ঢাকা ১০:০২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
রূপনগর–পল্লবী থানা কমিটি: ত্যাগীদের বঞ্চনা, বিতর্কিতদের দাপট জুলাই হত্যা মামলার আসামিকে প্রত্যায়ন দিলেন জামায়াতের আমির মাগুরা মহম্মদপুরে শিক্ষক আ. হান্নানের বিরুদ্ধে শিশু যৌন নিপীড়নের অভিযোগে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন নারী সাংবাদিকতার এক আলোকবর্তিকা শেখ হাসিনাকে কোনো দেশ গ্রহণ করেননি ভারত করেছে : আলতাফ হোসেন চৌধুরী গণপূর্তের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল হালিমের পাহাড় সমান দুর্নীতির তদন্ত হচ্ছে না কেন? সিরাজদিখানে রাতের অধারে সরকারি গাছ কাটার অভিযোগ বরগুনায় বিভিন্ন দাবিতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত ‘মব-সন্ত্রাস’ বন্ধসহ চার দাবিতে গাইবান্ধায় সিপিবির বিক্ষোভ গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে সেতু আছে, সড়ক নেই — চরম দুর্ভোগে এলাকাবাসী

গাজীপুরের শ্রীপুরে আতংকের নাম ছাত্রদল নেতা রিফাত মোড়ল

গাজীপুর প্রতিনিধি-
আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলার সিংগারদিঘী এলাকার বাসিন্দাদের রাতে ঘুম হারাম করে দিয়েছে ছাত্রদলের এক নেতা। প্রকাশ্যে চালিয়ে যাচ্ছে জবর দখল, চাঁদাবাজিসহ নানা অপকর্ম। অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতা সিংগারদিঘী এলাকার মোক্তারুল করিম শামীম মোড়লের ছেলে জিয়াউল করিম রিফাত মোড়ল (৩০)। সে শ্রীপুর উপজেলা ছাত্র দলের আহবায়ক এবং গাজীপুর জেলা ছাত্র দলের যুগ্ম সম্পাদক।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ৫ আগষ্ট সরকার পতনের পর শ্রীপুর উপজেলা ছাত্র দলের আহবায়ক নিজ এলাকা সিংগারদিঘীতে জবর দখল ও চাঁদাবাজিতে লিপ্ত হয়েছে। এমনকি বিএনপির অনেক নেতা-কর্মীদের জমি ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানও তিনি দখল করে নিয়েছেন। এসব ঘটনায় সংশ্লিষ্ট থানায় একাধিক অভিযোগ দায়ের কার হয়েছে।
স্থানীয় ভূক্তভোগী মোফাজ্জল হোসেন (৫০) সম্প্রতি শ্রীপুর মডেল থানায় ছাত্রদল নেতা রিফাত মোড়লসহ ১০জনের বিরুদ্ধে অভিযোগে উল্লেখ করেন, তার পৈত্রিক জমি জবর দখল করার জন্য বহুদিন যাবৎ খুন জখমের হুমকি দিতেন জিয়াউল করিম রিফাত মোড়লসহ অন্যান্যরা। গত ৫ সেপ্টেম্বর পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ওই জমি জবর দখল করার জন্য লোহার রড, দা, সাবল, লাঠি ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বাউন্ডারী