন্নয়নের এই ধারা আরো বেগবান হয়েছে। তাঁর সময়ে সরকার ফায়ার সার্ভিসকে “স্বাধীনতা পুরস্কার ২০২৩” প্রদান করেছে। সীতাকুন্ডের বিএম কন্টেইনার ডিপোতে অগ্নি নির্বাপণকালে আত্মাহুতি দেয়া ১৩ জন ফায়ারফাইটারকে সরকারিভাবে ‘অগ্নিবীর’ খেতাবে ভূষিত করা হয়েছে। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের জন্য বর্তমান মহাপরিচালকের সময়ে সরকার আজীবন রেশন প্রদানের ব্যবস্থা করেছে। ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ফায়ারফাইটারগণ তুরস্কের ভূমিকম্পে উদ্ধারকাজে অংশ নিয়ে দেশের জন্য আন্তর্জাতিক অঙ্গন থেকে সুনাম বয়ে এনেছেন। সার্বিকভাবে ফায়ার সার্ভিসের অবকাঠামো উন্নয়নের পাশাপাশি সেবার মান উন্নত হচ্ছে। উন্নয়নের এই ধারা চলমান রয়েছে এবং ফায়ার সার্ভিসের সেবা সক্ষমতা আগের তুলনায় বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এই প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা ‘দুঃসময়ের বন্ধু’ হিসেবে সকল দুর্যোগে সবার আগে বিপদগ্রস্থ মানুষকে সেবা প্রদানের জন্য নিবেদিত রয়েছেন। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সে সরকারের ধারাবাহিক এই উন্নয়ন কাজ বাধাগ্রস্থ করতে হীনস্বার্থে কেউ দুদকে অভিযোগ করে থাকতে পারে, তদন্তাধীন বিষয়টিকে তদন্ত সম্পন্ন করার আগেই সত্য গণ্য করা সমীচীন নয় বলে আমরা মনে করি। এছাড়া ফায়ার সার্ভিসের সকল ক্রয় প্রক্রিয়া সরকারের পাবলিক প্রকিউরমেন্ট আইন-২০০৬ ও পাবলিক প্রকিউরমেন্ট রুলস-২০০৮ নীতিমালা অনুসরণপূর্বক সম্পাদন করা হয়ে থাকে। এর আলোকে গত অর্থ বছরে মোট ৪৭টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ফায়ার সার্ভিসের বিভিন্ন ক্রয় প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করেছে এবং তার মধ্যে ২১টি প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন কার্যাদেশ পেয়ে কাজ সম্পাদন করেছে, যার একটিও মহাপরিচালক মহোদয়ের ভাইর নামের প্রতিষ্ঠান নয়। এসব ক্ষেত্রে টেন্ডার-বাণিজ্য করার তথ্য সঠিক নয়। অন্যদিকে ফায়ার সার্ভিসের নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের গঠিত একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটির মাধ্যমে। যেখানে ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) সভাপতি, উপপরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) সদস্য সচিব এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন প্রতিনিধি, পাবলিক সার্ভিস কমিশন (পিএসসি)-এর একজন প্রতিনিধি ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন প্রতিনিধি সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া ফায়ারফাইটার পদে ত্রুটিমুক্ত শারীরিক গঠন নিশ্চিত করতে পেশাদার চিকিৎসকগণের মাধ্যমে মেডিক্যাল চেকআপ করা হয়ে থাকে। উল্লিখিত কমিটির সুপারিশের মাধ্যমে নিয়োগ প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হয়। এসব ক্ষেত্রে ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক মহোদয়ের আলাদা করে নিয়োগ দেয়ার কোনো সুযোগ নেই। কাজেই সংবাদে পরিবেশিত ৩৫০ জনকে অনিয়মের মাধ্যমে চাকরি দেয়ার তথ্যটি সত্য নয়। ফায়ার সার্ভিসের প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তার বদলি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পাদন করে থাকে। আর অন্য পদগুলোতে বদলি করার ক্ষেত্রে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমোদিত বদলি নীতিমালা অনুসরণ করা হয়ে থাকে। এসব ক্ষেত্রে মহাপরিচালক মহোদয়ের ভাইর বদলি বাণিজ্য করার বিষয়টি কল্পনাপ্রসূত ও মনগড়া। এর কোনো সত্যতা নেই। ফায়ার সার্ভিস কর্তৃক প্রদেয় সেফটি প্লানও সুনির্দিষ্ট নীতিমালা অনুসরণ করে পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স)-এর নেতৃত্বে পরিচালিত একটি কমিটি প্রদান করে থাকে, মহাপরিচালক তা প্রদান করেন না। তালিকাভুক্ত প্রকৌশলী প্রতিষ্ঠানগুলো এ প্রক্রিয়ায় সেবা গ্রহণকারীদের সহযোগিতা করে থাকে। উন্নয়নের চলমান ধারা বাধাগ্রস্থ করতে একটি স্বার্থান্বেষী মহল ফায়ার সার্ভিসের বিরুদ্ধে গণমাধ্যমে মিথ্যা তথ্য সরবরাহ করছে বলে আমাদের ধারণা। চলমান উন্নয়ন বাধাগ্রস্থ হয় এমন তথ্য পেলে যাচাই-বাছাই ব্যতীত তা নিয়ে সংবাদ পরিবেশন না করার জন্য সকলকে বিশেষভাবে অনুরোধ জানানো হয়েছে।