ওয়াল নির্মাণ কাজ শুরু করে। সংবাদ পেয়ে মোফাজ্জল ও তার চাচাত ভাই লুৎফর রহমান (৪৫) জমিতে গেলে তারা অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করে। এসময় প্রতিবাদ করলে অস্ত্র নিয়ে তাদের উপর হামলা করে। এসময় লুৎফর রহমানের আর্তচিৎকারে আশপাশ লোকজন এসে তাকে উদ্ধার করে। একপর্যায়ে হামলাকারীরা হুমকি দেয় পুনরায় জমি যে কোন উপায়ে জবর দখল করে বাউন্ডারী ওয়াল নির্মাণ করবে। এতে যদি বাধা প্রদান করা হয় তাহলে খুন করে লাশ মাটিতে পুতে ফেলিবে।
আরো জানা যায়, সাবেক ডিবি প্রধান হারুন যখন গাজীপুরের পুলিশ সুপার ছিলেন তখন রিফাত মোড়লের বাবা মোক্তারুল করিম শামীম মোড়লের সাথে গভির সখ্যতা ছিলো। তাদের বাড়িতে আসা যাওয়া ছিল হারুনের। হারুনের বিভিন্ন অপকর্মের সাথে জড়িত ছিল মোক্তারুল করিম শামীম মোড়ল। আর এখন বাবা ছেলে দুজনেই নেমেছেন দখল বাণিজ্যে।
ওয়ার্ড বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক হাজী সালাম জানান, রিফাত মোড়ল নিজে উপস্থিত থেকে তার সাথে এক দেড়’শ লোক নিয়ে সিংগারদিঘী এলাকার ফিসপার্ক প্রজেক্ট, নকুন কিটনাশক কারখানা, শিরিষগুড়ি গ্রামের আবু হানিফের কৃষি জমি দখলে হামালা চালায়। এসবের সাথে রিফাতের বাবা শামীমও জড়িত। এছাড়া নিজেদের আধিপত্য বিস্তারে অনেক বিএনপি নেতাদের ব্যবাসা দখলসহ মামলায় জড়ানোর অভিযোগও রয়েছে বাবা ছেলের বিরুদ্ধে। তারা বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের চাঁদার জন্য হুমকী প্রদান করেছেন। তিনি বলেন, এসব বিষয়ে সিংগারদিঘী এলাকার মানুষের মধ্যে আতংক বিরাজ করছে।
এ বিষয়ে জিয়াউল করিম রিফাত মোড়ল বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে সকল অভিযোগ মিথ্যা। রাজনৈতিক ভাবে হেয় করার জন্য এসব অভিযোগ তোলা হচ্ছে। আমার পূর্ব পুরুষ বিএনপি’ রাজনীতির সাথে জড়িত ছিল। আমিও বিএনপি’র আদর্শে বিশ্বাসী। যারা রাজনৈতিক ভাবে অযোগ্য তারা এসব অভিযোগ আনছেন। আওয়ামী সরকারের আমলে একাধিক মামলা হয়েছে এলাকায় থাকতে পারিনি। এখন এলাকায় ফিরে আসাতে অনেকে শত্রæতা শুরু করেছে।
এবিষয়ে মাওনা ইউনিয়ন বিএনপি’র সভাপতি মিনহাজ সরকার বলেন, রিফাত মোড়লদের জবর দখল ও চাঁদাবাজির ঘটনার আমরা শুনেছি। অনেকে মৌখিক অভিযোগ নিয়ে এসেছিল। তাদের আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের কথা বলা হয়েছে। প্রয়োজন হলে দলীয় ভাবেও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

শ্রীপুর উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি শাহজাহান ফকির বলেন, রিফাত মোড়ল এবং তার বাবা শামীম মোড়ল সন্ত্রাসী প্রকৃতি লোক। তাদের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ আছে। এবিষয়ে সাংগঠনিক ব্যবস্থা প্রক্রীয়াধিন আছে।

ট্যাগস
জনপ্রিয় সংবাদ

রূপনগর–পল্লবী থানা কমিটি: ত্যাগীদের বঞ্চনা, বিতর্কিতদের দাপট

গাজীপুরের শ্রীপুরে আতংকের নাম ছাত্রদল নেতা রিফাত মোড়ল

আপডেট টাইম : ০৩:২৭:২০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪

গাজীপুর প্রতিনিধি-
আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলার সিংগারদিঘী এলাকার বাসিন্দাদের রাতে ঘুম হারাম করে দিয়েছে ছাত্রদলের এক নেতা। প্রকাশ্যে চালিয়ে যাচ্ছে জবর দখল, চাঁদাবাজিসহ নানা অপকর্ম। অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতা সিংগারদিঘী এলাকার মোক্তারুল করিম শামীম মোড়লের ছেলে জিয়াউল করিম রিফাত মোড়ল (৩০)। সে শ্রীপুর উপজেলা ছাত্র দলের আহবায়ক এবং গাজীপুর জেলা ছাত্র দলের যুগ্ম সম্পাদক।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ৫ আগষ্ট সরকার পতনের পর শ্রীপুর উপজেলা ছাত্র দলের আহবায়ক নিজ এলাকা সিংগারদিঘীতে জবর দখল ও চাঁদাবাজিতে লিপ্ত হয়েছে। এমনকি বিএনপির অনেক নেতা-কর্মীদের জমি ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানও তিনি দখল করে নিয়েছেন। এসব ঘটনায় সংশ্লিষ্ট থানায় একাধিক অভিযোগ দায়ের কার হয়েছে।
স্থানীয় ভূক্তভোগী মোফাজ্জল হোসেন (৫০) সম্প্রতি শ্রীপুর মডেল থানায় ছাত্রদল নেতা রিফাত মোড়লসহ ১০জনের বিরুদ্ধে অভিযোগে উল্লেখ করেন, তার পৈত্রিক জমি জবর দখল করার জন্য বহুদিন যাবৎ খুন জখমের হুমকি দিতেন জিয়াউল করিম রিফাত মোড়লসহ অন্যান্যরা। গত ৫ সেপ্টেম্বর পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ওই জমি জবর দখল করার জন্য লোহার রড, দা, সাবল, লাঠি ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বাউন্ডারী ওয়াল নির্মাণ কাজ শুরু করে। সংবাদ পেয়ে মোফাজ্জল ও তার চাচাত ভাই লুৎফর রহমান (৪৫) জমিতে গেলে তারা অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করে। এসময় প্রতিবাদ করলে অস্ত্র নিয়ে তাদের উপর হামলা করে। এসময় লুৎফর রহমানের আর্তচিৎকারে আশপাশ লোকজন এসে তাকে উদ্ধার করে। একপর্যায়ে হামলাকারীরা হুমকি দেয় পুনরায় জমি যে কোন উপায়ে জবর দখল করে বাউন্ডারী ওয়াল নির্মাণ করবে। এতে যদি বাধা প্রদান করা হয় তাহলে খুন করে লাশ মাটিতে পুতে ফেলিবে।
আরো জানা যায়, সাবেক ডিবি প্রধান হারুন যখন গাজীপুরের পুলিশ সুপার ছিলেন তখন রিফাত মোড়লের বাবা মোক্তারুল করিম শামীম মোড়লের সাথে গভির সখ্যতা ছিলো। তাদের বাড়িতে আসা যাওয়া ছিল হারুনের। হারুনের বিভিন্ন অপকর্মের সাথে জড়িত ছিল মোক্তারুল করিম শামীম মোড়ল। আর এখন বাবা ছেলে দুজনেই নেমেছেন দখল বাণিজ্যে।
ওয়ার্ড বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক হাজী সালাম জানান, রিফাত মোড়ল নিজে উপস্থিত থেকে তার সাথে এক দেড়’শ লোক নিয়ে সিংগারদিঘী এলাকার ফিসপার্ক প্রজেক্ট, নকুন কিটনাশক কারখানা, শিরিষগুড়ি গ্রামের আবু হানিফের কৃষি জমি দখলে হামালা চালায়। এসবের সাথে রিফাতের বাবা শামীমও জড়িত। এছাড়া নিজেদের আধিপত্য বিস্তারে অনেক বিএনপি নেতাদের ব্যবাসা দখলসহ মামলায় জড়ানোর অভিযোগও রয়েছে বাবা ছেলের বিরুদ্ধে। তারা বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের চাঁদার জন্য হুমকী প্রদান করেছেন। তিনি বলেন, এসব বিষয়ে সিংগারদিঘী এলাকার মানুষের মধ্যে আতংক বিরাজ করছে।
এ বিষয়ে জিয়াউল করিম রিফাত মোড়ল বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে সকল অভিযোগ মিথ্যা। রাজনৈতিক ভাবে হেয় করার জন্য এসব অভিযোগ তোলা হচ্ছে। আমার পূর্ব পুরুষ বিএনপি’ রাজনীতির সাথে জড়িত ছিল। আমিও বিএনপি’র আদর্শে বিশ্বাসী। যারা রাজনৈতিক ভাবে অযোগ্য তারা এসব অভিযোগ আনছেন। আওয়ামী সরকারের আমলে একাধিক মামলা হয়েছে এলাকায় থাকতে পারিনি। এখন এলাকায় ফিরে আসাতে অনেকে শত্রæতা শুরু করেছে।
এবিষয়ে মাওনা ইউনিয়ন বিএনপি’র সভাপতি মিনহাজ সরকার বলেন, রিফাত মোড়লদের জবর দখল ও চাঁদাবাজির ঘটনার আমরা শুনেছি। অনেকে মৌখিক অভিযোগ নিয়ে এসেছিল। তাদের আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের কথা বলা হয়েছে। প্রয়োজন হলে দলীয় ভাবেও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

শ্রীপুর উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি শাহজাহান ফকির বলেন, রিফাত মোড়ল এবং তার বাবা শামীম মোড়ল সন্ত্রাসী প্রকৃতি লোক। তাদের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ আছে। এবিষয়ে সাংগঠনিক ব্যবস্থা প্রক্রীয়াধিন আছে।